৫ লাখ মানুষের জীবন বাঁচানোর আহ্বান জানিয়েছে অধিকার ভিত্তিক সংগঠন
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ভোলা জেলায় নদীভাঙন ও প্লাবন সৃষ্ট দুর্যোগে ৫ লাখের অধিক মানুষ পানি বন্ধি হয়ে গত মে ২০১৩ থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছে। গত ৩/৪ এর অতিজোয়ারের পর পরিস্থিতি উত্তরোত্তর খারাপের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। যার ফলে এসকল মানুষ খাদ্য ও পানিয় জলের অভাব, পয়ঃব্যবস্থায় দুর্ভোগ এবং বাড়িঘর ও সম্পদ রক্ষায় হিমসিম খাচ্ছে। সম্প্রতি ভাঙনের শিকার ১২ কি.মি. নদী তীরে এখনও বেরীবাধ নির্মানের কাজ হাতে নেয়া হয়নি। যেখান দিয়ে জোয়ারে পানি প্রবেশ করে বর্তমানে পরিস্থিতি আরোও দুর্বীসহ করে তুলেছে। ২৪ আগষ্ট ঢাকায় বেলা ১১.০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানব বন্ধনে ভোলা জেলায় কর্মরত ৭টি অধিকার ভিত্তিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ভোলাবাসীকে দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে অনতি বিলম্বে নদী তীর রক্ষা এবং জোয়ারে পানি প্রবেশ বন্ধ করতে বেরীবাধ নির্মাণ করার দাবী তোলেন। তারা এ কাজে জরুরী ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকদের পাশাপাশি সেনা বাহিনী নিয়োগের কথা বলেন। তারা সরকাররে নিকট ভোলা জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষনা এবং জরুরী ত্রাণ এবং পূর্নবাসন কাজ শুরু করার দাবী জানান। মানব বন্ধনে অংশনেয়া সংগঠনসমূহ হচ্ছে ব-দ্বীপ ফোরাম, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, কোস্ট ট্রাস্ট, দ্বীপ উন্নয়ন সোসাইটি, পরিবার উন্নয়ন সংস্থা, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা ও পল্লী সেবা সংস্থা।
মানব বন্ধনে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের নেতা বদরুল আলম কৃষি জমি রক্ষার দাবী তোলেন। তিনি বলেন শতশত হেক্টর কৃষি জমি রক্ষা না হলে ভোলাবাসী তীব্র খাদ্য সংকটে পড়বে। বোরহান উদ্দিন উন্নয়ন পরিষদের নেতা কালাম ফরাজী বলেন সরকার ভোলাবাসীর মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার অস্বীকার করছেন। তিনি জরুরী ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কাজ শুরুর জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান। ব- দ্বীপ ফোরামের চৌধুরী নাজিমুল ইসলাম ভোলার সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক দলসমূহের নেতৃবৃন্ধের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং একজোট হয়ে ভোলা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে চাপ দিতে অনুরোধ করেন। একই সংগঠনের নাকিব চৌধুরী উল্লেখ করেন এমন দুযোর্গময় পরিস্থিতে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্ধে কার্যকরী ভূমিকা না থকলে ভবিষ্যতে জনগণ তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। তিনি সকলকে ভোলাবাসীর পাশে দাড়াতে আহবান জানান। আয়োজক সংস্থাসমূহের পক্ষে কোস্ট ট্রাস্টের মোস্তফা কামাল আকন্দ লিখিতভাবে ৬ টি দাবী তুলে ধরেন। সেগুলো হলো: (১) এখনই প্লাবন ঠেকানোর জন্য নদী তিরে বাধ নির্মানের কাজ শুরু করতে হবে। এই কাজ স্বল্প সময়ে শেষ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকদের পাশাপাশি সেনা বাহিনী নিয়োগ করতে হবে; (২) পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় অনানুষ্ঠানিকভাবে ৬ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ে দ্বীপ জেলা ভোলাকে স্থায়ীভাবে নদীভাঙন ও প্লাবন থেকে রক্ষার পদক্ষেপ ঘোষনা করতে হবে; (৩) টেন্ডার প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলীয় প্রভাব দূর করে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকান্ডে ২০% ব্যয় হ্রাস করার পদক্ষেপ নিতে হবে; (৪) পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে জরুরি প্রয়োজনে ও জটিল কাজের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটকে নিয়োজিত করতে হবে; (৫) পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাদের উন্নয়ন কর্মকান্ডে পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; এ জন্য তৃণমূল পর্যায়ে তাদের তথ্য উন্মুক্তকরণ ও অভিযোগ নিষ্পত্তি নীতি প্রণয়ন করতে হবে; এবং (৬) বেড়ি বাঁধ রক্ষার কাজটি স্থানীয় সরকার ও এনজিওদের দায়িত্বে দিয়ে এ ক্ষেত্রে নির্বাহ ব্যয় হ্রাস করতে হবে।