ছড়া-কবিতায় একুশ-পলাশ রঙ

ছড়া-কবিতায় একুশ-পলাশ রঙ

মোমিন মেহেদীঃ

স্মৃতিসত্মম্ভ। আলাউদ্দিন আল আজাদের লেখা একুশের কবিতা, ভাষার কবিতা এবং আমাদের শোকের কবিতা। যেখানে উঠে এসেছে একটি সাহসকথা। এই সাহসকথার রঙধনু তিনি তুলেছেন ঠিক এভাবে-‘স্মৃতির মিনার ভেঙ্গেছে তোমার? ভয় কি বন্ধু, আমরা এখনও/ চার কোটি পরিবার/ খাড়া রয়েছি তো! যে ভিত কখনো কোনো রাজন্য পারে নি ভাঙ্গতে/ হীরার মুকুট নিল পরোয়ানা খোলা তলোয়ার/ খুরের ঝটিকা ধুলায় চূর্ণ  যে পদপ্রামেত্ম যার বুনি ধান/ গুন টানি, আর তুলি হাতিয়ার হাপর চালাই/ সরল নায়ক আমরা জনতা সেই অনন্য ইটের মিনার/  ভেঙেছে ভাঙ্গুক! ভয় কি বন্ধু, দেখ একবার আমরা জাগরী চার কোটি পরিবার/ এ- কোন মৃত্যু?  কেউ কি দেখেছে মৃত্যু এমন,/ শিয়রে যাহার ওঠে না কান্না, ঝরে না অশ্রু?/ হিমালয় থেকে সাগর অবধি সহসা বরং/ সকল বেদনা হয়ে ওঠে এক পতাকার রং/ এ- কোন মৃত্যু? কেউ কি দেখেছে মৃত্যু এমন,/ বিরহে যেখানে নেই হাহাকার? কেবল সেতার/ হয় প্রপাতের মহনীয় ধারা, অনেক কথার/ পদাতিক ঋতু কলমের দেয় কবিতার কাল?/ ইটের মিনার ভেঙেছে, ভাঙ্গুক. একটি মিনার গড়েছি আমরা/ চার কোটি কারিগর বেহালার সুরে, রাঙ্গা হৃদয়ের বর্ণলেখায়।/ পলাশের আর রামধনুকের গভীর চোখের তারায় তারায়/ দ্বীপ হয়ে ভাসে যাদের জীবন, যুগে যুগে সেই শহীদের নাম…

এমন অনবদ্য কবিতার পথ ধরেই শুধু নয় শহীদ মিনারের কথা উঠে এসেছে আমাদের দেশের বরেণ্য ছড়াকারদের ছড়ায়-ছন্দে। যেখানে কবি শামসুর রাহমান থেকে শুরম্ন করে অনেক প্রথিতযশা ছড়াকারের মাত্রাময় মমতা উঠে এসেছে শহীদ মিনারের জন্য, বাংলা ভাষার শাহাদাৎ বরনকারী শহীদদের জন্য। পাশাপাশি আমাদের বরেণ্য কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন লিখেছেন, ‘১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো কতৃপক্ষ অমর একুশের মর্যাদা ছড়িয়ে গিয়েছিল বিশ্বজুড়ে দিবস ঘোষণার মাধ্যমে। কিন্তু আমরা সবটুকু মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছি কিনা তা খতিয়ে দেখার বিষয়টিও আমাদের দায়িত্ব। যতদূর জানি এখন পর্যমত্ম এই দিবসের কথা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। বাংলা একাডেমীতে চাকরি সূত্রে জানি নোবেল বিজয়ী প্রখ্যাত লেখক জাপানে কেন জাবুরোওয়ে এবং জার্মানির লেখক গুস্টার গ্রাসকে বাংলা একাডেমীর অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রণপত্রে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক স্বল্পপরিসরে একুশের প্রেক্ষাপট বলে দিয়েছিলেন। দুইজন লেখকই তাদের আসতে না পারার জন্য ব্যক্তিগত অপারগতার কথা জানিয়েছেন, কিন্তু একুশ সম্পর্কে উৎসাহ  দেখিয়ে একটি বাক্যও লেখেননি। প্রখ্যাত লেখকরা যদি একুশ সম্পর্কে এমন মনোভাব দেখান, তাহলে শিক্ষিত সাধারণ মানুষ একুশ সম্পর্কে আর কিই বা জানবেন। সবচেয়ে অবাক লাগে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা  থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০০ তারিখে প্রকাশিত ‘দেশ’ পত্রিকার সম্পাদকীয় পড়ে। এখানে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা গত সপ্তাহে একদিন ‘দেশ’ পত্রিকার সম্পাদককে ঘরোয়া কথোপকথনে বলছিলেন, কীভাবে রাষ্ট্রসংঘের প্রধান কর্মাধ্যক্ষ কফি আনানের সঙ্গে নিজে কথা বলে তিনি গত ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের তরফ থেকে ‘ভাষাবর্ষের’ দাবিটা প্রথম উত্থাপন করলেন-এবং নিজের আমলাদের বললেন, ‘প্রথাসিদ্ধ কাগজপত্র, ‘সাপোর্টিং পেপার’ তৈরি হবে পরে, কিন্তু এখনই আজ রাত্রেই প্রসত্মাব পাঠিয়ে দিতে হবে নিউইয়র্কে’- এই সহস্রাব্দের প্রথম বৎসরটিকেই চিহ্নিত করতে হবে বিশ্বের ‘ভাষাবর্ষ’ হিসাবে তারই রাষ্ট্রীয় হসত্মক্ষেপের ফলে- বাংলা ভাষার কথা স্মরণে রেখে- ২০০০ সালকে রাষ্ট্রসংঘ ঘোষণা করেছে ‘ভাষাবর্ষ’ হিসাবে।’

