হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে তৎপর হচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন

হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে তৎপর হচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন

বিশেষ প্রতিবেদক,এসবিডি নিউজ 24 ডট কমঃ

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়তন, জনসংখ্যা ও সব ধরনের ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর অনেক নতুন অবকাঠামো হোল্ডিং ট্যাক্সের আওতায় আনা হয়নি। তাই হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়ানোর ওপর দুই সিটি করপোরেশন জোর দিয়েছে। আগে বেশ কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে রাজধানীর অনেক নতুন অবকাঠামো হোল্ডিং ট্যাক্সের আওতায় আনা হয়নি। এবার এসব অবকাঠামোকেও হোল্ডিং ট্যাক্সের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, মিউনিসিপাল করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুল ১৯৮৬-এর ২১ ধারা মতে প্রতি পাঁচ বছর পর পর হোল্ডিং ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়নের বিধান রয়েছে। অথচ গত ২২ বছরে এ বিষয়ে নজর দেয়া হয়নি। তবে গত মাসে হোল্ডিং ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও বিভিন্ন মহলের সমালোচনায় তা থেকে সরে আসে বিভক্ত দুই সিটি করপোরেশন। এখন হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সংস্থাটি। তবে এটি ঢালাওভাবে পরিচালনা না করে শুধু নতুন নির্মিত ও সম্প্রসারিত অবকাঠামোতে হোল্ডিং ট্যাক্স বসানোর কার্যক্রম শুরু করতে চাইছে দুই ডিসিসি।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে প্রতিটি বাড়ি বা অবকাঠামো থেকে যে ভাড়া আদায় হয় তার ১২ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স হিসেবে সিটি কর্পোরেশনকে দিতে হয়। এখন নতুন করে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের এ কার্যক্রমেও ১২ শতাংশই বহাল থাকবে। তবে সেটা বর্তমান দরে আদায়কৃত ভাড়ার ওপর আদায় করা হবে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীনে ১ লাখ ৪০ হাজার ৪৭৮টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে ১ লাখ ২২ হাজার ৭৮৯টি হোল্ডিং রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খলিলুর রহমান জানান, এত দিন ঠিকমতো হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় হয়নি। তাই এখন এ টাকা আমরা সংগ্রহ কারার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতি মাসে এ টাকা ধাপে ধাপে সংগ্রহের জন্য পারসেন্টিজ নির্ধারণ করে দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ টার্গেট অনুযায়ী কাজ করবেন। আর হোল্ডিং ট্যাক্স যথানিয়মে আদায় হলে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
১২ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স হিসেবে এ টাকা আদায় করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের ফলে অঞ্চলভিত্তিক পাকা, সেমিপাকা, কাঁচা অবকাঠামোর পরিবর্তন, সম্প্রসারণ ও ব্যবহারের ধরন পর্যালোচনা করে হোল্ডিং হালনাগাদ করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আগে যেসব বাড়ি টিনশেড ছিল সেগুলোর মধ্যে অনেক বাড়িই এখন পাকা বাড়ি হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও যে বাড়িগুলো আগে আবাসিক ছিল সেগুলো এখন বাণিজ্যিক হয়েছে। এখন এসব হালনাগাদ করা হবে।

এদিকে হোল্ডিং ট্যাক্স কার্যক্রম জোরদার করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব মো. সামসুজ্জামান ২৫ জানুয়ারি এক অফিস আদেশ জারি করেন। ওই আদেশে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ বিষয়ে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের আহ্বায়ক করে দুই সিটি করপোরেশনের দশটি অঞ্চলে দশটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। কমিটিতে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতিটি অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপকর কর্মকর্তা, রেভিনিউ সুপারভাইজারকে সদস্য করা হয়েছে। আর আঞ্চলিক কর কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব নির্বাচিত করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১ মাসের মধ্যে নিজ নিজ এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক অবকাঠামোর পরিবর্তন, সম্প্রসারণ ও ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী কর ধার্য করতে বলা হয়েছে।

বিশেষ প্রতিনিধি

Related articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।