বিশ্ব মানবতার প্রতীক মাদার তেরেসা

বিশ্ব মানবতার প্রতীক মাদার তেরেসা

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ: মাদার তেরেসা সেই মহীয়সী নারী যিনি আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে সারা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে আজো অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেন। বিভিন্ন বয়সী ছেলে-মেয়েরা, যারা বিভিন্ন দিক থেকে সমাজে অবহেলিত, মাদার তেরেসা তাদের-ই বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। আজ তাঁর ১০৩তম জন্মদিন। এই মহাত্মা নারীর জন্মদিনে তাঁর প্রতি রইল আমাদের শ্রদ্ধাজ্ঞলি। মাদার তেরেসা রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ভুক্ত বিশ্বখ্যাত সমাজসেবিকা। তাঁর জন্ম আলবেনিয়ায় ১৯১০ সালের ২৬ আগষ্ট। প্রাথমিক লেখাপড়া জন্ম শহর স্কেপিয়ে-তে। তাঁর পুরো নাম আগ্নেস্ বোইয়াক্সিউ। ডাক নাম গোস্কসা। গোস্কসা মূলত একটি তুর্কি শব্দ, যার অর্থ ‘কুসুমকলি’। তিন ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সকলের ছোট। তাঁর বাবা ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ। তাদের পরিবারটি ছিল অত্যন্ত সুখী। কিন্তু ভাগ্যের এমনই নির্মম পরিহাস যে, মাত্র ৯ বছর বয়সে মাদার তেরেসাকে পিতৃহারা হতে হয়। শুধু মাত্র বাসস্থানটুকু ছাড়া সর্বস্ব হারিয়ে মহা বিপদের সম্মুখিন হতে হয় পরিবারটিকে। আকস্মিক এই বিপর্যয়ের ফলে তেরেসা’র মা ভীষণ ভাবে মুষড়ে পড়েন। সংসারের সব দায়-দায়িত্ব এসে পড়ল তেরেসা’র বড় বোন অ্যাগ এর ওপর। কাপড় বিক্রি ও এমব্রয়ডারির ব্যবসা দিয়ে তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম শুরু হলো। জীবনের এই সংগ্রাম থেকে দারিদ্র ও প্রতিকূলতাকে সাহস ও উদ্দীপনার সাথে গ্রহণ করার তৎপরতা আবিস্কার করেন মাদার তেরেসা। তেরেসার লেখা-লেখির হাত খুব ভালো ছিল। তাই অনেকেই ধারণা করেছিলেন, লেখালেখি করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করবেন। কিন্তু তাঁর আগ্রহ ছিল মানব সেবায়। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি ঠিক করলেন সন্যাসব্রত গ্রহণ করার। তৎকালীন সময়ে ভারতে বাংলায় ধর্মীয় কাজ করতেন যুগোশ্লাভীয় ধর্মযাজকেরা। তাদের সিদ্ধান্ত ছিল, লরেটা সিষ্টারদের মধ্যে যারা আইরিশ সম্প্রদায়ভুক্ত তাঁরা যাবেন ভারতবর্ষের মত এলাকায় কাজ করতে। অ্যাগনেস (মাদার তেরেসা) তাই তাদের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ শুরু করতে চাইলেন। কিন্তু এই কাজ পেতে হলে, তাকে পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হতে হবে। পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হবে, প্যারিসে। মাত্র আঠারো বছর বয়সে যার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বিনয়ী, নম্র এবং পরোপকারে নিজ জীবনকে উৎসর্গ করা, তাঁকে কি কোন পরীক্ষায় পেছনে ফেলা যায়? আর যায় না বলেই হয়তো প্যারিসের সাক্ষাৎকারে সাফল্যের সাথে উর্ত্তীণ হওয়ার পর তেরেসা ও তাঁর সঙ্গীনিকে পাঠানো হলো আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে তাদের সন্ন্যাস জীবনের প্রশিক্ষণ এবং ইংরেজী শিক্ষার জন্য। প্রশিক্ষণ পর্বের প্রায় ৬ সপ্তাহ শেষে ১৯২৮ সালের পহেলা ডিসেম্বর দুই সন্ন্যাসিনী সুদূর ভারতবর্ষের উদ্দেশ্যে সমুদ্র পথে পাড়ি দিলেন। জাহাজেই পরিচয় হলো তিনজন অল্প বয়সী ফ্রানসিস্কান সিষ্টারের সাথে। একত্রে উদযাপিত হলো পবিত্র বড়দিন। ১৯২৯ সালের ৬ জানুয়ারি তাঁরা কলকাতা পৌছালেন। এরও প্রায় চার মাস পর ১৯২৯ সালের ২৩ মে অ্যাগনেসের নাম হলো ‘তেরেসা’। এই ‘তেরেসা’ নামটির     অন্তরালে একটি ছোট্র ইতিহাস আছে;-তেরেসা ছিল মূলত লিসিউ কনভেন্টের জনৈক ফরাসি কারমেলাইট সন্ন্যাসিনীর নাম। ইনি খুব অল্প বয়সে মারা গিয়েছিলেন এবং এই শিক্ষা দিয়েছিলেন যে, নিজেকে হাসি-খুশি ও প্রসন্ন রাখলে নিতান্ত সাধারণ বা একঘেয়ে কাজের মাধ্যমেও সৃষ্টিকর্তার সেবা করা যায়। তিনি এর সংক্ষিপ্ত নাম দিয়েছিলেন সংক্ষিপ্ত পথ বা “দি লিটিল ওয়ে”। ১৯৩১ সালের ২৪ মে সর্ব প্রথম দারিদ্র, বাধ্যতা ও সংযমের সাময়িক সংকল্প গ্রহণ করেণ তেরেসা। সিষ্টার তেরেসার নতুন প্রশিক্ষণ শুরু হলে তাঁকে হিমালয়ের কোলের ছোট্র শহর দার্জিলিং এ পাঠানো হলো। লরেটো কনভেন্ট স্কুলে শুরু হল তাঁর শিক্ষিকা জীবন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালেও কাজ করতেন। এখানেই সর্বপ্রথম দুঃখ ও দারিদ্রতার সাথে তাঁকে সংগ্রাম করতে হয়, যা ছিল তাঁর কল্পনারও বাইরে! দার্জিলিং এর কাজের মেয়াদ শেষ হলে তেরেসা কে আবার ফিরে আসতে হলো কলকাতায়। পাহাড়ি দেশের বিশুদ্ধ মধুর বাতাস, আর ফুলে-ছাওয়া প্রান্তর ছেড়ে কলকাতা মহানগরীর পূর্বপ্রান্তের বস্তি এলাকায় এন্টালীতে লরেটো সিষ্টারদের ডেরায় বসবাস করার জন্য চলেএলেন তিনি। সিষ্টাররা যে কেবলমাত্র এন্টালী লরেটোর মতো বিরাট আবাসিক ধনী  সন্তানদের পড়াতেন তাই নয়, ঐ একই গন্ডির মধ্যে ছিল সেন্ট মেরীজ স্কুল। সেখানে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়তে আসতো। সেন্ট মেরীজ স্কুলে ইতিহাস ও ভূগোল বাংলা ভাষায় পড়ানোর দ্বায়িত্বে নিয়োজিত হলেন সিষ্টার তেরেসা। শিক্ষাকা হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত ভাল এবং সফল। কারণ পাঠ্য বিষয় গুলোকে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে জীবন্ত করে তুলতে পারতেন। তাঁর এই শিক্ষয়িত্রীর জীবন ছিল ব্যস্ততায় ভরা অথচ সুখী। তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর জীবন বুঝি এভাবেই কেটে যাবে। কিন্তু ১৯৩৭ সালের ১৪ মে সিষ্টার তেরেসা তাঁর জীবনের অন্তিম সংকল্প গ্রহণ করলেন। সন্ন্যাসিনীর জীবন বেছে নিয়ে সেন্ট মেরীজ স্কুলের অধ্যক্ষা হলেন তিনি। তখনকার দিনে সন্ন্যাসিনীরা মঠের চেীহদ্দির মধ্যেই কঠোরভাবে আবদ্ধ থাকতেন। হাসপাতাল যাওয়া বা অন্য কোন জরুরী প্রয়োজন ছাড়া তারা মঠের বাইরে বের হতেন না। মঠের চৌহদ্দির বাইরে “সেন্ট তেরেসা” স্কুলে তিনিই প্রথম ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতে আরম্ভ করেন। ১৯৪৬ সাল মানব ইতিহাসের কলঙ্কময় কাল। এই সময়ই পৃথিবীর বুকে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ সংগঠিত হয়। সেই সময়ের একটি রাতে, যুদ্ধ চলাকাষীন সময়ে একদিন সিষ্টার তেরেসা তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খাবার খুঁজতে    রাস্তায় বের হলেন। রাস্তায় তখন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে মানুষের লাশ আর লাশ। এসব লাশ দেখে খুব স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্কিত হয়ে উঠলেন তিনি। ভয়ে তাঁর শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগল। দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের আর্তনাদে তিনি অবিচল হয়ে উঠলেন। এরই মাঝে হঠাৎ লরি বোঝাই সেনাদল, সিষ্টার তেরেসাকে দাঁড় করালেন এবং তাড়াতাড়ি মঠে ফিরে যেতে নির্দেশ দিলেন। সিষ্টার তেরেসা তখন কঠোর কিন্তু শান্তভাবে তাদের জবাব দিলেন, আমার মঠের তিন’শ মেয়ের এতটুকু খাবার নেই, তাদের জন্য খাবার চাই-ই। ফৌজির দল সিষ্টারের সাহস আর অন্যের প্রতি ভালোবাসা দেখে অবাক হয়ে গেলেন। তাঁরা তখন সিষ্টার তেরেসার জন্য চাল সংগ্রহ করে তাকে মঠে পৌছে দিলেন। তখনো তেরেসার আশ্রমের সিষ্টাররা ক্যাথলিক চার্চের স্বীকৃতি পাননি। কিন্তু তাঁরা একান্তভাবেই সন্ন্যাসিনীর জীবনযাপন করতেন। তাঁদের মনে বিশ্বাস ছিল যে, একদিন তাঁরা যথাযথ স্বীকৃতি পাবেন। সমাজসেবা করতে গিয়ে সিষ্টারদের পড়াশুনার যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে তেরেসার বিশেষ নজর ছিল। এভাবে ক্রমেই সন্ন্যাসিনীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। খুব সংক্ষিপ্ত আর সীমিত কার্যকালের মধ্যে সিষ্টার তেরেসা ও তাঁর সঙ্গী-সাথীরা যে বিপুল কাজ করেছেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ কর্মসূটির নমুনা দেখে বিস্ময় আর আনন্দের সীমা রইল না আর্চবিশপের। মিশনের সংবিধানও গৃহীত হলো ১৯৫০ সালের ৭ অক্টোবর। মিশনারীজ অব চ্যারিটিকে স্বীকৃতি দিল ক্যাথলিক চার্চ এবং স্বয়ং পোপ। সিষ্টার তেরেসা, যিনি একসময় ছিলেন লরেটোর শিক্ষিকা, তারপর প্রধান শিক্ষিকা। পরবর্ত্তীতে তিনিই হলেন মিশনারীজ অব চ্যারিটির প্রতিষ্ঠাত্রী মাদার তেরেসা। সম্ভবত তিনি নিজেও অনুমান করতে পারেননি, তাঁর আশ্রমের সাংবিধানিক প্রতিশ্র“তি কতদূর বাস্তবায়িত হতে পারে! প্রথমে যখন তিনি সেন্ট জোসেফের প্রাঙ্গন থেকে পথে নেমেছিলেন, তখন এই বিশ্বাস তাঁর মনে ছিল যে, কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্যই তিনি নিজেকে নিযুক্ত করছেন। কিন্তু একা, মাত্র পাঁচ রুপি হাতে নিয়ে তিনি যখন রাস্তায় নেমেছিলেন, তিনি কি জানতেন যে সমাচার তিনি বহন করে আনছেন তা কতদূর বিস্তৃত, সমৃদ্ধ…?

