এপ্রিল ফুলের আদ্যেপান্ত

এপ্রিল ফুলের আদ্যেপান্ত

জবরুল আলম সুমনঃ গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডারের চতুর্থ মাসের বা এপ্রিলের পহেলা তারিখকে কেন্দ্র করে বিশ্ববাসী একে অন্যেকে বিভিন্ন ভাবে বোকা বানিয়ে যে হাস্যরস সৃষ্টির সংস্কৃতি চালু করেছিলো কালের পরিক্রমায় আজ তা এপ্রিল ফুল হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। এপ্রিল ফুলের সংস্কৃতি চালু নিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে ভিন্ন ভিন্ন মত ও যুক্তি চালু আছে। বিভিন্ন ইন্টারনেট ও বিভিন্ন সূত্র ঘেঁটে এপ্রিল ফুল নিয়ে যেসব তথ্য আমি বের করেছি তার কিছু অংশ আজ আমি পরিবেশন করছি। প্রাচীনকালে জনপ্রিয় উৎসবসমূহ পালিত হত বসন্তকালীন বিষূব সময়ে (Vernal Equinox), অর্থাৎ যে সময়ে দিনরাত প্রায় সমান থাকে। সময়টি হল ২১শে মার্চ থেকে ২৩শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ঋতু পরিবর্তনের প্রান্তিক সময় ২৫ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল (অর্থাৎ শীতের শেষে বা বসন্তের শুরুতে) পুরাতন জুলিয়ান (Julian) ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গোটা ইউরোপে সপ্তাহব্যাপী উৎসব উদ্দীপনা চলতো এর বাইরে মধ্যযুগে মার্চের ২৫ তারিখে মহাসমারোহে নবান্ন উৎসব পালিত হতো সারা ইউরোপ জুড়ে। রোমানদের মতো হিন্দুরাও নতুন বছরের শুরু এপ্রিলের ১ তারিখ অথবা এর কাছা-কাছি একদিন পঞ্জিকা অনুযায়ী পালন করত। আঠারো শতকে এপ্রিল ফুল বর্তমান রূপ ধারন করার আগ পর্যন্ত গ্রেট বৃটেনে সাধারন মানুষদের ঐতিহ্যবাহী মেলা বসত প্রতি বছরের পহেলা এপ্রিলে । স্কটল্যান্ডে এই দিনটিকে বলা হত “কোকিল শিকারের দিন” (Hunting the Gowk or Cuckoo)। এপ্রিল ফুল নতুন রূপে জন্মলাভের পর এর নামকরন করা হয় এপ্রিল-কোকিল (April-Gowks)। পূরা কাহিনীর সাথে এই দিনের যোগসূত্র স্থাপন করতে গিয়ে ১৪০০ খৃষ্টাব্দের চোসার (Chaucer)-এর The Nun’s Priest’s Tale গল্পের দুই বোকার ৩২ দিনের কাহিনী (Thirty days and two) চলে আসে আর ৩২ দিনের শুরুটি হল মার্চের ১লা তারিখ, অর্থাৎ শেষদিনটি হলো ১লা এপ্রিল।

