সম্প্রীতি!

সম্প্রীতি!

জেসিকা ইরফান: সম্প্রীতি শব্দটা মনে হয় বুদ্ধুরাম। আমার অনেক কৌতুহল জমা হয়ে আছে এই শব্দের বিস্তারে । চেহারা গম্ভীর করা লোকজনের মুখে লক্ষবার শুনেছি এই শব্দ। বক্তারা মিটিং এ মুখস্ত,গদবাঁধা এই প্রীতি নিয়ে বক্তৃতা করেই অপেক্ষা করেন,পত্রিকায় তার ভাষণ হেডলাইন হলো কি না। গানে তন্ময় শুনেছি, সেমিনারে শুনেছি। কবিতায়? তাও পড়েছি। এতো এতো পড়েছি যে সব খেই হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই হারানো মানিক সম্প্রীতি যে কোথায় আছে এতোটা বছর পেরিয়েও তাই বুঝতে পারছি না! আসাদ চৌধুরীর কবিতার ভাষায় বলতেই পারি “কোথায় পালাল সম্প্রীতি?”

বাড়ির পাশের লোক যখন দুঃখে কাতর থাকে তখন আমার কেমন যেন অবর্ণনীয় আনন্দ হয়,আহা! তাহলে ভিন্ন ধর্মীর দুঃখে আমি কেমন করে কাতর হই বলুন তো ? উঁহু…

আট ভাইবোন আট বাড়িতে আলাদা জীবন যাপন। একজনের অন্য জনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সে কি গোপন প্রচেষ্টা,ইঁদুর দৌঁড়! আমাদের সবই আলাদা। চোখের পাপড়ির নিচে আলাদা সূক্ষ্ণ প্রতিযোগিতা (সহযোগীতা নয়)। ভাতের হাঁড়ি, আসবাব, জীবন-যাপন, চিন্তা চেতনা ..স অ ব…। মা বাবাকে আলাদা করেছি … ঘুরে ঘুরে দিনগুনে একেকজনের বাড়িতে ওঁরা থাকে। আমার পালা যখন শেষ হয় পরম আনন্দে নিঃশ্বাস ফেলি, আহা এ কটা দিন শান্তি !

তারপরও সম্প্রীতির কথা বলে বলে গলা শুকিয়ে ফেলি! আসলে কি জানেন? সম্প্রীতি নিয়ে আর যাই করা যাক না কেন সমাজে সম্প্রীতি গড়া আসলে ঠিক মানুষের কাজ নয়। খামোকা..! সত্যিকারের সম্প্রীতি হলে হুলস্থুল ঝামেলা। নষ্ট মানুষ নষ্টামি করার জায়গা পাবে না  যুদ্ধ বন্ধ ,মারামারি বন্ধ ,হানাহানি নেই,কাড়াকাড়ি বন্ধ… ! তাই কি হয়? তাহলে মোড়লরা মোড়লগিরি করে মোগলাই খাবেন কি করে? মানুষ ভয় না পেলে কি ওনাদের দাম থাকে?
শুনুন..
তারচেয়ে চলুন সম্প্রীতির জন্য সেজেগুজে মিছিল করি, সেমিনার করি। নিদেন পক্ষে প্রবন্ধ লিখি কিন্তু সত্যিকারের সম্প্রীতি? লেখার অক্ষরে বা মানুষের ভাষাতেই থাক। থাকুক ঘুমিয়ে ওটা। কী লাভ ঘুম থেকে জাগিয়ে!

[লেখাটি লেখকের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে সংগৃহীত।।]

অতিথি লেখক