সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমছে!

সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমছে!

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানোসহ ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিলিং করে দেয়ার চিন্তা করছে সরকার। একই সঙ্গে জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে সরকারের কিছু সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ১২ নভেম্বর (বুধবার) বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে সমন্বয় কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এসব আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আরো কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন, অর্থসচিব মাহবুব আহমদ, ইআরডি সচিব মেজবাহ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে মুনাফা কত শতাংশ কমানো হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার গড়ে সাড়ে ১১ শতাংশ। এর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রের  প্রথম বৎসরান্তে মুনাফার হার ৯ দশমিক ২০ শতাংশ; দ্বিতীয় বৎসরান্তে একই সময়ের জন্য মুনাফার হার ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ, তৃতীয় বৎসরান্তে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ, চতুর্থাংশ বৎসরান্তে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বৎসরান্তে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ; পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং পরিবার সঞ্চয়পত্রের জন্য ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
বৈঠকে ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিলিং করে দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীরা ঋণের সুদের হার কমানোর জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বৈঠকে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক ঋণের সুবিধা বাড়াতে সুদের হার সিলিং করে দেয়ার প্রস্তাব দেন।  তবে তিনি আমানত ও সুদের হারের মধ্যে ব্যবধান কমানোর (স্প্রেড) বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন। বৈঠকে বাজেট বাস্তবায়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ সময় বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হলেও রাজস্ব আদায়ে টার্গেটের চেয়ে অনেক পেছনে রয়েছে বলে জানানো হয়। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন রাজস্ব আদায় বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান। বৈঠকে জনশক্তি রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ কারণে দেশে রেমিট্যান্স আসা কমে গেছে বলে জানানো হয়। এ প্রসঙ্গে বৈঠকে বলা হয়, বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে জনশক্তি রপ্তানি হচ্ছে। বেসরকারি পর্যায়ে জনশক্তি রপ্তানি না হওয়ায় বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি কমে গেছে। এ বিষয়ে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা পরিবর্তন করে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করার উদ্যোগ নেয়ার ওপর জোর দেয়া হয়। 

 

সূত্র জানায়, বৈঠকে স্বর্ণের ওপর আরোপিত শুল্ক নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ সময় বলা হয়, বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কম হওয়ায় পার্শ্ববর্তী দেশে স্বর্ণ পাচার হয়ে যায়। পাচার বন্ধ  করতে স্বর্ণের ওপর শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এর আগে প্রতি ভরি স্বর্ণের ওপর শুল্ক ছিল ১৫০ টাকা। বর্তমানে তা ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে ভারতে প্রতি ভরি স্বর্ণের শুল্ক ৬ হাজার টাকা। এ বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে এনবিআরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিনিধি