বাংলাদেশের ক্ষতি হলে টিপাইমুখ বাঁধ হতে দেয়া হবে না: সিলেটের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের ক্ষতি হলে টিপাইমুখ বাঁধ হতে দেয়া হবে না: সিলেটের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

জালালউদ্দিন সাগর, এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টিপাইমুখ নিয়ে ইতোমধ্যে ভারতকে বলে দিয়েছি, বাংলাদেশের ক্ষতি হলে বাঁধ হতে দেয়া হবে না। এ নিয়ে আরো ব্যাপক গবেষণা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ১৪ দলের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।  আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি হত্যা আর লুন্ঠনের রাজনীতি। আর আওযামী লীগ সব সময় চেয়েছে শান্তি, উন্নয়ন। ইতোমধ্যে অনেকগুলো কাজ হয়েছে, প্রক্রিয়াধীন আরো অনেক গুলো কাজ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে সাড়ে ৪ লাখ মানুষের সরকারি চাকরি দিয়েছে। ৬৮ লাখ বেকারের কর্মসংস্থান করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ৩ বছরে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করেছি। ওসমানী বিমানবন্দরের রিফুয়েলিং স্টেশন করে সরকার আবার সিলেট-লন্ডন বিমান চালু করবে। আওয়ামী লীগ জনগণের উন্নয়নে কাজ করে, আর বিএনপি বোমা গ্রেনেড সন্ত্রাসা খুন এছাড়া কিছুই করে না। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে বিদ্যুৎ দেয়নি, দিয়েছিল দুর্নীতি। চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের কাজ চলছে। তাদের বাচ্চাদের শিক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। চা-শ্রমিকের মজুরি আমরা বৃদ্ধির করেছি। ইতোমধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রত্যেক ডিভিশনে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করবো। সিলেটে একটি স্পেশাল ইকোমোকি জোন হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে জামানত ছাড়া এক লাখ টাকা ঋণ নেয়ার ব্যবস্থা সরকার করে দিয়েছি। প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ব্যাংক করে দেয়া প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রীর ছেলে মানি লন্ডারিং আইনে ধরা খেয়েছে। এখন আর লজ্জা-শরমের বালাই নেই। বিএনপির নেত্রী চোর। চোরের মার বড় গলা।  তিনি বলেন, সীমান্তে অপদখলীয় জমি চিহ্নিত করেছি। আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা ট্রাইব্যুনালে মিয়ানমারের সঙ্গে জয়ী হয়েছি। ১ লাখ ১১ হাজার মাইল সমুদ্রসীমা জয় করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা -সিলেট মহাসড়ক আওয়ামী লীগ সরকার করেছে। সিলেটে আওয়ামী লীগ সরকারের ওয়াদা ছিল সারকারখানা হবে, তা হয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জে ৯০ মেগাওয়াট, সিলেটে ১৫০ মেগাওয়াট বিদুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন হয়েছে। ইতোমধ্যে সিলেট নগর ভবনের কাজ শুরু হয়েছে। পাসপোর্ট অফিসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে, শিক্ষাবোর্ড উদ্বোধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির সময় সিলেটে বোমা হামলা হয়েছে, মেয়র কামরানের উপর বোমা মারা হয়েছে, ব্রিটিশ হাইকমিশনারের উপর গ্রেনেড হামলা হয়েছে,  মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীর বাসায় বোমা হামলা করা হয়েছে। ২০০৫ সালে ২৭ জানুয়ারি কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। বিএনপির ক্যাডারা আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে এই সিলেটে। তিনি বলেন, যারা পরাজিত শক্তির কাছ থেকে টাকা খেয়েছে, তাদের হাতে দেশ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। তিনি আরো বলেন, সিলেটের সার্বিক উন্নয়নে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যা কাজ করেছে কোনো সরকার তা আর করেনি।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ আগামীতে ক্ষমতায় গেলে সিলেটে ইঞ্জিয়িরারিং কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে।

চৌদ্দদলের বিশাল এ জনসভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র বদরম্নদ্দিন আহমেদ কামরান। মহাসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, শিক্ষামন্ত্রী নূরম্নল ইসলাম নাহিদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মান্নান এমপি, জেবুন্নেসা হক এমপি, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকান্দর আলী, মৌলভীবাজার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নেসার আহমেদ, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুকুট, জাসদ সিলেট জেলা সভাপতি কলন্দর আলী প্রমুখ।

নিজস্ব প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।