বাংলাদেশ তথা মুসলিম বিশ্বের কাছে এপ্রিল ফুল এক বেদনায়ক ও নিষ্ঠুর দিনের নাম। কিছু কিছু মুসলিম এপ্রিল ফুলকে নিছক হাস্য ও কৌতুকের একটা দিন হিসেবে বিবেচনা করলেও বেশির ভাগ মুসলিম এপ্রিল ফুলকে ইতিহাসের সবচে বর্বর ও নির্মম একটা দিন হিসেবে বিবেচিত করে থাকেন। বিভিন্ন সূত্র ও ইতিহাস ঘেটে জানা যায় যে তৎকালীন ইউরোপীয় দেশ স্পেনে মুসলিম সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ এর নেতৃত্বে ৭১১ খৃষ্টাব্দে ইসলামি পতাকা উড্ডীন হয় এবং মুসলিম সভ্যতার গোড়পত্তন হয়। সুদীর্ঘ প্রায় আটশ বছর পর্যন্ত সেখানে মুসলমানদের গৌরবময় শাসন বহাল থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে ধীরে ধীরে মুসলিম সম্রাজ্যে ঘুণে ধরতে শুরু করে এবং মুসলিম শাসকরাও ভোগ বিলাসে গা ভাসিয়ে দিয়ে ইসলাম থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। ফলে মুসলিম দেশগুলোও ধীরে ধীরে মুসলমানদরে হাত ছাড়া হয়ে খৃষ্টানদের দখলে চলে যেতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আসে স্পেনের পালা। মুসলিম শাসনে নেমে আসে পরাজয়ের কাল ছায়া। খৃষ্টান জগত গ্রাস করে নেয় স্পেনের বিজয় পতাকা। গ্রানাডার সর্বশেষ মূরিশ কিং (Moorsih King) হলেন নাসরিদ বংশীয় আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ (Abu Abdullah Muhammad XII), যাকে স্প্যানিশরা “বোয়াবদিল” নাম দিয়েছিলো। বিলাসীতা আর উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপনে অভ্যস্ত আবু আব্দুল্লাহ হলেন গ্রানাডার তাইফার সুলতান আবুল হাসানের ছেলে। ছেলের ষড়যন্ত্র ও কুচক্রের কারণেই অনেকটা সিরাজুদ্দৌলার মতই বাবা আবুল হাসান পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। মীরজাফরের মত আবু আব্দুল্লাহকে বানানো হয় নামকাওয়াস্তে সুলতান। এই পুতুল সুলতানের কাছেও ১৪৮৯ সালে ফার্দিনান্দ ও ইসাবেলার নিকট থেকে চুড়ান্তরূপে নিঃশর্ত ভাবে আত্মসমর্পনের নির্দেশনা আসে এবং স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় অস্বীকারের ভয়াবহ পরিনতির কথাও, আবু আব্দুল্লাহ তখন কোন উপায়ান্তর না দেখে গ্রানাডাকে সম্পূর্নভাবে হস্তান্তর করতে বাধ্য হন ১৪৯২ সালের ২ জানুয়ারীতে। একটি উদাহরণ পাওয়া যেতে পারে এম.বি সিঞ্জ (M B Synge) তার দ্যা বাল্ডউইন্স প্রজেক্ট (The Baldwin’s Project) প্রকাশিত “সাহসী মানুষদের সাহসী কান্ড (Brave Men and Brave Deeds)” নামক প্রবন্ধে। তিনি লিখেছেন, “December had nearly passed away. The famine became extreme, and Boabdil determined to surrender the city on the second of January (ডিসেম্বর শেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। দূর্ভিক্ষ চরম আকার ধারণ করেছে। আর বোয়াবদিল গ্রানাডা আত্মসমর্পনের সিদ্ধান্ত নিলেন ২রা জানুয়ারী)”। স্পেন থেকে মুসলমানদেরকে ১৪৯২ সালেই বের করে দেয়া হয়নি। আমীর আবু-আব্দুল্লাহর সাথে ইসাবেলা আর ফার্দিনান্দের যে চুক্তি হয়েছিল তাতে গ্রানাডার মুসলমানদের পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী কালে (১৫০৮ সালে) ইনকুইজিশন চালু করা হলে মুসলমানদের হয় ক্যাথলিক নয়তো স্পেন ছাড়ার পছন্দ দেয়া হয়েছিল। যারা স্পেন ছাড়েনি তারা ক্যাথলিক ছদ্মবেশে মুসলিমই থেকে যান, খৃষ্টানরাও জানত তারা মুসলমান। আর এদেরকেই তারা মরিস্কো উপাধি দেয়। মরিস্কোদের পুরোপুরি স্পেন থেকে বহিষ্কার করা হয় ১৬০৯ থকে ১৬১৪ সালের মধ্যে। এটাও করা হয়েছিল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা হারানো মরিস্কোদের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিদ্রোহ করার পর। এই ইতিহাসের পাশা পাশি আরো একটা প্রচলিত ইতিহাস চালু আছে যে স্পেন থেকে মুসলিমদেরকে পুরোপুরি নিধন করার জন্য খৃষ্টান রাজা ফার্দিনান্দ বিয়ে করেন পর্তুগীজ রানী ইসাবেলাকে। যার ফলে মুসলিম বিরোধী দুই বৃহৎ খৃষ্টান শক্তি সম্মিলিত শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। রানী ইসাবেলা ও রাজা ফার্দিনান্দ খুঁজতে থাকে স্পেন দখলের মোক্ষম সুযোগ। পরবর্তীতে মুসলিম সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্রস্থল গ্রানাডার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। একপর্যায়ে মুসলমানদের অসতর্কতার সুযোগে খৃষ্টান বাহিনী ঘিরে ফেলে গ্রানাডার তিন দিক । এক মাত্র মহাসমুদ্রই বাকী থাকে মুসলমানদের বাঁচার পথ। অবরুদ্ধ মুসলমানগণ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। মুসলমানদের এই অসহায় অবস্থায় রাজা ফার্দিনান্দ প্রতারণার আশ্রয় নেন। ১৪৯২ সালের ১লা এপ্রিলে তিনি দেশব্যাপী ঘোষণা করে দেন – “যারা অস্ত্র ত্যাগ করে মসজিদগুলোতে আশ্রয় নেবে এবং সমুদ্র পাড়ে রক্ষিত নৌযানগুলোতে আরোহণ করবে তাদেরকে সবরকমের নিরাপত্তা দেওয়া হবে”। এমন বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে মুসলমানগণ যেন আশার আলো খুঁজে পায়। সরল মনে বিশ্বাস করে মুসলমানগন মসজিদ ও নৌযানগুলোতে আশ্রয় গ্রহণ করে। কিন্তু রাজা ফার্দিনান্দ তার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তার বাহিনীকে নির্দেশ দেন মসজিদগুলোতে তালা লাগিয়ে দিতে এবং মাঝ দরিয়ায় ভাসিয়ে দিতে নৌযানগুলোকে। এরপর বিশ্ব মানবতাকে পদদলিত করে রাজা ফার্দিনান্দ আগুন লাগিয়ে দেয় মসজিদগুলোর চার পাশে এবং মধ্যসমুদ্রে ডুবিয়ে দেয় নৌযানগুলোকে। ফলে অগ্নিদগ্ধ ও পানিতে হাবুডুবু খাওয়া লক্ষ লক্ষ নারী পুরুষ আর নিষ্পাপ শিশুর আর্ত-চিৎকারে ভারি হয়ে উঠে স্পেনের আকাশ বাতাশ। মুহুর্তের মধ্যে নির্মমভাবে নিঃশেষ হয়ে যায় সাত লক্ষ মুসলমানের তাজা প্রাণ। আর এই ঘটনার মধ্য দিয়ে পতন ঘটে স্পেনের আটশ বছরের মুসলিম শাসনের। মুসলিম নারী পুরুষকে ধোঁকা দেয়ার এই দিনকে স্মরণীয় করে রাখতেই তৎকালীন খৃষ্টান সম্প্রদায় প্রতি বছরের এপ্রিলের পহেলা তারিখকে বোকা দিবস বা এপ্রিল ফুল হিসেবে পালন করে আসছে। অবশ্য ইউরোপীয় ইতিহাসে এই বর্বরতম ঘটনার কোন হদিস পাওয়া বা দলিল পাওয়া যায়নি।

