মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত

মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কম: প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান ফারুকী স্বাক্ষরিত এক আদেশে গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ওই কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

আদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নম্বর ১০২৭/২০১৭-এর ২৩/১/২০১৭ তারিখের আদেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১৯ জানুয়ারির বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান ফারুকী স্বাক্ষরিত (২২ জানুয়ারি সংশোধিত) ওই আদেশে বলা হয়েছিল, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত করা, আবেদন করা মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই, তালিকাভুক্ত দাবিদার মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই তালিকাভুক্ত করা, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য জেলা, মহানগর ও উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি করা হলো।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যাচাই-বাছাই কমিটি গঠনের পর স্থানীয়ভাবে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক ওঠে। এরপর যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। এরপরই আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটি গঠনের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করা হয়েছে।

গত ১৯ জানুয়ারি যাচাই-বাছাই কমিটির ওই আদেশে বলা হয়েছিল, জেলা/মহানগর কমিটিতে বর্তমান সংসদ সদস্য অথবা তার মনোনীত একজন ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা কমিটির সভাপতি হবেন। সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হলে তিনি সদস্য হবেন। আর তিনি মুক্তিযোদ্ধা না হলে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধাতে ওই কমিটির সভাপতি পদে মনোনীত করবেন। সেক্ষেত্রে ওই সংসদ সদস্যর কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন। এছাড়া এই কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল, জেলা/মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বা তার মনোনীত জেলা/মহানগর এলাকার একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধিকে সদস্য থাকবেন। কমিটির সদস্য সচিব থাকবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)।

একইভাবে উপজেলা কমিটিতে সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হলে তিনি নিজে এই কমিটির সভাপতি হবেন। সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা না হলে তার মনোনীত একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি কমিটির সভাপতি হবেন। তবে সংসদ সদস্য কমিটির সদস্য থাকবেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং তার মনোনীত প্রতিনিধির বাইরে উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বা তার মনোনীত একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি সদস্য থাকবেন। এই কমিটিতে সদস্য সচিব থাকবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, যাচাই-বাছাইয়ের আওতাধীন কোনও মুক্তিযোদ্ধা/প্রতিনিধি এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না। আর যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য ছাড়া অন্য কেউ হলে তা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মনোনীত হতে হবে। এই কমিটি এর আগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের পাঠানো মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তথ্যাবলী মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা ২০১৬ অনুসরণ করে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করবে। কোনও কারণে কোনও কমিটির সভাপতি অনুপস্থিত থাকলে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সদস্য সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির সদস্য সংখ্যার অধিকাংশের উপস্থিতিতে কমিটির কোরাম সম্পন্ন হয়েছে বিবেচনা করে কমিটি কাজ করবে। কোনও কারণ দর্শানো ছাড়াই কর্তৃপক্ষ যেকোনও কমিটির আংশিক বাতিল বা সংশোধন করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।

কমিটির কার্যপরিধিতে আরও বলা হয়, যাচাই-বাছাই কমিটিকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ঘোষিত তারিখ ও স্থানে (সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা/জেলা প্রশাসকের কার্যালয়) যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করতে হবে। কমিটিগুলো ‘মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা- ২০১৬’ অনুযায়ী যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে প্রতিবেদন পাঠাবে এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলা নোটিশ বোর্ডে একটি কপি টাঙিয়ে দেবে।

নিজস্ব প্রতিনিধি