রিজওয়ানা হাসানের স্বামী অপহরণঃ রহস্যের ধ্রুমজাল

নারায়নগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান জানান, ভূঁইয়া ফিলিং স্টেশনের সিসি টিভির ফুটেজ ধরে তারা অপহরণে ব্যবহৃত সন্দেহজনক নীল রংয়ের একটি মাইক্রোবাসটিকে চিহ্নিত করলেও, তার ‘নম্বর প্লেট’ ভুয়া বলে জানা গেছে। তারা আবু বকরকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে তাদের হাতে এখনো অপহরণের কোনো ‘ক্লু’ নেই। এদিকে রিজওয়ানা জানিয়েছেন যে, তাঁর স্বামী আবু বকর সিদ্দিককে অপহরণের পর তাঁকে দু’বার হুমকি দেয়া হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত জানাতে চাননি। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ১৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) জানান, ‘পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং ব়্যাবের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চলছে। খুব শিগগিরই আবুবকরকে উদ্ধার সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘রিজওয়ানা হাসানের স্বামী আবু বকর সিদ্দিককে উদ্ধারে যা যা করণীয়, তার সবই করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি জেনেছেন। এরপর তাঁকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।’ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা রিজওয়ানার স্বামী আবু বকর সিদ্দিককে ফিরিয়ে দিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ আল্টিমেটাম দেয়া হয়। এছাড়া সুশীল সমাজের নাগরিকরা এক জরুরি বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াও এই অপহরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রিজওয়নার বাসা ঢাকার সেন্ট্রাল রোডে। তাঁর স্বামী অপহৃত হওয়ার পর বাসার নিরাপত্তায় পুলিশ দেয়া হয়েছে। আর স্বামী উদ্ধারে আশাবাদী রিজওয়ানা পুলিশ, গোয়েন্দা ও ব়্যাবসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ রাখছেন। তবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, তাঁর অপহৃত স্বামী আবু বকর সিদ্দিকের ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে এখনো পর্যন্ত আশান্বিত হওয়ার মতো কোনো তথ্য তিনি পাননি। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক বৃন্দ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমি আশা হারাচ্ছি না।’ এছাড়াও তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমর্থন তিনি পাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল, নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপার্সন হামিদা হোসেন, তথ্য কমিশনার সাদেকা হালিম এবং সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ।