হরতালের আগের দিনে অগ্নিসংযোগ,বোমা বিস্ফোরণ,সাংবাদিক প্রহার।।হরতালে সর্বাত্মক নিরাপত্তার প্রস্তুতি

হরতালের আগের দিনে অগ্নিসংযোগ,বোমা বিস্ফোরণ,সাংবাদিক প্রহার।।হরতালে সর্বাত্মক নিরাপত্তার প্রস্তুতি

বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24ডট কমঃ নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যেও হরতালের আগের দিন বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। ৫ জানুয়ারী (শনিবার) দুপর থেকে বিকাল পর্যন্ত দুর্বৃত্তরা রমনা-আজিমপুর ও মিরপুর-তেজগাঁও এলাকায় দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনসহ আশপাশে কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। হরতাল সমর্থকরা এ অগ্নিসংযোগের নেপথ্যে আছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন। এদিকে ৬ জানুয়ারী (রোববার) ১৮ দলীয় জোটের হরতালে পিকেটিং রোধে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে।
শনিবার বিকাল সোয়া ৩টার দিকে রমনা থানার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের সামনে গ্লোব ফর্মাসিউটিক্যালসের একটি পিকআপ ভ্যান দাঁড়িয়েছিল। সমস্যা হওয়ায় ড্রাইভার শহিদুল ইসলাম গাড়িটি ঠিক করছিলেন। এ সময় ৫-৬ জনের একদল যুবক কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়িতে পেট্রোল ছিটিয়ে এবং দেশলাই মেরে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে পিকআপ ভ্যানের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। পরে দমকল বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভায়। এর এক ঘণ্টা পর আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আজিমপুর-গাজীপুর রোডের ২৭ নম্বর যাত্রীবহনকারী একটি বাসের মেরামত চলছিল। এ সময় কে বা কারা পেছন দিক থেকে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে বাসটির বিভিন্ন সিট এবং দরজা-জানালায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে কাছে দমকল বাহিনীর অফিস থাকায় ইঞ্জিনে আগুন লাগার আগেই নিভিয়ে ফেলা হয়। বিকাল ৫-১০ মিনিটের দিকে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের বাসভবনের সামনে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে বিকট শব্দে। এর ১০ মিনিট পর ভাষা ইনস্টিটিউটের সামনে কে বা কারা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। কয়েক মিনিট পর রোকেয়া হলসহ আরো দুটি জায়গায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বোমাতঙ্কে ছাত্র-ছাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ নিরাপদ গন্তব্য খুঁজতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ, র‌্যাবসহ সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা বোমার আলামত সংগ্রহ করেন। মহানগর পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, অতীতেও এ ধরনের ঘটনা তদন্তের পর দেখা গেছে- হরতাল সমর্থনকারীরা এর সঙ্গে জড়িত। তারাই ইন্ধন দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। দুটি ঘটনায় পৃথক থানায় মামলা হয়েছে। তিনি আরো জানান, হরতালে পিকেটিং বা নাশকতা রোধে ভ্রাম্যামাণ আদালত মাঠে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজধানীর ৮টি জোনে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আদালত পরিচালিত হবে। কেবলমাত্র আইন ভঙ্গকারীদের দেশের প্রচলিত আইনে আদালত সাজা দেবে। এ কারণে পিকেটিং বা এ ধরনের কর্মকান্ড না করার জন্য মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
সরেজমিন মতিঝিল, পল্টন মোড়, বায়তুল মোকাকরম, প্রেসক্লাব, দৈনিক বাংলা মোড়, কাকরাইলসহ আশপাশে দুপুরে ঘুরে দেখা যায়, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছে আছে। তারা রায়ট কার এবং জলকামান প্রস্তুত রেখেছে। শীর্ষ কর্মকর্তারা আদেশ দিচ্ছেন, টহল দিচ্ছে পুলিশ-র‌্যাবের পিকআপ ভ্যান। প্রধান রাস্তা থেকে গলির মুখ বা ভেতরে তারা সতর্ক অবস্থায় ছিল। অন্যদিনের তুলনায় এসব এলাকায় যানও কম চলাচল করতে দেখা যায়। সন্দেহভাজন লোকজনের গতিবিধি লক্ষ করছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট এই হরতাল আহ্বান করেছে। এ কারণে গত কয়েকদিন ধরে চলছিল রাজনীতিক প্রস্তুতিও। এরই সঙ্গে চলছে পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়।

বিশেষ প্রতিনিধি