মাগো, ওরা বলে, শীর্ষক কবিতায় কবি আবু জাফর ওবায়দুলস্নাহ একজন মায়ের মমতাময় সমত্মানের ভালোবাসার কথা তুলে এনেছেন নয়নতারা ফুলের মত করে। তাঁর স্বপ্নজ কবিতায় তিনি তুলে এনেছেন কাব্যজ কথা। লিখেছেন  ‘কুমড়ো ফুলে ফুলে/ নুয়ে পরেছে লতাটা,/ সজনে ডাঁটায়/ ভরে গেছে গাছটা, আর আমি/ ডালের বড়ি শুকিয়ে রেখেছি।/ খোকা তুই কবে আসবি ?/ কবে ছুটি?/ চিঠিটা তার পকেটে ছিল/  ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা।/  মাগো, ওরা বলে/ সবার কথা কেড়ে নেবে।/ তোমার কোলে শুয়ে/ গল্প শুনতে দেবে না।/ বলো, মা,/ তাই কি হয়?/ তাইতো আমার দেরি হচ্ছে।/ তোমার জন্যে/ কথার ঝুরি নিয়ে/ তবেই না বাড়ি ফিরবো।/ ল‍হ্মী মা,/ রাগ ক’রো না,/ মাত্রতো আর ক’টা দিন।’ আমাদের আলোকিত আগামী গড়তে কবি-ছড়াকাদের ছন্দজ সময়ে উঠে এসেছে আলোর কথা, ভালোর কথা। আমাদের বাংলাদেশের মানুষ এখনও তারা সম্পূর্ণ অধিকার পায়নি। এই সংগ্রাম যতদিন চলবে ততদিন ছড়ার সংগ্রাম চলবে। ভাষার ছড়াগামী নিয়ে সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অবকাঠামো মনের রঙিন আলোয় আরো সুন্দর হয়ে উঠছে ছন্দিত তানে। ছড়াকার বা কবিদের কলমে যখনই একুশ উঠে এসেছে, হয়ে উঠেছে ছন্দ-মাত্রাময়। সেই সুন্দরের সাথে সাথে উঠে এসেছে ভাষার ছড়া। ছড়াকার আবু সালেহ’র ছড়া গড়িয়ে গেছে এভাবে, ‘ভাষার জন্য যারা দান করেছেন জান/ তারাই যে হলেন জাতির অমর শহীদান/ একুশ তারিখ কেনো অমর যে হবে/ ঐতিহাসিক দিন যে তাকে সবাই কবে/ আলস্নাহ মহান প্রভু দ্বিতীয় মহান  নেই/ এমন বাড়াবাড়ি যে চলছেই চলছেই/ প্রাণী কূলের মাঝে শ্রেষ্ঠ মানুষ বটে/ তাদের কর্মকান্ডে ঘৃনাও রটে/ সকল মৃত্যুই ওহে হয়না শহীদ জানি/ শহীদ নামের মানে কোথায় যে টানি।’ ছড়াকার আবু সালেহ মানেই মনের কথাগুলো অকপটে বলে যাওয়া। এই জীবনমুখি মানুষের লেখায় উঠে এসেছে আজন্মকালের আন্দোলনকথা।  লিখেছেন, ‘পেরিয়ে সিঁড়ি রক্তের সেই ফেব্রুয়ারি/ স্বাধীনতা লাভ করলাম যেই/  দেখতে পেলাম বাপ দাদাদের হায়/ আকূল করা সেই ভাষা আর নেই।/ মুখে মুখে ভিন দেশীদের ভাষা/  দেশ ত্যাগের রয় মনের ভিতর আশা/ ভাবতে গেলেই হারিয়ে ফেলি খেই।’

