১০ ট্রাক অস্ত্র আমদানিতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলছে!

১০ ট্রাক অস্ত্র আমদানিতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলছে!

বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ অস্ত্র ও গোলাবারুদ খালাসের সময় সেখানে থাকা জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই সদস্যদের গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।

২২ মে (মঙ্গলবার) বিকালে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় করা দুই মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের তৎকালীন কমিশনার এস এম সাব্বির আলী এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক এস এম মজিবুর রহমানের আদালতে বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা সাব্বির আলী ১১তম সাক্ষী হিসেবে বিকালে জবানবন্দি দেন।

বিকাল সাড়ে ৫টায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার সকাল পর্যন্ত আদালত মুলতবি করেন বিচারক। ওইদিন সকালে সাব্বির আলী সাক্ষী হিসেবে তার অসমাপ্ত জবানবন্দি দেবেন। জবানবন্দিতে সাব্বির আলী বলেন, “তৎকালীন ডিসি পোর্ট আব্দুল্লাহ হেল বাকী টেলিফোনে জানায় সিইউএফএল জেটি ঘাটে অবৈধ মালামালের বাক্স খুলে অস্ত্র-গোলাবারুদ পাওয়া গেছে। “ওই সময় এনএসআইয়ের মেজর লিয়াকত পরিচয় দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বাকীকে বলেন- ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মালামাল খালাস হচ্ছে। আপনি কেন ধরছেন? খালাসে সহায়তা করুন।”

পরে করণীয় জানতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে ফোন দিয়েছিলেন বলেও জানান সাব্বির। তার ভাষ্য অনুযায়ী, “বিষয়টি জানতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে ফোন দিই এবং তিনি (বাবর) ডিআইজি (এসবি) শামসুল ইসলামের কাছ থেকে জেনেছেন উল্লেখ করে করণীয় সম্পর্কে তাকে নির্দেশ দেয়ার কথা জানান।”

“স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এনএসআইয়ের লোকজনকে গ্রেপ্তার না করে অস্ত্র-গোলাবারুদ হেফাজতে নিতে বলেন এবং শিগগির চট্টগ্রামে আসছেন বলে জানান।”

ওই ফোনালাপের পর ডিসি পোর্ট বাকীকে অস্ত্র-গোলাবারুদ জব্দ করে দামপাড়া পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন বলেও জানান তৎকালীন কমিশনার সাব্বির।

এর আগে মামলার দশম সাক্ষী পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হেল বাকীকে বিকাল চারটা পর্যন্ত জেরা করেন আসামিপক্ষের চার আইনজীবী। জেরায় সিইউএফএল এর সাবেক এমডি মোহসিন উদ্দিন তালুকদারের আইনজীবী ফজলুল করিম ভূইয়ার এক প্রশ্নের জবাবে বাকী বলেন, “সিইউএফএল জেটি ঘাটে অস্ত্র আটকের সময় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের এমডি বা জিএম অথবা অন্য কারও কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাইনি।”

এছাড়া বাকীকে বাবরের আইনজীবী মাহবুব আহমেদ, আবদুস সোবহান তরফদার ও সিইউএফএল’র সাবেক জিএম এনামুল হকের আইনজীবী মাহমুদুর রহমান জেরা করেন।

এর আগে মতিউর রহমান নিজামী, লুৎফুজ্জামান বাবর, এনএসআই’র সাবেক দুই প্রধানসহ ১০ আসামিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল গভীর রাতে সিইউএফএল এর সংরক্ষিত জেটিঘাটে ১০ ট্রাক সমপিরমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অস্ত্র ও চোরাচালান আইনে দুটি পৃথক মামলা হয় কর্ণফুলী থানায়।

বিশেষ প্রতিনিধি