বাংলাদেশের রাজনীতিতে গোত্রবাদী চেতনার আবির্ভাব?

বাংলাদেশের রাজনীতিতে গোত্রবাদী চেতনার আবির্ভাব?
মাহফুজ আনাম: ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে এক বিমান দুর্ঘটনায় রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট হাবায়ারিমানার মৃত্যুর পরই দেশটির হুতু ও তুতসি গোত্র পরস্পরকে নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। ওই নৃশংসতায় পুরো বিশ্ব কেঁপে ওঠে। আর যে কোনো ধরণের পরিস্থিতিরই সুবিধাগ্রহণকারী ওই দুই গোত্রের খুনিদের হাতে দেশটির সাধারণ মানুষকে অপরিমেয় ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতিরও তুতসি এবং হুতুকরণ ঘটছে কি? হালকা চালে নয় বরং হৃদয়ে গভীর উদ্বেগ নিয়েই আমরা এই প্রশ্নটি তুলছি।
আমাদের দেশের ইতিহাস রুয়ান্ডার চেয়ে একদমই আলাদা, তা বলাই বাহুল্য। শোষণ-নীপিড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের রয়েছে এক লম্বা ঐতিহ্য; আমাদের রয়েছে গন-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসককে পরাস্ত করার এক গৌরবময় ইতিহাস; আর সর্বোপরি নিজেদের জনগনের জন্য একটি স্বাধীন দেশ অর্জনে সশস্ত্র সংগ্রামের এক গৌরবময় ঐতিহ্যও রয়েছে আমাদের।
তথাপি বাধ্য হয়েই আমাদের মনে উক্ত প্রশ্নটি জেগে উঠছে এবং আমরা জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হচ্ছি আমরা কি আমাদের দেশের রাজনীতিতে এক ধরণের ‘গোত্রবাদে’র উত্থান দেখতে পাচ্ছি না?
গোত্রীয় সংঘাতে সাধারণত গোষ্ঠীগত আত্মপরিচয় অন্য সবকিছুকে ছাপিয়ে যায়। এক পক্ষের প্রতিটি সদস্য অন্য পক্ষের প্রতিটি সদস্যকে ঘৃণা করেন; শুধুমাত্র একটি কারণেই যে, তারা প্রতিপক্ষের লোক। এ ক্ষেত্রে একটিই মাত্র বিশ্বাস কাজ করে- প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর লোকদের মাঝে কোনো ভালো লোক বা ভালো কোনো গুনই নেই।
ফলে প্রতিপক্ষের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ প্রতিটি সদস্যকে তাদের সব ধরণের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ব্যাপারেও কোনো বিবেকের দংশন কাজ করে না। প্রতিপক্ষকে অশুভ দানবীয় শক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করাটাই প্রধান কাজ হয়ে পড়ে। আর প্রতিপক্ষের একটি গ্রুপের জন্য অপর পক্ষকে সারাক্ষণই খোদ শয়তানের অবতার রুপে চিত্রায়িত করাটাই যেন দৈনন্দিন কর্তব্যে পরিণত হয়।
এ ধরণের পরিস্থিতিতে পক্ষপাতদুষ্ট প্রচারণাই রাজনীতির কেন্দ্রীয় মঞ্চটি দখল করে নেয় এবং সব ধরণের আলোচনা, সংলাপ ও বিতর্ক অসম্ভব হয়ে পড়ে। বিপরীতে স্ব-গোত্রীয়দের সব ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড একটি গোত্রের সব সদস্যের মাঝেই গ্রহণযোগ্যতা পায় এই ধারণা থেকে যে, অপরাধগুলো করা হয়েছে প্রতিপক্ষের অশুভ দানবীয় শক্তির বিরুদ্ধে। ফলে ন্যায়বিচারের সব ধরণ, আইনের শাসন, নিরপেক্ষতা, সততা, ঠিক ও বেঠিক এই ধারণাগুলো অর্থহীন এবং অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। আর এতে সমাজের মৌলিক মূল্যবোধগুলোরও বিলুপ্তি ঘটে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মাঝে বিদ্যমান পারস্পরিক ঘৃণা, চলমান সহিংসতার অযৌক্তিকতা, অর্থনীতির উপর এই সহিংসতার ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় না নেয়া এবং সাধারণ জনগনের দৈনন্দিন জীবন-যাত্রার উপর এর ক্ষতিকর প্রভাবের ব্যাপারে উদাসীনতা প্রদর্শন- বর্তমান বাংলাদেশে বিদ্যমান এসব প্রবণতা থেকে আমাদের রাজনীতিতে এক ধরণের গোত্রবাদী চেতনার উত্থানেরই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের দৃষ্টিতে প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামাতের প্রতিটি সদস্যই শত্রু এবং তাদের সকলকে যে কোনো মূল্যে নির্মূল করাটাই যেন এখন তাদের রাজনীতির প্রধান কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য পরস্পরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল এবং গত ২৪ বছর ধরে পালাক্রমে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এ দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতও ছিল তারাই আজ পরস্পরের অসহনীয় ও নির্মূলযোগ্য শত্রুতে পরিণত হয়েছে। আমাদের রাজনীতির অমানবিকীকরণ প্রক্রিয়া আজ প্রায় সম্পূর্ণ।
বিরোধী দল যা করছে তাও সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা, শিল্প উৎপাদনে অন্তহীন বিরতি, অবরোধের মতো অর্থহীন রাজনৈতিক কর্মসূচি- কেউই যা স্বেচ্ছায় পালন করছে না, এসবকে এক কথায় সম্পূর্ণ অনৈতিক, নীতিহীন এবং ক্ষমতার জন্য চক্রান্তমূলক কর্মকাণ্ড আখ্যায়িত করা ছাড়া আর কোনো নামেই ডাকা সম্ভব নয়। স্বাধীনতাপ্রেমী কোনো মানুষই এক মিনিটের জন্যও এসবকে গ্রহণ করবে না।
চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় গতকাল পর্যন্ত ৬৮ জন নিহত হয়েছেন। এদের বেশিরভাগই আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। মানুষকে এভাবে পুড়িয়ে মারা শুধুমাত্র মধ্যযুগীয় বর্বরতার সঙ্গেই তুলনীয়। মধ্যযুগে ধর্মীয় কুসংস্কারপ্রসূত যাগযজ্ঞে পূণ্য (!) লাভের আশায় বা ধর্মদ্রোহীতার তথাকথিত অভিযোগে লাকড়ির স্তুপে চাপা দিয়ে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করতে দেখা যেত। আর লাকড়ির স্তুপের জায়গায় বাসভর্তি মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে আমাদের রাজনীতিকরা আমাদেরকে কি মধ্যযুগেই ফিরিয়ে নিয়ে যান নি?
অন্যদিকে, সরকারও বিএনপিকে কেন গত ৫ জানুয়ারি সভা সমাবেশ করতে দেয়নি তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেয়নি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিকে বিএনপি গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি এর বর্ষপূর্তি পালনের জন্য সভা-সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে। সরকার ওই কর্মসূচি পালন করতে না দেয়ায়ই চলমান এই মর্মান্তিক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে।
খালেদা জিয়াকে কেন জোরপূর্বক তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং কেন তাকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে দেয়া হচ্ছে না? কেন বিএনপির প্রায় সব শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং দলটির হাজার হাজার নেতা-কর্মী হয় জেলে বন্দী নয়তো আত্মগোপনে রয়েছেন? কেন বিএনপির প্রায় সব নেতার বিরুদ্ধেই মামলার পাহাড় দায়ের করা হয়েছে?
বিরোধী দলের নিরপরাধ মানুষ হত্যার কোনো ন্যায্যতা নেই এ ব্যাপারে যেমন আমাদেরকে বিরামহীন প্রতিবাদ জানাতে হবে তেমনি একইসঙ্গে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অধিকার আদায়ের ব্যাপারেও আমাদের কথা বলতে হবে। বর্তমানে দেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শনের কোনো সুযোগ যে নেই এই বাস্তব সত্যটি অস্বীকারেরও কোনো উপায় নেই।
সম্প্রতি সুশীল সমাজের কয়েকজন প্রখ্যাত সদস্য চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে বিরোধী দলের সহিংসতা বন্ধের পাশাপাশি সংলাপের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে প্রস্তাব নিয়ে গেলে দলটি যে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা থেকেই বর্তমানে সমাজে বাকস্বাধীনতার অধিকারের কতটা অবনতি ঘটেছে তা বুঝা যায়। সুশীল সমাজের ওই প্রতিনিধি দলটির প্রতি সরকারের খাদ্যমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে কুৎসিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘সুশীলরা হল সমাজের ক্যান্সার। এই পরগাছা… সুশীল সমাজ নামের এই ক্যান্সারকেও সমাজ থেকে নির্মূল করতে হবে।’
এই ‘ক্যান্সারমূলক’ উপাদান এবং ‘পরগাছারা’ কারা? এদের একজন হলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার; যার অধীনে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়। আরেকজন হলেন আমাদের প্রধান সংবিধান রচয়িতাদের একজন। যিনি বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সহচারী ছিলেন এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও চাহিদা সম্পন্ন একজন আইনজীবী।
সুশীল সমাজের ওই প্রতিনিধি দলে দেশের উন্নয়ন ও জাতি গঠনের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী নিষ্কলুষ খ্যাতি ও দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অনেক পেশাদার ব্যক্তিরাও ছিলেন। কিন্তু এরা সকলেই নাকি ‘পরজীবি এবং সমাজ থেকে এদের নির্মূল করা উচিৎ’; শুধুমাত্র এ কারণে যে তারা চলমান রাজনৈতিক সংকটের ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন।
বর্তমানে কলহ জর্জরিত বিশ্বের দিকে তাকালেও আমরা দেখতে পাবো যে অনেক দেশ ও সমাজই আজ আঞ্চলিক, নৃতাত্বিক, ধর্মীয়, ভাষাতাত্বিক, সাংস্কৃতিক এবং গোত্রীয় সংঘাতের কারণে বিভক্ত হয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তুলনামূলকভাবে এ ধরণের দ্বন্দ্ব সংঘাতের অনুপস্থিতিতে আমাদের নিজেদেরকে অনেক বেশি কল্যাণমূলক আশীর্বাদপুষ্ট বলেই মনে হয়।
আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ জনগোষ্ঠী এবং আমাদের এই ঐক্য নজিরবিহীন ও অমূল্য সম্পদ। আমাদের জনগোষ্ঠীর ৯৫ শতাংশই বাঙ্গালি; ৮৫ শতাংশ মুসলিম; যাদের প্রায় সকলেই আবার সুন্নী; আমাদের নৃতাত্বিক এবং নরগোষ্ঠীগত উৎসও প্রায় এক; আর আমাদের প্রায় সকলেরই মাতৃভাষা বাংলা। এ সব কিছু মিলিয়ে আমরাই বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমগোত্রীয় ও ঐক্যবদ্ধ জনগোষ্ঠী। (তবে নিজেদের এই বিশাল ঐক্যই যে আবার আমাদেরকে দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীগুলোর অধিকার ও প্রয়োজনীয়তার প্রতি অন্ধ ও অসংবেদনশীল করে তুলেছে সে ব্যাপারেও আমি খুবই সচেতন আছি। এই ব্যর্থতার জন্যও আমাদেরকে ভবিষ্যতে চড়া মূল্য দিতে হবে।)
বর্তমান বিভক্তিমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ এবং অসহনশীল রাজনীতিই এই অমূল্য, বিরল এবং উচ্চমূল্যের পুরস্কারস্বরুপ আমাদের ঐক্যকে ধ্বংস করছে।
স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলেই জেনারেল এরশাদের পতন ঘটেছিল। এই দুটি দলই একসঙ্গে মিলেমিশে প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থার জায়গায় সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিল। আওয়ামী লীগের দাবির প্রেক্ষিতে এই দুটি দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয়েছিল। বয়কটের সংস্কৃতি চালু থাকা সত্ত্বেও এই দুটি দলের এমপিরাই সংসদের বিভিন্ন কমিটিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন এবং তাদের সামষ্টিক প্রজ্ঞার ব্যবহার করে অনেক গুরুত্বপূর্ন পরিবর্তনের সূচনা করেছেন।
বিশ্বের অনেক দেশেই নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্কে বিস্তর মতপার্থক্য বিরাজমান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মাঝে বর্তমানে এতোটাই ঘৃণা ও মতপার্থক্য বিরাজমান যে এক লেখক একে দেশটির দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ভারতের বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যকার সম্পর্ক, পাকিস্তানের মুসলিম লীগ এবং ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন তেহরিক-ই-ইনসাফের সম্পর্ক, শ্রীলঙ্কার প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন এই সবগুলো দেশেই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক বিরাজমান। কিন্তু তাদের মধ্যকার ওই তিক্ততা শুধুমাত্র নির্বাচনের সময়ই প্রকাশ্যে আসে; তাও আবার নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ থাকে এবং নির্বাচনের পরপরই ওই তিক্ততার অবসান ঘটে।
তবে এর ব্যতিক্রমও আছে, যেমন, একের পর এক নির্বাচনেও থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক তিক্ততার অবসান ঘটেনি। রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘাতের সুযোগে সেখানে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের দ্বার উম্মুক্ত হয়েছে। মিশরেও আমরা পুনরায় সেনাবাহিনীকে ক্ষমতায় আসতে দেখেছি। ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসা দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ম্যান্ডেটের মাধ্যমে প্রাপ্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করার ফলেই এমনটি ঘটে।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই যে কোনো পক্ষেরই সংবিধান বহির্ভূত কর্মকাণ্ডকে ঘৃণা করে। পাশাপাশি এ দেশের জনগন প্রত্যাশা করে আমাদের উভয় পক্ষের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দই শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে, রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিবে, সমন্বয়ধর্মী হবে, ভিন্ন মতাবলম্বীর প্রতি সহনশীল হবে, প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে পরিপক্কতার পরিচয় দিবে। আর সর্বোপরি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং সুশাসনের প্রতি অনুরক্ত থাকবে।
কিন্তু বিরোধী দলের জ্বালাও-পোড়াও আর সরকারের ক্রসফায়ার আমাদের অগ্রগতির স্বপ্ন ধ্বংস করছে এবং আমাদের রাজনীতিতে বর্বর গোত্রবাদী প্রবণতার অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে। আমাদের তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেই তার লক্ষণ সুস্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘দানব এবং মানুষদের মধ্যে কোনো সংলাপ সম্ভব নয়।’
রুয়ান্ডার হুতু এবং তুতসিরাও পরস্পরের বিরুদ্ধে নৃশংস হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হওয়ার আগে পরস্পরকে দানব হিসেবেই আখ্যায়িত করেছিল। এর বেশি কিছু কি আর বলার দরকার আছে?
[মাহফুজ আনাম: সম্পাদক,দি ডেইলি স্টার]

অতিথি লেখক