সাহিত্য ও সংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ছন্দিত নিদর্শন হলো ছড়া, শিশু মনের অন্যতম খোরাক হচ্ছে – ছড়া। লোকসমাজে মায়েরা যেমন বিভিন্ন ছড়া বলতে বলেতে শিশুদের ঘুমপাড়ায়, তেমনি ছোট ছেলে- মেয়েরা  খেলায় বিভিন্ন ধরণের ছড়া ব্যবহার করে থাকে। তাছাড়া অন্যকে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে রক্ষার জন্যও ছড়ার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় অসংখ্য একুশের ছড়া বা ভাষার ছড়ার কথা। একুশের চিঠি শিরোনামের এক চিঠিতে উঠে এসেছে একুশময় বাহান্ন আর ভাষা আন্দোলনের কথা।  ভাষাকে ঘিরে লড়াই, সংগ্রাম আর ত্যাগের এমন দুনিয়া-কাঁপানো ঘটনায় বাঙ্গালি অহংকারে দীপ্ত হয়ে উঠতেই পারে। তাই  তো  ফেব্রুয়ারীর একদম শুরম্নতেই দেশ জুড়ে শুরম্ন হয়ে যায় উত্তাল উৎসব। প্রকৃতিও বুঝি তাতে যোগ দেয় পরম আনন্দে- গৌরবে। ফাগুনের আগুনে রাঙ্গানো কৃষ্ণচূড়া-পলাশ-শিমূল মাথা উঁচু করে গেয়ে ওঠে, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী। দেশ বরেণ্য সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরীর গানের কথায় আমরা যে প্রভাতফেরী পেয়েছি। সেই প্রভাতফেরীর  দেশে, অমর একুশের অন্যতম প্রধান আর্কষণ ‘একুশে বইমেলা’। প্রায় সারা বছর ধরে লেখক-প্রকাশক আর পাঠক-সাধারণ আকুল আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে এ-মেলার জন্যে।  ঢাকা শহরে বাংলা একাডেমীর সুবিশাল প্রাঙ্গণ নিয়ে গড়া এই বইমেলায় দেশের প্রত্যমত্ম অঞ্চল ( টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া) থেকে দলে দলে হাজির হয় বইপ্রেমীরা। স্মৃতির গভীরে এখনো জ্বলজ্বলে হয়ে আছে, রাজ্যের ভিড়ভাট্টা, যানজট, হট্টগোল সবার উপরে ধুলোয় ধুলোয় ধূসরিত একাডেমী প্রাঙ্গণ কোন কিছুই, কখনো, বাধা হতে পারেনি পাঠকের নতুন বই-এর প্রথম গন্ধ নেবার পাগলপনার কাছে। নাকে-মুখে রঙ্গিণ রম্নমাল বেঁধে আনন্দবাজদের মত চষে  বেড়ায় বইমেলার এ প্রামত্ম থেকে সে প্রামত্ম। চারপাশের যন্ত্রযানের দুঃসহ, বিকট আওয়াজ, এলোমেলো অগুমিত্ম রিক্সার টুংটাং, ফেরিয়ালাদের অবিশ্রাম হাঁকডাক বা টিএসসির সড়কদ্বীপ থেকে ভেসে আসা উন্মাতাল সংগীতের শব্দ পেরিয়ে বই মেলার ভেতরে ঢুকে পড়তে পারলেই যেন একুশের রাত ভাঙা আলোয় আলোকিত হয় আয়না। কারণ, একুশে মানেই মাথা নত না করা। আমরা মাথা নত করি না এগিয়ে যাই আগামীর আহবানে। একুশ মানে মাথা নত না করা বিধায়-ই বেবী মওদুদ বুনেছেন সাহসের বীজ। সম্প্রতি একুশের ছড়া শিরোনামের ছন্দিত তানে লিখেছেন, ‘বাংলা আমার মায়ের ভাষা আমার  মায়ের মুখ/ বাংলা আমার জীবন-মরণ আমার স্বপ্ন সুখ।