তরুণ প্রজন্ম স্বাধীনতার সবচেয়ে বড় পাহারাদারঃ শাহবাগ চত্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধা যুগেশ চন্দ্র দাস
বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ব্লগার রাজিব হায়দার শোভন হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভে উত্তাল শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর। আন্দোলনকারীরা ফিরে গেছেন আগের অবস্থানে। ‘বুকের ভিতর জ্বলছে আগুন/সারা বাংলায় ছড়িয়ে দে’, ‘আমার ভাই খুন কেন/জামায়াত-শিবির জবাব দে’, ‘কথা দিলাম তোমায় মা/বদলা ছাড়া ফিরব না’ এমন স্লোগানে প্রকম্পিত শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর। রাজীব স্মরণে ১৬ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ভোরে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে নতুন দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। নীরবতা শেষে সকাল সোয়া ৬টায় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। এরপর থেকে স্লোগানে স্লোগানে দাবি উঠে ব্লগার রাজীব হায়দার শোভন হত্যার বিচার : ডাক এসেছে জামায়াত-শিবির প্রতিরোধের। স্লোগানের সঙ্গে চলছে প্রতিবাদী গানও। অন্য দিনের চেয়ে শনিবার সকালে প্রজন্ম চত্বরে অংশগ্রহণ বেশি দেখা যাচ্ছে। যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও। রাজীবের স্মরণে সকালে কালো ব্যাজ পরেছেন আন্দোলনকারীরা। বিকেলে শাহবাগেই রাজীবের জানাজা হবে বলে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে জানানো হয়েছে। এর আগে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনের একাদশ দিনে শুক্রবার ‘জাগরণ সমাবেশ’ থেকে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করার ঘোষণা এলেও ব্লগার রাজীব হত্যা ও কক্সবাজারসহ সারাদেশে জামায়াত হরতাল ডাকায় আবার ২৪ ঘণ্টার কর্মসূচিতে ফিরে এসেছেন আন্দোলনকারীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধা যুগেশ চন্দ্র দাস আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের সময় তার সহযোদ্ধা শাহজাহানের মৃত্যুযন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “মৃত্যু যন্ত্রণায় শাহজাহান বারবার আমাকে বলতে লাগলেন, আমাকে আরেকটি গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে দে। কিন্তু আমি সেটা যেমনি পারিনি, তেমনি সেই বন্ধুকে বাঁচাতেও পারিনি। মৃত্যুর আগে সে আমাকে বলে, আমার শেষ অনুরোধ রাখবি। আমার মাকে গিয়ে বলবি, যেন আমার জন্য না কাঁদে। কারণ তার ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে।” যুগেশ চন্দ্র বলেন, “দেশ স্বাধীন হওয়ার তিন মাস পর ওই বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দেখি, তার মাকে রাজাকার ও পাকিস্তানিরা হত্যা করেছে।” “স্বাধীনতা আমরা আনলেও আমার মাঝেই মাঝেই মনে হত, এই স্বাধীনতা কে রক্ষা করবে। আজ মনে হয়েছে, এই তরুণ প্রজন্ম স্বাধীনতার সবচেয়ে বড় পাহারাদার” বলেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং জামায়াত-শিবিরের স্বরূপ উন্মোচনে অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয় এবং শাহবাগ আন্দোলনের কর্মী রাজীবকে ১৫ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাতে মিরপুরে তার বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জামায়াত-শিবিরই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে রাজীবের বন্ধু ও স্বজনরা দাবি করেছেন।