যবিপ্রবি’তে হামলার পর সংঘর্ষ, ৩ মোটরসাইকেলে আগুন, হল বন্ধ, শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত
মিজানুর রহমান, যশোর জেলা প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) বহিরাগতদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর সকল শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি যবিপ্রবি’র সবগুলো হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যার কারণে গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার আগেই বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা হলত্যাগ করেছে। অপরদিকে, ঘটনাটি তদন্তে যবিপ্রবি’র পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইবুর রহমান মোল¬ার নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। যবিপ্রবি ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মী বাদলের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটির জের ধরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। যবিপ্রবি ক্যাম্পসে অবস্থান করা একাধিক শিক্ষার্থী এ প্রতিবেদককে বলেন, মূল ফটকের নিরাপত্তা কর্মী বাদলের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বাদল ও তার সমর্থীত কয়েকজন হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। পরে বাদলের মাধ্যমে খবর পেয়ে স্থানীয় একদল যুবক কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে হানা দেয়। এ সময় বহিরাগতদের আগমনের খবর পেয়ে ছাত্ররাও জোটবদ্ধ হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হন। আহতরা হলেন, যবিপ্রবি’র ছাত্র হাসান মাহমুদ শুভ, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী বাদল ও সাহেব আলী এবং বহিরাগত যুবক আফজাল। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বহিরাগতদের ৩টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর স্থানীয় আরও কিছু বহিরাগত যুবক জোটবদ্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে ভীড় করে। তবে এর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ফটকে অবস্থান নেন। এবং দু’পক্ষ পরস্পরকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এ ঘটনার পর বহিরাগত যুবকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি মেসেও হামলা চালায়। এ সময় তারা মেসের ছাত্রদের মারপিট করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে স্থানীয় গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে সরে স্থানীয় আমবটতলা বাজারে অবস্থান নেয়। এ বিষয়ে যবিপ্রবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা হায়াতুজ্জামান মুকুল জানিয়েছেন, বহিরাগত যুবক ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে ঘটনার পর যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ সব ক’টি হলই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। এবং বুধবার বিকাল ৪টার মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসাথে ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক শেখ বলেন, যবিপ্রবি’তে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পরে আলোচনার মাধ্যমে স্থানীয় গ্রামবাসীকে শান্ত করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।