ঝিনাইদহে’র কালীগঞ্জে এক রাজাকার পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা!
আহমেদ নাসিম আনসারী,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ রাজাকার হয়েও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন সিরাজুল ইসলাম। যুদ্ধের সময় রাজাকারদের একটি ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা সিরাজুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে এ ভাতা তুলছেন। কালীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আবুল হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ ব্যাপারে লিখিত আপত্তি দিয়েছেন। সিরাজুল ইসলাম ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামের মৃত সাদিম আলীর পুত্র। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে তিনি ছিলেন বিডিআর সদস্য। সিরাজুল ইসলামের চাকুরি জীবনের এক সহকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যুদ্ধ শেষে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের কাছে রাজাকার সিরাজুল ইসলাম আত্মসমর্পণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কালীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সহকারী কমান্ডার হেলাল উদ্দিন সর্দ্দার জানান, সিরাজুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বাড়িতে আগুন দিতে গিয়েছেন। এলাকায় অনেক অপকর্ম করেছেন। এর পরও বিডিআর সদস্য হওয়ায় একটি মহল তাঁর নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমানজনক।
কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, ২০০৫ সালে রেজাউল ইসলাম যখন কালীগঞ্জ উপজেলাকমান্ডার ছিলেন, তখন সিরাজুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। ওই বছর প্রকাশিত সরকারি গেজেটে ৮৪৩ ক্রমিকে তাঁর নাম রয়েছে। এ ব্যাপারে রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি ওই সময় সিরাজুলের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করতে বাধ্য হন। সাবেক আরেক কমান্ডার ও সিরাজুল ইসলামের শ্যালক আবুল হোসেন জানান, সিরাজুলের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় তিনি ওই সময় ইউএনওর কাছে লিখিতভাবে আপত্তি দিয়েছেন। তার পরও ভাতা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সিরাজুল ইসলাম রাজাকার ছিলেন। তাঁর কাছেই সিরাজুল আত্মসমর্পণ করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান উপজেলা কমাণ্ডার সেকেন্দার আলী জানান, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে ভাতা না দেয়ার জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, সিরাজুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা না রাজাকার, তা যাচাই করার ক্ষমতা তাঁর নেই। অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম জানান, দেশের বিরুদ্ধে তিনি কোনো ভূমিকা রাখেননি। তবে বাধ্য হয়ে রাজাকার হিসেবে নাম লিখিয়েছিলেন। রাজাকার হিসেবে বারোবাজার ক্যাম্পের দায়িত্ব পেয়ে মাত্র কয়েক দিন পালন করেছেন।