লোডশেডিং শব্দটি যেন হারিয়ে যায়…

লোডশেডিং শব্দটি যেন হারিয়ে যায়…

মোমিন মেহেদীঃ

মানুষ মানুষের জন্য/ জীবন জীবনের জন্য/ একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না বন্ধু…

চিরমত্মন এই অনন্য এই গানটিকে অবশেষে একটু ঘুরিয়েই বলতে হচ্ছে যে, লোডশেডিং বিহীন একটি দিন কখনো কি পেতে পারি না…/ ও বন্ধু?

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার যে হাল তাতে করে এই গানটিকে পরিবর্তন ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের আর কোন পথ খোলা পেলাম না। যে কারনে করতেই হলো এই কাজ। যে কাজটি মূলত করার কথা ছিল যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবিরেরর তথাকথিত গানের গুরম্ন মতিউর রহমান মলিস্নকের। সারা জীবন মলিস্নক জামায়াত আর শিবিরের জন্য গান লিখেছে, গেয়েছে আবার সুরও করেছে। তবে, এই সুর, এই কথা এই কন্ঠ পুরোটাই ছিল নকল। ভারত আর পাকিসত্মানের গানের পাশাপাশি কলকাতা ও বাংলাদেশের অতি পরিচিত গানগুলোকে নকল করে বেচারা জামায়াতপ্রিয় শিবিরপ্রিয় করে তুলতো। কেননা, মৌলিক গান নাকি কেউ শুনতে চায় না।

যাইহোক, মূল প্রসঙ্গে আসি। বলছিলাম বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কথা। যে ব্যবস্থার লেজে গোবরে অবস্থার কারনে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ সস্থা দরের পানির মত ভেসে যাচ্ছে বুড়ি গঙ্গায়। বিদ্যুতের জন্য যখন উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে জীবনের চলাফেরা ঠিক তখন মানুষ গেয়ে উঠছে প্রতিবাদের গান, আন্দোলনের গান।

