জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১০ প্রদান।।সেরা অভিনেতা শাকিব ও অভিনেত্রী পূর্ণিমা
মোক্তার হোসেন,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১০ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন আনোয়ার হোসেন। প্রখ্যাত এ অভিনেতার নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নিজের আসন থেকে উঠে গিয়ে তাকে সম্মাননা প্রদান করেন। হুইল চেয়ারে বসা আনোয়ার হোসেনের জন্য শুভকামনা জানান প্রধানমন্ত্রী। পুরস্কার পেয়ে আনোয়ার হোসেন তার প্রতিত্রিক্রয়ায় বলেন, ‘কিছুদিন আগেও আমি চলচ্চিত্র নিয়ে হতাশ ছিলাম। কিন্তু এবার সরকার আমাকে যে সম্মান জানালো। তাতে আমি খুবই আনন্দিত।’
সেরা ছবি ‘গহীনে শব্দ’ নির্বাচিত হয়। এর প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ১০০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। আর ইমপ্রেস আরও ভালো চলচ্চিত্র উপহার দেবে।’ সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পান আলমগীর। তিনি বলেন, ‘৩ এপ্রিল আমার জন্মদিন। বিশেষ দিনে বিশেষ সম্মান পেয়ে আমি খুবই অভিভূত।’
সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রী হিসেবে শাকিব খান ও পূর্ণিমা প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলো। পূর্ণিমা পুরস্কার পাওয়ার পর নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার জীবনের সেরা অর্জন এটি। আমি এ আনন্দ বলে প্রকাশ করতে পারছি না। যে ছবির জন্য পুরস্কার পেয়েছি সেই ছবির পরিচালক ও প্রযোজককে ধন্যবাদ জানাই।’
শাকিব খান বলেন, ‘জীবনের সেরা একটি ইচ্ছা পূরণ হলো। দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার নেওয়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। আমি খুবই খুশি।’
এরপর একে একে পুরস্কাপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। সেরা সুরকার হিসেবে পুরস্কার পান শেখ সাদী খান, সেরা সঙ্গীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম। টানা তৃতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান কবীর বকুল। সেরা গীতিকারের পুরস্কার ছিনিয়ে নেন তিনি।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান চলচ্চিত্র তারকাদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। তারকাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আলমগীর, রুনা লায়লা, সুভাষ দত্ত, কবরী, রোজিনা, অরুনা বিশ্বাস, দিতি প্রমুখ। এতে আসা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা ৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ঘোষণা করায় সরকারকে সাধুবাদ জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে, চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে শিগগির ঘোষণা করার অঙ্গীকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
পুরস্কার প্রদান শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রথমেই চলচ্চিত্র নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর বিটিভির শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন। এরপর গান গেয়ে শোনান রুনা লায়লা। এরপর সুবীর নন্দী, সামিনা চৌধুরী ও এসআই টুটুল সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন রিয়াজ ও মৌসুমী। তবে চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ফারুক, রাজ্জাক, সোহেল রানা, সুচন্দা, ববিতা, চম্পা, আমজাদ হোসেন, চাষী নজরুল ইসলামের মতো চলচ্চিত্র ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন না।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১০-এর বিজয়ী তালিকা
শ্রেষ্ঠ ছবি ‘গহীনে শব্দ’, শ্রেষ্ঠ পরিচালক খালিদ মাহমুদ মিঠু [গহীনে শব্দ], শ্রেষ্ঠ অভিনেতা শাকিব খান [ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না], শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পূর্ণিমা [ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না], শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা আলমগীর [জীবন মরণের সাথী], শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী রোমানা (ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না), শ্রেষ্ঠ খল চরিত্র মিজু আহমেদ (অবুঝ বউ), শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা আফজাল শরীফ (নিঃশ্বাস আমার তুমি), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার নার্গিস আক্তার (অবুঝ বউ), শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার জাকির হোসেন রাজু (ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা জাকির হোসেন রাজু (ভালোবাসলেই ঘর বাধা যায় না), শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম (অবুঝ বউ), শ্রেষ্ঠ সুরকার শেখ সাদী খান (ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না), শ্রেষ্ঠ গীতিকার কবির বকুল (নিঃশ্বাস আমার তুমি), শ্রেষ্ঠ গায়ক এসআই টুটুল (ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না), শ্রেষ্ঠ গায়িকা শাম্মী আখতার (ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক হাসান আহমেদ (গহীনে শব্দ), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক মজিবুর রহমান দুলু (অবুঝ বউ), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক কাজী সেলিম (গহীনে শব্দ), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক মহিউদ্দিন ফারুক (অবুঝ বউ), শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান আবদুর রহমান (মনের মানুষ) এবং শ্রেষ্ঠ পোশাক বিবি রাসেল (মনের মানুষ), শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী দীঘি (চাচ্চু আমার চাচ্চু), শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক ইমদাদুল হক খোকন [মোঘল-এ-আজম]।