–লাল টিপ–
::তানজারীন ইফফাত শাতি::
_________________________________________________________
– আজ আসবে তো?
– উত্তর নেই।
– আজ শীত শীত অনুভবে সন্ধ্যা নেমেছে। আকাশে এক ফালি চাঁদ দেখা যাচ্ছে। আর ঐ দূরে একটি মাত্র তারা।
– উত্তর নেই।
– আমাকে কি ঐ তারাটার মত একলা করে দেবে? নাকি আসবে? আমি আজ কোন রঙের শাড়ি পরবো? আসবে তো!
– কি যেন বলতে চায় নীলকন্ঠ।
– অমনি ধরা গলায় লাবণ্য আবার বলে, আমার ঘরে আজ প্রজাপতি খেলছে। তোমার উপহার দেয়া বইগুলো সবকয়টা পড়ে ফেলেছি। রঙিন খামের চিঠিগুলো সব সাজিয়ে রেখেছি। ইচ্ছে হলেই পড়ি। আমার টিপের পাতাটা আজ খুঁজে পাচ্ছি না। তুমি কি আমার জন্য লালটিপ আনতে পারবে? তোমার কি আজ সময় হবে?
আসবে তো!
– নীলকন্ঠ কথা বলতে শুরু করে। আজ আমার অনেক কাজ। তবে—-
– তবে কি! কতদিন আসো না বলোতো? আমি তোমার জন্য আজ অপেক্ষা করে থাকবো। আসবে তো!
– আমি বলিনি যে আসবো না। কাজ গুলো গুছিয়ে—– যদি দেরি হয়ে যায়!
– তবু আমি অপেক্ষা করবো। রাত ভোর হয়ে যাবে। তবু—–
– তোমার জন্য আর কি আনবো?
– একগুচ্ছ গোলাপ কিম্বা গ্ল্যাডিওলাস। আর কিছু বই। —নাহয় কিছুই আনলে না।
– তা কি করে হয়। আমি তো আসবো। তুমি সবুজ রঙের শাড়ি পরো। আমার আসতে একটু দেরি হবে।
——ফোন কেটে দেয়।
লাবণ্য সবুজ রঙের শাড়ি পরে। টিপের পাতাটা খুঁজে পেয়েছে। লাল টিপ। বাইরে হিমেল হাওয়া। শীতের অনুভবে গায়ে একটা শাল জড়ায়। ঘড়িতে ঠিক নয়টা। নীলকন্ঠ এসে দরজায় কড়া নাড়ে। লাবণ্য ভিতর থেকে দরজা খুলে দেয়। প্রতীক্ষার শেষে লাবণ্য নীলকন্ঠের হাত ধরে কাছে টানে। নীলকন্ঠের হাতে একগুচ্ছ গোলাপ আর প্রিয় কিছু বই। গোলাপের একটি পাপড়ি ছিঁড়ে নীল লাবণ্যর কপালে টিপ পরায়।