ইউরোপে সম্ভবত এপ্রিল ফুলের বিস্তৃতি ঘটে প্রথমে ফ্রেঞ্চ জাতির মধ্যে। ফ্রেঞ্চরা ১৫০৮ সাল এবং ডাচরা ১৫৩৯ সাল থেকে এপ্রিল মাসের প্রথম দিনকে কৌতুকের দিন বা বছরের সবচেয়ে হালকা দিন হিসেবে পালন করা শুরু করে। ফ্রান্সই হলো প্রথম দেশ যেদেশে সরকারীভাবে নবম চার্লস (Charles IX) ১৫৬৪ সালে এক ফরমানের মাধ্যমে ১লা জানুয়ারীকে নববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন । অর্থাৎ তিনি এটি করেন ১৫৮২ সালে ইতালীয়ান পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরী (Pope Gregory XII) প্রবর্তিত গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার (যেটিকে আমরা বর্তমানে ভুল করে ইংলিশ ক্যালেন্ডার বলি) হিসেবে প্রচলন হওয়ারও আগে। এরই সাথে ১লা এপ্রিলে বন্ধু-বান্ধবদের উপহার দেয়া নেয়ার প্রথাটি বদল হয়ে চলে যায় ১লা জানুয়ারী বা নিউ ইয়ার উদযাপনের প্রাক্কালে। কারণ তখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে জুলিয়ীও ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নিউ ইয়ার পালিত হত ১লা এপ্রিলে। অনেকেই এই পরিবর্তনকে মেনে নিতে না পেরে এদিনই অর্থাৎ ১লা এপ্রিলেই তাদের পুরোনো প্রথাসমূহ চালিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু বিপরীত ১লা জানুয়ারীর পক্ষের লোকজন এদেরকে ফাকি দিতে ১লা এপ্রিলে ভূয়া উপহার পাঠানোর প্রথাটি চালু করে দেয়।

ফ্রান্সে কাউকে বোকা বানালে বলা হত এপ্রিল মাছ (April fish), ফ্রেঞ্চ ভাষায় poisson d’avril. এরকম অদ্ভূত নামকরনের ব্যাখায় বলা হয়, রাশিচক্র অনুযায়ী স্বর্গের কাল্পিক রেখা অতিক্রম করাকালে এপ্রিলে সূর্যকে মাছের মত দেখায়। এইদিনে তারা ছুটি কাটাত এবং মরা মাছ এনে তাদের বন্ধুদের পেছনে সেটে দিয়ে মজা করত। এখন মরা মাছের বদলে ছোটরা আসল মাছের স্টিকি কাগজ বন্ধুদের শার্টের পেছনে গেঁথে দেয়। ক্যান্ডি শপ ও বেকারীগুলোও মাছ আকৃতির মিষ্টি পরিবেশন করে এইদিন স্মরণ করে।

