কক্সবাজারে পাহাড়ি ঢলঃ মৃত ২১
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্কঃ কক্সবাজারে টানা ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে মা-মেয়েসহ মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা জানান, জেলার টেকনাফ, রামু, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। চকরিয়ায় আরও চারজনের মৃত্যু হয় বলে জেলা পুলিশের এএসপি মো. মাসুদ হোসেন জানান।
কর্মকর্তারা জানান, টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নে পাহাড় ধসে মা-মেয়ে, রামুর গর্জনিয়ায় নিখোঁজ দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার, চকরিয়ার কাকরা, কৈয়ারবিল, ডুলাহাজরা ও ডেমুসিয়ায় পানিতে ভেসে চারজন, চকরিয়ার খাসিয়াখালি ইউনিয়নে বিদ্যুতের খুঁটি পানিতে পড়ে তড়িতাহত হয়ে দুজন এবং পেকুয়া উপজেলায় একজন নিহত হয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ঢল ও ধসে জেলার বিভিন্ন স্থানে আরও আটজন নিহত হন, যাদের মধ্যে পাঁচজন রামুতে, টেকনাফের সেন্টমার্টিন্সে দুজন এবং কক্সবাজার সদরে পাহাড় ধসে একজনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার বান্দরবানে পাহাড় ধসে মারা যান দুই ভাই-বোন।
এদিকে টানা পাঁচ দিনের ভারি বর্ষণের পর শনিবার থেকে বৃষ্টি কমে আসায় জলমগ্ন বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে এখনও বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। রামুর ইউএনও মো. মাসুদ হোসেন জানান, শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার গর্জনিয়ার ক্যাজল বিল এলাকা থেকে পাহাড়ি ঢলে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ দুজনের মৃতদেহ শনিবার সকালে উদ্ধার হয়েছে। ইউএনও জানান, রামুতে দুর্গত লোকজনের আশ্রয়ের জন্য ৩৮টি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে পানি কমতে শুরু করায় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া লোকজনের অনেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।
এর আগে পেকুয়া উপজেলার চেয়ারম্যান শাফায়াত আজিজ রাজু জানান, শনিবার ভোররাতে সদর ইউনিয়নের নতুন পাড়া এলাকা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় মায়ের কোল থেকে পড়ে পানিতে ভেসে গিয়ে আড়াই বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা বলেন, টানা বর্ষণে চকরিয়া, পেকুয়া ও রামু উপজেলার ৯০ ভাগ, কক্সবাজার সদরের ৭০ ভাগ এবং উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ২৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
শুক্রবার গভীর রাত থেকে বৃষ্টি কম হওয়ায় পানি নামতে শুরু করেছে জানিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় দেড় ফুট পানি নিচে নেমে গেছে। জেলার আটটি উপজেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা ইউএনওকে প্রধান করে আটটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক অনুপম বলেন, দুর্যোগে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে রবিবারের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।