দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনৈতিক বন্দীদের প্রতি সংহতি দিবস

দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনৈতিক বন্দীদের প্রতি সংহতি দিবস

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ ১৯৪৮ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার বর্ণ বৈষম্য ও বর্ণ পৃথকীকরণের যে নীতি অনুসরণ করে এসেছিলো তাতে সে দেশের কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ, যারা সে দেশের ব্যাপক সংখ্যা গরিষ্ঠ তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদ উভয়ই এই বর্ণবাদকে জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থি হিসেবে ঘোষণা করে। পরিষদ ১৯৬০ থেকে বর্ণবাদ নীতিকে মানবতার বিবেকের বিরুদ্ধে জঘণ্য আচরোণ হিসেবে অভিহিত করে। সেই থেকে জাতিসংঘ দক্ষিণ অফ্রিকা সরকারের বর্ণবাদ নীতির ঘৃণ্য আচরোণের বিরুদ্ধে সংগ্রামী জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে। একে একে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে জাতিসংঘ বর্ণবাদ বিরোধী অবস্থান সুস্পষ্ট করে। জাতিসংঘের বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে ১৯৬২ সালে সকল সদস্য রষ্ট্রের প্রতি দক্ষিণ অফ্রিকার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান, দক্ষি অফ্রিকার পণ্য বর্জন ও সমরাস্ত্রসহ সকল প্রকার রপ্তানী থেকে বিরত থাকার আহ্বান, বর্ণবাদ নীতি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন, দক্ষিণ অফ্রিকার জন্য জাতিসংঘ ট্রাষ্ট গঠন, আর্ন্তজাতিক বর্ণ বৈষম্য দিবস ঘোষণা, ১৯৭৩ সালে বর্ণবৈষম্য অপরাধ দমন ও শাস্তি সংক্রান্ত আর্ন্তজাতিক চুক্তি গ্রহণ, দক্ষিণ আফ্রিকার পরিচয় পত্র প্রত্যাখ্যান করে এবং যতোক্ষণ পর্যন্ত না সে তার বর্ণবাদ নীতিসমূহ পরিত্যাগ করেছে ততোক্ষণ তাকে জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতাধীন সকল আর্ন্তজাতিক সংগঠনের ও সম্মেলনের বাইরে রাখা ইত্যাদি। জাতিসংঘের এসব পদক্ষেপের ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ঘোষণা করে যে, দক্ষিণ অফ্রিকার নির্যাতিত জনগণ তাদের মুক্তি আন্দোলন এবং বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সংগাম করতে গিয়ে যারা করারুদ্ধ, অন্তরীণ কিংবা নির্বাসিত হয়েছে তাদের প্রতি সাধারণ পরিষদের ও আর্ন্তজাতিক সমাজের একটা বিশেষ দায়িত্ব আছে। বর্ণবাদের দ্রুত বিলোপ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণের মুক্তির লক্ষে বর্ধিত মনোযোগ প্রদান ও প্রয়োজনীয় সকল সম্পদ নিয়োগের সংকল্পও পরিষদ পুনর্ব্যক্ত করে। সাধারণ পরিষদ উপরোক্ত উপলদ্ধির প্রেক্ষাপটে ১৯৭৫ সালে ১১ অক্টোবরকে দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনৈতিক বন্দীদের প্রতি সংহতি দিবস ঘোষণা করে।

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ সম্পাদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কম।

প্রধান সম্পাদক