নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক,বৈষম্য দূর হোক

নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক,বৈষম্য দূর হোক

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ নারীদের অধিকার নিয়ে কথা বলছেন অনেকে। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে কাজও করছেন অনেকে। প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে শেখ তাসলিমা মুন ফেসবুকে ‘ইভটিজিং বিরোধী একটি ফোরাম’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রবাসে থেকেও বঞ্চিত নারীদের জন্য তিনি যথাসাধ্য কাজ করছেন। আমার সাথে তার ব্যক্তিগত পরিচয় রয়েছে। তাকে একজন বন্ধু হিসেবে আমি কথা দিয়েছিলাম, ফোরামটির সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমি তার পাশে থাকবো। যদিও অজ্ঞাত কারণে,সেটির কার্যক্রম শীথিল। আজ ৮ মার্চ। আর্ন্তজাতিক নারী দিবস। আজকের এই বিশেষ দিনে শেখ তাসলিমা মুন’কে এই লেখাটি উৎসর্গ করছি। তার প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অসীম ভালোবাসা। তার সৃষ্ট ফোরামটি যেন সফলতায় পর্যবসিত হয়ে নারী অধিকার নিশ্চিত করতে পারে সেটাই প্রত্যাশা।
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ আমেরিকার নিউইর্য়ক শহরে একটি সূচ কারখানায় মহিলা শ্রমিকগণ কারখানায় মানবেতর পরিবেশ, অসম মজুরী ও ১২ ঘন্টা কর্মদিবসের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। সেদিন তারা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। কিন্তু পুলিশ নিরীহ মহিলা শ্রমিকদের উপর নির্যাতন চালায় এবং অনেককে গ্রেফতার করে। পুলিশি অত্যাচারের দিনটি স্নরণ রেখে নিউইর্য়কের সূচ কারখানার মহিলা শ্রমিকগণ ১৮৬০ সালের ৮ মার্চ একত্রিত হয়ে মহিলা শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করে। মহিলা শ্রমিকদের আন্দোলন এগিয়ে চলতে থাকে। তাদের আন্দোলন কারখানা ও ইউনিয়নের সীমা অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আসে ১৯১০ সাল। এ বছর ৮ মার্চে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেন হেগেনে দ্বিতীয় আর্ন্তজাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে জার্মনের মহিলা নেত্রী ব্লারা জেটকিন ৮ মার্চ কে আর্ন্তজাতিক নারী দিবস পালনের ঘোষণা দেন। সারা বিশ্বের নারী সমাজ ৮ মার্চ যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করতে থাকে। ৮ মার্চের সূচনা নিউইয়র্কে হলেও এ দিবসটি ইউরোপে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে। দিনটির গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৭৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বছরের একটি দিনে নিজ নিজ দেশের ঐতিহাসিক, জাতীয় ঐতিহ্য ও প্রথার আলোকে মহিলাদের অধিকার ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতিসংঘ দিবস হিসেবে পালনের জন্য রাষ্ট্রসমূহের প্রতি আহ্বান জানায়। রাষ্ট্র সমূহকে মহিলাদের প্রতি বৈষম্যমূলক অবস্থা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানানো হয়(সিদ্ধান্ত নং ৩২/১৪২)। জাতিসংঘের কর্মচারীগণ ৮ মার্চ তারিখে এ দিবসটি পালন করতো। পৃথিবীর অনেক দেশে ঐ তারিখে আর্ন্তজাতিক মহিলা শ্রমিক দিবস পালন হতো। যেহেতু নারী সমাজ শতাধিক বছর ধরে ৮ মার্চ উদযাপন করে আসছিল সেহেতু তাদের ঐতিহাসিক সংগ্রামের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘ ১৯৮৪ সালে ৮ মার্চ কে আর্ন্তজাতিক নারী দিবস ঘোষণা করে। এ ঘোষণার ফলে বিশ্বের হাজার বছর ধরে অধিকার বঞ্চিত নারী সমাজের সাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির পথ সুগম হয়। আর্ন্তজাতিক নারী দিবসের তাৎপর্য হচ্ছে পৃথিবীর নারীদের অধিকার কতোটুকু অর্জিত হয়েছে এবং তারা কি কি বৈষম্য ও বাঁধার সম্মুখীন তা মুল্যায়ন ও তুলে ধরা। নারী অধিকার অর্জনে জাতিসংঘের ভূমিকার দীর্ঘ ইতিহাসও আর্ন্তজাতিক নারী দিবসের গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়।

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ সম্পাদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কম।।

প্রধান সম্পাদক