কলকাতায় ৫৪-এ লেয়ার সার্কুলার রোডের মাতৃভবনটি ছিল শান্তি ও স্থৈর্য্যরে কেন্দ্রস্থল। বিশাল পৃথিবীর সীমাহীন দুঃখের সমুদ্রে যাত্রা করার আগে এটাই ছিল সিষ্টারদের শান্তির বন্দর। মাতৃভবনটি শান্তির আশ্রয়স্থল হলেও, সিষ্টারদের কাজ করার প্রধান দপ্তরটি কিন্তু আদৌ তা নয়। শিশুভবন নামের এই বাড়িটা ক্রীক লেনের খুব কাছেই অবস্থিত যেখানে সমস্ত কর্মকান্ডের সূচনা। বাড়িটা যেন সবসময়ই কর্মব্যস্ত। বাড়ির পাশের ছোট্র দরজা দিয়ে উঠানে ঢুকলেই দেখা যায় একটা নকল গুহাকৃতি জায়গায় শরণার্থীরা অপেক্ষা করছে সাহায্যের জন্য। শিশু ভবনের বিশিষ্ট অথিতিরা হচ্ছেন বিভিন্ন বয়েসের বাচ্চা ছেলে-মেয়েদের দল। মাঝে মাঝে কলকাতার পথঘাট থেকে এতো বেশি পরিত্যক্ত শিশুকে সংগ্রহ করে আনা হয় যে, একেকটি বিছানায় দু’তিন জন একত্রে শুতে হয়। এদের মধ্যে কেউ কেউ এতো ছোট, দুর্বল বা অসুস্থ যে, সিষ্টারদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্বেও তারা মারা যায়! তাদের উদ্দেশ্যে মাদার তেরেসা বলেছেন, “দুঃখী, আর্ত শিশুরা তাদের ক্ষুদ্র জীবনে অল্প সময়ের জন্য হলেও যেন পায় ভালোবাসা ও মমতা”। জীবনে ত্যাগ স্বীকার করলে সেই কাজের স্বীকৃতি নিশ্চয়-ই পেতে হবে। তারই প্রমাণ মাদার তেরেসা। তিনি জীবনে বিভিন্ন সরকার ও প্রতিষ্ঠান থেকে বহু পুরস্কার পেলেও এই নিয়ে তাঁর কোন গর্ব ছিল না। বরং তিনি পুরস্কার হাতে নিয়ে বিব্রত কন্ঠে বলতেন, “আমি অতি ক্ষুদ্র। আমার শক্তি, আমার কর্মবাহিনী আর জনগণের ভবালোবাসা। এই পুরস্কার তো তাদের প্রাপ্য!” মাদার তেরেসা প্রথম পুরস্কার পান ১৯৬২ সালে। ভারত সরকার ‘পদ্মশ্রী’ উপাধিতে তাঁকে ভূষিত করেন। পরবর্ত্তীতে দুঃস্থ মানবতার সেবায় আত্মোৎসর্গের স্বীকৃতিস্বরূপ মাদার তেরেসা ১৯৭৯ সালে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৭১ সালে পোপ জন শান্তি পুরস্কার, ১৯৭২ সালে জওহরলাল নেহরু এবং ভারতরতœ পুরস্কার পান। তিনি ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মোট ৮৪টি পুরস্কার ও সাম্মানিক উপাধিতে ভূষিত হন। মাদার তেরেসাকে অমর করে রাখার সবচেয়ে বড় প্রয়াসটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার। বিশ্বের ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে যারা দু’মুঠো অন্ন পৌঁছে দেন তাদের তরফে এই স্বীকৃতি হলো সেরেস মেডেল। এই মেডেলের এক পিঠে রয়েছে ভিক্ষাপাত্র হাতে অপুষ্টিতে ভোগা একটি শিশুর মূর্তি আর অপর পিঠে রয়েছে মাদার তেরেসা’র ছবি। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের সে সময়কার সেক্রেটারী জেনারেল পেরেজ দ্যা কুয়েলার মাদার তেরেসা সম্পর্কে এক সভায় বলেছিলেন, পৃথীবির সবচেয়ে শক্তিশালী মানবী হচ্ছেন, মাদার তেরেসা।

