পাসপোর্ট অবস্থানের অবনতি
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: গত বছরের শেষ সংস্করণের তুলনায় চলতি বছরে বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থানের এক ধাপ অবনতি ঘটেছে। এর আগে গত বছরের ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০১তম। যদিও বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচকে গত বছরের ত্রৈমাসিক সংস্করণে বাংলাদেশের পাসপোর্ট এই তালিকার ৯৬তম স্থানে ছিল।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্সের’ করা ২০২৪ সালের সংস্করণে বিশ্বের ৮ম দুর্বল পাসপোর্টের তকমা পেয়েছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট। ০৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) বিশ্বের ১৯৯টি দেশের পাসপোর্ট সূচক প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ এই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ এই সূচকে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ৯৭তম অবস্থানে রয়েছে উত্তর কোরিয়া।
কোন দেশের পাসপোর্ট দিয়ে কত দেশে ভিসা ছাড়া বা অন অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশ করা যায়, ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (আইএটিএ) তথ্যের ভিত্তিতে শক্তিশালী পাসপোর্টের এই সূচক তৈরি করে দ্য হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স। বিশ্বের ১৯৯ দেশের সূচকে কিছু কিছু দেশ যৌথ অবস্থান পাওয়ায় এ বছর হেনলি মোট ১০৪টি অবস্থান নির্ধারণ করেছে।
গত ১৯ বছর ধরে বিশ্বের কোন দেশের পাসপোর্ট কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে প্রত্যেক বছর প্রতিষ্ঠানটি র্যাংকিং প্রকাশ করে আসছে। প্রতি তিন মাস অন্তর এই সূচক প্রকাশ করা হয়। ২০২৪ সালের সূচকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ার সাথে যৌথভাবে ৯৭তম অবস্থানে রয়েছে। চলতি বছরের সংস্করণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বের ২২৭টি গন্তব্যের মধ্যে বর্তমানে ৪২টিতে ভিসা ছাড়া কিংবা অন অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করা যায়।
বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে আগাম ভিসা ছাড়া ইউরোপের কোনও দেশে ভ্রমণ করা সম্ভব নয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে মালদ্বীপের পাসপোর্ট (৫৮তম)। মালদ্বীপের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই ৯৪টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন। এরপরই আছে ভারত (৮০তম), ভুটান (৮৭তম) এবং শ্রীলঙ্কা (৯৬তম)।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেপালের (৯৮তম), পাকিস্তানের (১০১তম) এবং আফগানিস্তানের (১০৪তম) তুলনায় শক্তিশালী অবস্থানে আছে।
হ্যানলির এই সূচকে চলতি বছর নজিরবিহীন এক অবস্থান দেখা গেছে। এ বছর বিশ্বের মোট ছয়টি দেশ সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের সূচকে যৌথভাবে শীর্ষ অবস্থান দখল করেছে। আর এই ছয় দেশ হলো ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সিঙ্গাপুর এবং স্পেন। এসব দেশের নাগরিকরা ভিসা ছাড়া কিংবা অন অ্যারাইভাল ভিসায় বিশ্বের ১৯৪টি গন্তব্যে ভ্রমণ করতে পারেন।
১৯ বছর আগে হ্যানলি বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচক প্রকাশ শুরু করার পর থেকে এবারই প্রথম সর্বাধিক ছয়টি দেশ যৌথভাবে শীর্ষ স্থানে রয়েছে। শীর্ষস্থানে থাকা ৬টি দেশ ছাড়াও, হেনলি পাসপোর্ট সূচকে দ্বিতীয় স্থানে যৌথভাবে ফিনল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সুইডেন। এই তিন দেশের পাসপোর্টধারীরা ১৯৩টি দেশে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারেন।
এ ছাড়া তৃতীয় স্থানে যৌথভাবে থাকা অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডসের নাগরিকরা ১৯২টি দেশে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশ করতে পারেন। চতুর্থ স্থানে রয়েছে যৌথভাবে বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, নরওয়ে, পর্তুগাল এবং যুক্তরাজ্য। এসব দেশের নাগরিকরা বিশ্বের ১৯১টি দেশে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারেন। আর যৌথভাবে পঞ্চম স্থানে থাকা গ্রিস, মাল্টা এবং সুইজারল্যান্ডের পাসপোর্টধারীরা ১৯০টি গন্তব্যে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় যেতে পারেন।
হ্যানলির এই পাসপোর্ট সূচকে একেবারে তলানিতে রয়েছে আফগানিস্তান (১০৪তম)। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটির পাসপোর্টধারীরা মাত্র ২৮টি দেশে ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারেন।।