ডাচদের পহেলা এপ্রিল পালন করার আরো কিছু কারণ আছে। স্পেনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ (King Philip II) ১৫৭২ সালে নেদারল্যান্ড শাসন করতেন। যারা তার শাসন অমান্য করেছিল তারা নিজেদেরকে গুইযেন (ডাচে Geuzen ও ফ্রেঞ্চে Queux বলা হয়, যার অর্থ ভিখারী) বলে পরিচয় দিত । ১৫৭২ সালের এপ্রিলের ১ তারিখে গুইযেন বা বিদ্রোহীরা উপকূলীয় ছোট শহর ডেন ব্রিয়েল (Den Briel) করায়ত্ব করে ফেলে। তাদের এই সফলতায় বিদ্রোহের দাবানল দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। শেষমেষ স্প্যানিশ সেনাপ্রধান বা দ্যা ডিউক অব অ্যালবা (The Duke of Alba) প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন। ‘ব্রিয়েল’ হল ডাচ শব্দ, যার অর্থ কাঁচ। ১৯৭২ সালের ১ এপ্রিল স্মরণ ডাচরা বিদ্রুপ করে স্প্যানিশদের ‘অ্যালবা কাঁচ হারিয়েছে (Alba lost glasses)’ বলে পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করে থাকে। উল্লেখ্য, অ্যালবা হল স্পেনের শহরের নাম যেখানে দ্যা ডিউক অব অ্যালবার সদর দপ্তর ছিল।

এপ্রিল ফুলের আরেকটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের প্রফেসর জোসেফ বসকিন (Joseph Boskin)। তিনি বলেছেন এই প্রথাটির শুরু হয় রোমান সম্রাট কনস্ট্যান্টাইনের (২৮৮-৩৩৭ খ্রীঃ) শাসনামলে। হাসি-ঠাট্টা নিয়ে মেতে থাকে এমন একদল বোকা গোপাল ভাঁড়েরা সম্রাটকে কৌতুক করে বলে, তারা রাজার চেয়ে ভালো ভাবে দেশ চালাতে পারবে। রাজা মহোদয় বেশ পুলকিত হলেন। রাজা গোপাল ভাড়দের সর্দার কুগেল (Kugel)কে একদিনের জন্য বাদশাহ বানিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দিলেন। আর কুগেল সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যময় আইন জারি করে দিল, প্রতিবছরের এইদিনে সবাই মিলে তামাশা করবে। প্রফেসর বসকিন আরো বলেন, প্রাচীন ওই সময়ের মারাত্মক দিনগুলোতে রাজাদের দরবারে কিন্তু বোকারূপীরাই ছিল প্রকৃত জ্ঞানী। তারা মজা বা হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে অনেক কাজ কৌশলে হাসিল করে নিত বা জ্ঞানের কথা রসালোভাবে চারদিকে ছড়িয়ে দিত।

পাশ্চাত্যের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে কাউকে বিভিন্নভাবে বোকা বানানোর প্রথা চালু রয়েছে। রোমানদের হিলারিয়া (Hilaria) উৎসব এর মধ্যে অন্যতম। তারা মার্চের ২৫ তারিখে আট্টিসের (Attis) পূনরুত্থান নিয়ে এইদিনে হালকামি করত, ইহুদীরা করত পুরিম (Purim) উপলক্ষ্যে। হিন্দুরাও হোলি (Holi) উৎসব এইদিনের আশেপাশে করে থাকে। ইসলামে মিথ্যা কথা বলে ঠকানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। যেমন, নবী (সঃ)বলেছেন, “যারা ধোঁকাবাজি করে তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।” তবে ইসলামে সত্য কথা বলেও হাস্যরস করা বা বিভিন্ন রকমের জ্ঞানোদ্দীপক কৌতুকের প্রচলন রয়েছে। মুহম্মদ (সাঃ) এবং তার সংগীসহ ইসলামী ব্যক্তিত্বের অনেকের জীবনীতেই প্রচুর রসালো গল্পের উদাহরন ইতিহাসে পাওয়া যায়।

১৯৮৩ সালে বার্তা সংস্থা এপি পরিবেশিত বসকিনের এই ব্যাখ্যাটি অনেক কাগজে নিবন্ধাকারে প্রকাশিত হয়। বসকিন মূলত. আগের সব ব্যাখ্যাকে উড়িয়ে দিয়েছেন। আর্টিকেলটি ছাপানোর আগে এপি দুই সপ্তাহ ধরে ভেবেছে তারা নিজেরাই এপ্রিল ফুল বোকামীর শিকার হচ্ছে না তো!

ইন্টারনেট অবলম্বনে,জবরুল আলম সুমন,সিলেট।

ফিচার সম্পাদক