ধূমপানমুক্ত স্থানে ধূমপান না করার দাবি তামাক বিরোধী জোটের
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে নারী ও শিশুদের রক্ষায় পাবলিক প্লেস ও পরিবহনকে আইন অনুযায়ী ধূমপানমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এসব স্থানে একাধিক কক্ষ/কামরার ক্ষেত্রে একটি কক্ষ/কামরাকে ধূমপানের জন্য রাখা হয়েছে। তাই পাবলিক প্লেসগুলো ধূমপানমুক্ত রাখা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে এখনও প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ৩০ভাগ কর্মস্থল এবং ২১ভাগ পাবলিক প্লেস (জনসমাগমস্থল) এ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। এতে করে নারী বিশেষত গর্ভবতী নারী মারাত্মক স্বাস্থ্যক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীতে ধূমপানমুক্ত স্থানে ধূমপানের স্থান না রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহ। ১৯ নভেম্বর সকাল ১১ টায় শাহবাগস্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউট এর সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আয়োজিত সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এ দাবি জানিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপানের স্থান চিহ্নিত করার বিধান রয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে এ বিধান বাতিল করে পাবলিক প্লেস ও পরিবহন সম্পূর্ণ ধূমপানমুক্ত করার প্রয়োজন। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের উন্নয়ন কর্মকর্তা আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, গ্রীন মাইন্ড সোসাইটির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ, ইকো সোসাইটির চেয়ারম্যান শেখ আরিফ আহম্মেদ, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, হিল এর নির্বাহী পরিচালক জেবুন নেছা, জালালাবাদ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এনাম আহম্মেদ, ইএনভি নিউজ এর তুষার চন্দন, জালালাবাদ ফাউন্ডেশনের এনাম আহম্মেদ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান, ইয়থ ইয়াস্ট এর জেনারেল সেক্রেটারী অসীম শুভ প্রমুখ।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, বাংলাদেশে অধিকাংশ নারী ধূমপান করে না। তথাপি নারীরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। গৃহাভ্যন্তরে পরোক্ষ ধূমপানের চিত্র আরও বেশি বলে অনুমিত। এসব নারী ও শিশুসহ সকল অধূমপায়ীদের পরোক্ষ ধূমপানের ধোঁয়া হতে রক্ষা করাই ধূমপানমুক্ত স্থানের উদ্দেশ্য। ধূমপানমুক্ত স্থানের অপর একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে ধূমপায়ীদের যতদুর সম্ভব ধূমপান হতে বিরত রাখা, যা তাদের ধূমপান ত্যাগে সহযোগিতা করে।
ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, তামাক চাষ ও শিল্প স্থাপনে নিরুসাহিত করার বিধান যুক্ত করার দাবি যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, নারী শ্রমিকদের স্বল্প মজুরীতে পাওয়া যায় বিধায় তামাক চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, তামাকা পাতা শুকানো ইত্যাদি কাজে নারীদের সম্পৃক্ত করা হয়। বিড়ি কারখানার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নারী ও শিশুদের এসব বিষাক্ত নিয়ে কাজ করায় নানা ধরনের জটিল রোগে তারা দিন দিন আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপানের ফলে মানুষ ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হার্ট এটাক, শ্বাসতন্ত্রের অসুখ, উচ্চ রক্তচাপ, লিভারের সমস্যা, ফুসফুসের
সমস্যসহ নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
শেখ আরিফ আহম্মেদ বলেন, আইন লঙ্ঘণ করে তামাক কোম্পানিগুলো নিত্য নতুন কৌশলে মানুষকে ধূমপানে উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। আইনের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও তামাক কোম্পানিগুলোর নিত্য নতুন কার্যক্রম বন্ধ করতে দ্রুত আইন সংশোধনে পদক্ষেপ গ্রহণ অতি গুরুত্বপূর্ণ।
মো. ফারুক আহম্মেদ বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশে কোম্পানিগুলো সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান করলেও বাংলাদেশে প্রদান করছে না। আইনের দূর্বলতা দূর ও তামাক কোম্পানীগুলোর নিত্যনতুন কার্যক্রম বন্ধ করতে আইন উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া কর্মসূচীতে ফ্রেন্ডস মিডিয়া, নাটাব, একলাব, হীল, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, বিআইসিডি, সোশ্যাল আপলিমেন্ট সোসাইটি (সার্স) উপস্থিত ছিলেন।