গণতন্ত্র ধ্বংস করে কারও কোন খায়েশ পূরণ করতে দেয়া হবে নাঃ প্রধানমন্ত্রী

গণতন্ত্র ধ্বংস করে কারও কোন খায়েশ পূরণ করতে দেয়া হবে নাঃ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ গণতন্ত্র ধ্বংস করে কারও কোন খায়েশ পূরণ করতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অনেকের খায়েশ আছে গাড়িতে পতাকা ওড়ানোর। তা হলে রাজনীতিতে নামতে হবে। নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। ভোটের মাধ্যমে খায়েশ পূরণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল  গণভবনে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল  নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, গণতন্ত্র ধ্বংস হতে দেবো না। আবার ১/১১ অমানিশার অন্ধকার চাই না। তত্ত্বাবধায়ক নামের ওই সরকার ছাত্র, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীদের ওপর কি নির্যাতন-জুলুম চালিয়েছে তা দেশবাসীর জানা আছে।

 

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি চাই। কোন সামপ্রদায়িক সংঘাত চাই না। আমরা অসামপ্রদায়িক নীতিতে বিশ্বাসী। এদেশের সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।  কেউ কোন হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। সকল মানুষ স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করবে-এটাই আমরা চাই। সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি রক্ষা- এটা ইসলামের শিক্ষা।

আগামী নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর সারাদেশে ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন ও কয়েকটি উপনির্বাচন হয়েছে।  কোন নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আগামী নির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।

 

তিনি বলেন, বিএনপির আমলে ইউপি নির্বাচনের সময় প্রায় ২০০ লোক মারা গেছে। আমাদের আমলে কোন লোক মারা যাওয়া তো দূরের কথা কোন প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হয়নি। এটাই গণতন্ত্র। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সেটা প্রমাণ করেছে।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার বানচালে বিরোধী দল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭১ সালে আমরা যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলাম, জাতির জনককে হত্যার পর তাদের দোসর আলবদর-রাজাকার গাড়িতে পতাকা তুলে দেয়া হলো, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী করা হলো। আর তাদের নীতি-আদর্শ নিয়ে  দেশ পরিচালনা করলো। আমরা  সেই স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার শুরু করেছি, তখন বিএনপি’র জ্বালাও পোড়াও শুরু হয়েছে। কারণ তারা যুদ্ধাপরাধীর বিচার চান না।

 

সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের জনগণ কিছু পায়। উত্তরাঞ্চলের  সেই চিরচেনা মঙ্গা দূর হয়েছে। আগে মানুষ ভাতের জন্য আবদার করতো। আর এখন বলে রাস্তাঘাট ও বিদ্যুৎ চাই। সরকারের সাড়ে তিন বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়ে ৬৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। সারের জন্য আর কৃষককে গুলি খেয়ে মরতে হয় না। সারই কৃষককে খুঁজে বেড়ায়।
মতবিনিময় সভায় সংসদ উপনেতা  সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, সতীশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সভায় দলীয় সভাপতি উদ্বোধনী ভাষণের পর দিনাজপুর জেলার সকল উপজেলা ও থানার সভাপতি-সম্পাদকগণ তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

 

রামুর ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে বৌদ্ধ উপাসনালয় ও বসতিতে হামলায় জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকালে  বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটির একটি প্রতিনিধিদল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। ঘটনার পর নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর নেতৃত্বে বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটির প্রতিনিধিদলটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এসময় কমিটির সদস্য সচিব অশোক বড়ুয়া ওই ঘটনায় তাদের পর্যবেক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।  বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটির পাঁচ সদস্যের তদন্ত দল এর আগে ঘটনা তদন্ত করে। হামলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জড়িতদের গ্রেপ্তার করা, ব্যবস্থা  নেয়া- এটা আমরা করবোই। ব্যবস্থা নেবোই। যারা তা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেয়া হবে না। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত উপাসনালয় সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে প্রতিশ্রুতি দেন। আগামী ঈদুল আজহা, দুর্গাপূজাসহ বৌদ্ধ সমপ্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আগে সব ধর্মের মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, তারা  যে খেলা শুরু করেছে, তা তারা অনেকভাবেই করবে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

বিশেষ প্রতিনিধি