মাদার তেরেসা’র কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বাণীঃ 

  •    আনন্দই প্রার্থনা, আনন্দই শক্তি, আনন্দই ভালোবাসা।
  •    হৃদয়কে স্পর্শ করতে চায় নীরবতা। কলরবের আড়ালে নীরবেই পৌছাতে হয় আর্তের কাছে।
  •   কেবল সেবা নয়, মানুষকে দাও তোমার হৃদয়। হৃদয়হীন সেবা নয়, তারা চায় তোমার অন্তরের স্পর্শ।
  • দিয়ে যাও যতক্ষণ যন্ত্রণা তোমায় বিদ্ধ না করে। জানবে, সত্যিকারের ভালোবাসা যন্ত্রণারই অপর নাম। হৃদয়ের বেদনাই সত্যিকারের ভালোবাসার উৎস।

আর্তমানবতার প্রতীক মাদার তেরেসা সারাটা জীবন কাজের মাঝে ডুবে ছিলেন। কিভাবে যে কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব পেরিয়ে বার্ধক্যে পা রেখেছেন-বুঝতেই পারেননি। শুধু মানুষের জন্য কাজ-ই করে গেছেন, বিশ্রাম নেননি এতোটুকু! অতিরিক্ত পরিশ্রম আর বয়সের চাপে এক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ১৯৮৩ সালে তাঁর প্রথম অসুস্থতা ধরা পড়ে। পরবর্ত্তীতে তাঁর হৃদরোগ ধরা পড়লে বুকে পেসমেকার লাগানো হয়। তাতেও আরোগ্য লাভ হচ্ছিল না। এর একটা বড় কারণ ছিল প্রচন্ড অসুস্থ্যতা নিয়েও তিনি কাজের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেড়াতেন। কাজ যেন তাকে সর্বদা তাড়া করে বেড়াতো! তাঁর হৃদযন্ত্রে বাইপাস সার্জারিও করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর ছুটে চলা থেমে থাকেনি। এভাবেই পেরিয়ে যেতে থাকে সময়। ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসে তাঁর অন্তিম মুর্হুত্ব। অবশেষে ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কলকাতার মাদার হাউসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহাত্মা নারী। তাঁর শেষ কথাটি ছিল, “আমি আর শ্বাস নিতে পারছি না!” মাদার তেরেসা আজ আমাদের মাঝে নেই কিন্তু মানবতার প্রতীক হিসেবে তিনি অমর হয়ে থাকবেন সারা বিশ্ববাসীর কাছে…।

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ প্রধান সম্পাদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কম।।

প্রধান সম্পাদক

Related articles