যদিও জীবনের মান রাখতে সম্প্রতি সরকার সোচ্চার হচ্ছে। সোচ্চার হচ্ছে আগামীতে ÿমতায় আবার আসার প্রত্যয়ে। পথ তৈর করছে অতি যত্নের সাথে। আর তারই সূত্র ধরে সম্প্রতি একদিনের জরিপে দেখা যায় যে, ৬২৫০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পিক আওয়ারে জেনারেশন ক্ষমতা ছিল ৬৩১০ মেগাওয়াট। পবিত্র এই রমজানে সরকারের আমত্মরিক প্রচেষ্টার ফলে লোডশেডিং স্বাভাবিকপর্যায়ে চলে এসেছে বলে বলা হচ্ছে । রমজানের কয়েকদিন আগেও দৈনিক ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস ওঠার পর রমজানে বিদ্যুৎ পরিসি’তি নিয়ে যখন চলছিল নানা জল্পনা-কল্পনা ঠিক সে সময় জ্বালানি উপদেষ্টা পিডিবির এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, রমজানে আধ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হবে না। তখন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই সমালোচনামুখর হলেও উপদেষ্টা ঠিকই প্রমাণ করেছেন। এর অংশ হিসেবে প্রথম রমজানেই সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে ৬ হাজার ১০২ মেগাওয়াট। ঐদিন চাহিদাও ছিল একই। ফলে কোনো লোডশেডিং হয়নি। গতকাল বুধবার ২৫ জুলাই দিনে ৬ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পিক আওয়ারে উৎপাদন হয়েছেও একই।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংশিস্নষ্ট একটি সূত্র জানায়, রমজানে ঠান্ডা ও বৃষ্টিজনিত আবহাওয়া বিদ্যমান থাকায় অন্য সময়ের থেকে এখন ১ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা কম রয়েছে। তাছাড়া সরকার কর্তৃক অনুরোধের প্রেক্ষিতে পিক আওয়ারে শিল্প কল-কারখানা বন্ধ রাখায় চাহিদা আরও কমেছে। রমজানের ১০ দিন আগেও বিদ্যুতের চাহিদা ছিল দৈনিক ৭ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সাকুল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে সর্বো’’চ ৬ হাজার মেগাওয়াট। ফলে ঘাটতি থেকেছে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াটের মতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন আগের মতোই রয়েছে। তবে চাহিদা কম থাকার কারণে লোডশেডিং কম হ’’’ছ। রমজানে গরম শুর‘‘ হলে বিদ্যুতের চাহিদা আবার বাড়বে তখন লোডশেডিংও আগের মতো বেড়ে যাবে। সরকার তেল দিয়ে সাময়িক বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করলেও প্রকৃত অর্থে এটা কোনো সমাধান নয়। সে কারণে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে হবে। এখন দেখা যা’’’ছ বিদ্যুতের লোডশেডিং কমেছে। তবে এটা বৃষ্টি ও ঠান্ডা পড়ার কারণে। ঠান্ডা পড়লে ১ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা কমে আসে। কিম’ রমজানে গরম পড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। তবে আমার মনে হয় সরকার এ বিশেষ মাসে তেলের ব্যবহার বাড়িয়ে বিদ্যুৎ বেশি উৎপাদন করে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করবে। তবে শুধু তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমত উলস্নাহ বলেন, বৃষ্টি ও ঠান্ডা পড়ায় কয়েকদিন ধরে ঢাকায় লোডশেডিং কম থাকলেও মফস্বল শহর ও গ্রামে কোনো কোনো এলাকায় এখনও ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং হ’’’ছ। রমজানে গরম পড়ার বেশ আশঙ্কা রয়েছে। অবশ্য সরকার এ সময়ে বেশি তেল দিয়ে রেন্টাল, কুইক রেন্টালগুলো চালু রেখে পরিসি’তি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করবে। তবে এ ক্ষেত্রেও সরকার তেমন কোনো সফলতা দেখাতে পারবে না। কেননা, তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো গড়ে ৬০ থেকে ৭০ ভাগের বেশি চালানোর নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। আর রমজানে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ৮০ ভাগ চালানোর বিষয়টি ধরে নিলেও এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে অতিরিক্ত চাপের ফলে যেকোনো সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে মারাত্মক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে যেতে পারে। পিডিবির চেয়ারম্যান এএসএম আলমগীর কবীর জানান, গরম বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদ্যুতিক পাখা ও এয়ারকন্ডিশনারের ব্যবহারও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। তখন স্বাভাবিক চাহিদা থেকে দৈনিক ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। তাছাড়া প্রচন্ড গরমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতাও কিছুটা হ্রাস পায়। সব কিছু মিলে চাহিদার সঙ্গে পালস্না দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব না হওয়ায় লোডশেডিং বেড়ে যায়। তবে বর্তমানের আবহাওয়া চালু থাকলে লোডশেডিং হবে না। রমজানে বিদ্যুৎ পরিসি’তি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা আগেও বলেছি রমজানে তেমন লোডশেডিং হবে না। গরম পড়লেও আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হব। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে তেলের ব্যবহার বাড়িয়ে বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। ফলে রমজানে কোনো লোডশেডিং হবে না। বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, পুরান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো উন্নয়নের কাজ চলছে। এগুলো থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হ’’’ছ। তাছাড়া আমরা তেলের ব্যবহার বাড়িয়ে বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি।  এই উৎপাদন সারা বছর থাকলে, আমাদের কষ্ট লাঘব হলেই কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের পÿÿ সম্ভব হবে ভিশন টুয়েন্টি টুয়েন্টিওয়ান পর্যমত্ম সরকারে থাকা। আর তাই সকল দিক ভুলে নয়; বরং অন্যান্য বিষয়ের প্রতি যত্নের সাথে লÿ্য রেখে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উত্তরণ ঘটালে সরকার থাকবে জনগনের সাথে; জনগন থাকবে বলার আগেই সরকারের সাথে। যা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের বিশেষ প্রয়োজন…

মোমিন মেহেদী : রাজনীতিক ও কমামিষ্ট

www.mominmahadi.com

এসবিডি নিউজ ডেস্ক