জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩ এর খসড়ার অনুমোদন

জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩ এর খসড়ার অনুমোদন

শহিদুল ইসলাম,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ষাট বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের সিনিয়র সিটিজেনশিপ দেয়ার বিধান করে জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া সিনিয়র সিটিজেনশিপ নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের বিষয় এ নীতিমালায় রয়েছে। ১৭ নভেম্বর (রোববার) সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “প্রবীণদের গড় বৃদ্ধি জনসংখ্যাতাত্ত্বিক রূপান্তর ব্যক্তি, সমাজ, জাতীয় ও আর্থ-সামাজিক জীবনে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলবে। প্রবীণদের দারিদ্রমুক্ত, কর্মময় ও নিরাপদ সামজিক জীবন নিশ্চিত করাই এই নীতিমালার লক্ষ্য।” সচিব বলেন, “৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিরা প্রবীণ হিসেবে স্বীকৃত হবেন। আর এই নাগরিকরা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন।”

খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী সমাজের দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত, প্রতিবন্ধী, শারীরিকভাবে রুগ্ন-দুর্বল এবং পারিবারিক সাহায্যবিহীন প্রবীণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিহ্নিত করা এবং তাদের জন্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি করা হবে। অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সেবা দেয়া হবে। পারিবারের প্রবীণ ব্যক্তিদের সেবা দেয়ার জন্য সরকারি ত্রাণ ও অন্যান্য সাহায্যের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য কল্যাণমূলক কার্যক্রম চালু করা হবে। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ‘কল্যাণ তহবিল’ গঠন করা, প্রতিরক্ষা সঞ্চয় পত্রের ন্যায় ‘প্রবীণ কল্যাণ সঞ্চয়পত্র’ প্রবর্তন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুদানে তহবিল গঠন এবং প্রবীণ ব্যক্তিদের কল্যাণে ব্যয় করার কথাও বলা হয়। সচিব বলেন, দেশে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়া প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে। একারণে সরকার নীতিমালাটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রবীণদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থান, দরিদ্রমুক্ত, স্বাস্থ্য সেবা, বাস ট্রেন ও নৌপথেচলা চলের জন্য আসন সংরক্ষন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। সচিব বলেন, প্রবীণদের জন্য প্রবীণ নিবাস ডে কেয়ার সেন্টারসহ বিভিন্ন সুযোগ কথা বলা রয়েছে এ নীতিমালায়।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২ জুলাই ‘প্রবীণ বিষয়ক জাতীয় নীতিমালা’ তৈরি করতে জাতীয় কমিটি পুনর্গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী। গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অনুমোদন দেন ওই জাতীয় কমিটির। ওইদিন একটি উপ-কমিটিও গঠন করা হয়। ওই কমিটিকে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। জাতীয় অধ্যাপক এম আর খানকে আহবায়ক ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হোসেন মোল্লাকে সদস্য সচিব করে গঠিত হয় উপ-কমিটি। কমিটিতে রাখা হয় অধ্যাপক ড. প্রাণ গোপালসহ বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের। উপ-কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে খসড়া প্রস্তুত করা হয়। দ্বিতীয় দফা খসড়া তৈরি সম্পন্ন হলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে মতামতের জন্য প্রকাশ করা হয় ছয় মাস আগে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন, ২০১৩ এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।

নিজস্ব প্রতিনিধি