/ বাংলা আমার মায়ের ধন পিতার স্নেহ ছায়া/ বাংলা আমার চোখের মণি ভাই- বোনের মায়া।/ বাংলা আমার প্রিয় কবিতা বাংলা  আমার গান/ বাংলা আমার পলাশ শিমুল রক্ত মাটির টান।/ বাংলা আমার যুদ্ধ জয়ের স্বাধীনতার সুখ/ বাংলা আমার মায়ের ভাষা মমতা ভরা বুক।/ বাংলা আমার সবুজ শ্যামল রূপের নেইকো শেষ/ বাংলা আমার মায়ের ভাষা বাংলা আমার দেশ।’ একুশের কবিতা মানেই যখন যুদ্ধজয়ের কাব্য, তখন আল মাহমুদের কবিতায় একুশ হয়ে উঠেছে ছইওয়ালা নাও। আল মাহমুদ লিখেছেন, ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ দুপুর বেলার অক্ত/ বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়? বরকতের রক্ত।/ হাজার যুগের সূর্যতাপে জ্বলবে এমন লাল যে,/  সেই লোহিতেই লাল হয়েছে কৃষ্ণচূড়ার ডাল যে !/ প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে ছড়াও ফুলের বন্যা/ বিষাদগীতি গাইছে পথে তিতুমীরের কন্যা।/ চিনতে না কি সোনার ছেলে ক্ষুদিরামকে চিনতে ?/ রম্নদ্ধশ্বাসে প্রাণ দিলো যে মুক্ত বাতাস কিনতে ?/ পাহাড়তলীর মরণ চূড়ায় ঝাঁপ দিল যে অগ্নি,/  ফেব্রুয়ারির শোকের বসন পরলো তারই ভগ্নী।/ প্রভাতফেরী, প্রভাতফেরী আমায় নেবে সঙ্গে,/ বাংলা আমার বচন, আমি জন্মেছি এই বঙ্গে।’ আমাদের রাত নয় দিনের জন্য একুশ এসেছিল। সেই একুশ এসেছে বলেই বাংলা নামক একটি ভাষা পেয়েছি আমরা। যা আমাদের মায়ের ভাষা, মমতার ভাষা, সাহসভাষা। সেই ভাষা আর একুশ নিয়ে কবি আসাদ চৌধুরী  লিখেছেন তখন সত্যি মানুষ ছিলাম। মানুষ থাকার এই যে অতিত, তাতে আমাদের বর্তমানে নতুন আলো হিসেবে, আলোর সাম্পান হিসেবে রাখতে আসাদ চৌধুরী লিখেছেন, নদীর জলে আগুন ছিল আগুন ছিল বৃষ্টিতে/ আগুন ছিল বীরাঙ্গনার উদাস করা দৃষ্টিতে।/ আগুন ছিল গানের সুরে/ আগুন ছিল কাব্যে, মরার চোখে আগুন ছিল এ কথা কে ভাববে !/ কুকুর- বেড়াল থাবা হাঁকায় ফোঁসে সাপের ফণা/ শিং কৈ মাছ রম্নখে দাঁড়ায় জ্বলে বালির কণা।/ আগুন ছিল মুক্তিসেনার স্বপ্ন-ঢলের বন্যায়-/ প্রতিবাদের প্রবল ঝড়ে কাঁপছিল সব অন্যায়।/ এখন এসব স্বপ্নকথা দূরের শোনা গল্প,/ তখন সত্যি মানুষ ছিলাম এখন আছি অল্প।’ যারা ভাষার জন্য লড়েছেন, তাঁরা আমাদের স্বপ্নজ সাহসপুরম্নষ, আর কবি আসাদ চৌধুরী সেই ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যমত্ম তৈরি করেছেন উৎসাহের বাতিঘর। এই বাতিঘর নিয়ে আরো শত-সহস্র বছর জীবনযোদ্ধা হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। কেননা, আমাদের পলাশরাঙা ফাগুনের এই বাংলা ভাষা, শোকার্ত একুশ নিয়ে লিখেছেন, মাহবুব উল আলম চৌধুরী, রোকনুজ্জামান খান, শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু গুণ, সিকান্দার আবু জাফর, সুকুমার বড়ুয়া, ফরহাদ মজহার, ফারম্নক নওয়াজ, মহাদেব সাহা, মোহম্মদ মনিরম্নজ্জামান, রফিক আজাদ, সাযযাদ কাদির, কাজী রোজী, রম্নদ্র মুহাম্মদ শহীদুলস্নাহ্, মাকিদ হায়দার, অসীম সাহা, নাসির আহমেদ, জাহিদুল হক, খালেক বিন জয়েনউদদীন, রতন মাহমুদ, রেজাউদ্দিন স্টালিন, লুৎফর রহমান রিটন, সুজন বড়ুয়া, আশরাফুল আলম পিনটু, আমীরম্নল ইসলাম, আহসান মালেক, রমজান মাহমুদ, নাসের মাহমুদ, রাশেদ রউফ, তাহমিনা কোরাইশী, হাসান হাফিজ, ওবায়েদ আকাশ, রাসেল আশেকী, রনজু রাইম, রিফাত নিগার শাপলা, সারওয়ার-উল-ইসলাম, এনায়েত রসুল, জগলুল হায়দার, লিন্ডা আমিন, বীরেন মূখার্জী, রোকেয়া ইসলাম, বকুল হায়দার,   প্রমুখ। এই উলেস্নখিতদের বাইরেও রয়েছেন অসংখ্য কবি ও ছড়াকার; যাদের লেখায় উঠে এসেছে বাংলা ভাষার অসংখ্য ছড়া-কবিতা। কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি। কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর এই কবিতাটি আমাদের একুশের প্রথম কবিতা। যেখানে তিনি বুনেছেন সাহসের বীজ ঠিক এভাবে-ওরা চলিস্নশজন কিংবা আরো বেশি/ যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে রমনার রৌদ্রদগ্ধ কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায়/ ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য বাংলার জন্য।/ যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে/ একটি দেশের মহান সংস্কৃতির মর্যাদার জন্য/ আলাওলের ঐতিহ্য/ কায়কোবাদ, রবীন্দ্রনাথ ও নজরম্নলের/ সাহিত্য ও কবিতার জন্য/ যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে/ পলাশপুরের মকবুল আহমদের/ পুঁথির জন্য/ রমেশ শীলের গাথার জন্য,/ জসীমউদ্দীনের ‘ সোজন বাদিয়ার ঘাটের’ জন্য।/ যারা প্রাণ দিয়েছে ভাটিয়ালি, বাউল, কীর্তন, গজল/ নজরম্নলের ‘‘খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি/ আমার দেশের মাটি।’’/ এ দুটি লাইনের জন্য/  দেশের মাটির জন্য,/ রমনার মাঠের সেই মাটিতে/ কৃষ্ণচূড়ার অসংখ্য ঝরা পাপড়ির মতো/ চলিস্নশটি তাজা প্রাণ আর/ অঙ্কুরিত বীজের খোসার মধ্যে/ আমি দেখতে পাচ্ছি তাদের অসংখ্য বুকের রক্ত।/ রামেশ্বর, আবদুস সালামের কচি বুকের রক্ত…

সম্পাদক, banglareport24.com

২১/এ তোপখানা রোড(কনিকা) ঢাকা ১০০০ বাংলাদেশ। মুঠোফোন ০১৭১২৭৪০০১৫

 

ফিচার সম্পাদক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।