হরতালঃ সাংঘর্ষিকতার মধ্য দিয়ে চলছে ।। গ্রেফতার অব্যাহত,নিহত ১
বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ বিক্ষিপ্ত ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ আর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে রাজধানীতে চলছে জামায়াতের দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। হরতালের সকালে যাত্রাবাড়ীতে ৪/৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় পিকেটাররা। মহাখালী ও নাবিস্কোতে আগুন দেয় ৮/৯টি বাসে। ভাঙচুর চালায় তিনটি প্রাইভেট কারে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ওয়াইজঘাট এলাকায় দুই শিবির কর্মীকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা। হরতালের শুরুতে সকাল পৌঁনে ৭টার দিকে মহাখালীর বি এফ শাহীন কলেজের সামনে গুলিস্তান থেকে এয়ারপোর্টগামী তিন নম্বর বাসে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় পিকেটাররা। তবে, আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই স্থানীয় লোকজন তা নিভিয়ে ফেলে। এসময় কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানা গেছে। সকাল পৌঁনে ৮টার দিকে মহাখালীর নাবিস্কো বাসস্ট্যান্ডে হরতাল সমর্থকরা পার্ক করা ৭ থেকে ৮টি বাসে ভাঙচুর চালায়। এসময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে ও কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় পুলিশ ১৫ হরতাল সমর্থককে আটক করে। এর আগে মহাখালীতে তিনটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করে হরতাল সমর্থকরা। আগুন দেয় একটি বাসে। মহাখালীর তিতুমীর কলেজের সামনেও পিকেটাররা ২টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৭ পিকেটারকে আটক করে। অন্যদিকে, যাত্রাবাড়ী ‘চাইপাই রেস্টুরেন্ট গলিতে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় জামায়াত- শিবির কর্মীরা। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পিকেটাররা হঠাৎ যাত্রাবাড়ী এলাকায় এসে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ থেকে পেট্রোল ও শিবিরের ব্যানার উদ্ধার করে পুলিশ। মালিবাগে একটি মিছিল প্রচেষ্টা পণ্ড করে ধাওয়া দিয়ে ১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে, হরতালের নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে সতর্ক টহল দেখা গেছে পুলিশ-র্যাবের। আছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর টহলও। প্রস্তুত আছে রায়ট কার ও জলকামান। বিশেষ করে জামায়াত-শিবিরের পিকেটিং এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সোমবার সকালে হরতাল সমর্থকরা রাজধানীর বাড্ডায় একটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করেছে। এসময় অজ্ঞাতপরিচয় (৩০) এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন জানান, সকাল নয়টার দিকে বাড্ডা লিংক রোড লায়ন হাসপাতালের সামনে শিবির কর্মীরা একটি মিছিল বের করে। এসময় মিছিলকারীরা বন্ধু পরিবহনের একটি গাড়িতে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে বাসটি পার্ক করতে গিয়ে পাশের রেলিংএ ধাক্কা লাগলে দুই যাত্রী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দুইজনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে এক যাত্রী মারা যান। অন্য যাত্রীর অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। দু’জনের পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করেছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারে জামায়াত-শিবিরের মিছিলে পুলিশের গুলিতে ৪ জন নিহত, ৩০ জন গুলিবিদ্ধসহ ২ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত ও ১১২ জনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার দেশব্যাপী জামায়াতের এই হরতাল হচ্ছে।