৫ মাসে ৯৫টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড

৫ মাসে ৯৫টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশে ৯৫টি বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ক্রসফায়ারে মারা গেছেন ৭৩জন। ১ জুন (সোমবার) মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায়। সংস্থাটির প্রতিবেদনে যেসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বন্দুকযুদ্ধ, গুলিতে নিহত, পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা, নির্যাতনে মৃত্যু এবং অন্যান্য। এসব ঘটনায় জানুয়ারিতে ১৮টি, ফেব্রুয়ারিতে ৩৮টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তবে মার্চ ও এপ্রিল মাসে এ সংখ্যা কমে যথাক্রমে হয়েছিল ১২টি ও ৯টি। কিন্তু মে মাসে আবার আগের মাসের তুলনায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বেড়ে দ্বিগুণ হয়।

প্রতিবেদনে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করার এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের আন্তর্জাতিক নীতিমালা মেনে চলার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা পায়ে গুলি করা ঘটনা ঘটেছে ৩০টি। আর গুমের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ৩৩টি গুমের ঘটনা রয়েছে। পাশাপাশি গত পাঁচ মাসে সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ১৩৭ জন। আহত হয়েছেন তিন হাজার ৭৮৩ জন। নিহত ব্যক্তির সংখ্যার দিক দিয়ে প্রথম তিন মাসে এ সংখ্যা ছিল ১২১ জন। তাই সংস্থাটি সব রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা ও সংঘাতপূর্ণ রাজনীতি বন্ধের জন্য অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকার কিংবা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে জাতীয় নির্বাচন করার প্রয়োজনীয়তা সুপারিশ আকারে তুলে ধরে।

অন্যদিকে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে মারা গেছেন ২০ জন বাংলাদেশের নাগরিক। আহত ২৯ জন, আর অপহরণ করা হয়েছে ১৬ জনকে। অধিকার’এর তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে ২৩৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে বছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় মে মাস এর হার আশঙ্কাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে ৩৩, ফেব্রুয়ারিতে ৪৪, মার্চে ৪০, ও এপ্রিল মাসে ৪১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। কিন্তু মে মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৭৫ টি। ধর্ষণের মতো যৌতুকের কারণে সহিংসতার ঘটনাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে ১৩, ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ১৫টি করে এবং এপ্রিল মাসে ১৩টি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। তবে মে মাসে এ ধরনের সহিংসতা হয়েছে ১৭ টি। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৬২জন। প্রতিবেদনে নারী নির্যাতন বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অপরাধীদের শাস্তি প্রদান ও গণমাধ্যমের সচেতনতা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। সংস্থাটি আরও জানায়, বছরের পাঁচ মাসে অ্যাসিড সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২৪টি। একই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপিটুনিতে মারা গেছেন ৫৭ জন।

এদিকে প্রতিবেদনে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের চিত্রও তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয় বছরের এই পাঁচ মাসে ৪৬ জন আহত হয়েছেন। হুমকির সম্মুখীন ১৪, লাঞ্ছিত ৩, নির্যাতন ১ ও গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫ জন।

নিজস্ব প্রতিনিধি

Related articles