বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেতা উত্তম কুমারের ৮৭তম জন্মদিন
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্কঃ বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক উত্তম কুমার। যার অভিনয়ে মুগ্ধ হয় বাংলার দর্শক। বাংলা চলচ্চিত্রে সর্বকালের সেরা অভিনেতাদের একজন তিনি। মহানায়ক উত্তম কুমার আজকের এই দিনে পৃথিবীর আলো দেখে ছিলেন। শুভ জন্মদিন হে মহানায়ক।
কিংবদন্তী অভিনেতা, সফল প্রযোজক ও পরিচালক, উত্তম কুমার জন্ম নেন ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায়। তার আসল নাম ছিল অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। চলচ্চিত্রে পা রেখে নিজের নাম পাল্টে রাখেন উত্তম কুমার। কারণ তিনি জানতেন, চলচ্চিত্রে তিনি উত্তম-ই হবেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের হাল ধরার জন্যে গ্র্যাজুয়েশন শেষ না করেই কলকাতা পোর্টে কেরানীর চাকরি শুরু করেন অরুন কুমার চট্টোপাধ্যায়। তাতে কি? তার অন্তরে সুপ্ত ছিল অভিনয়। কিংবদন্তী হয়ে ওঠার পথে হাঁটতে হলো অরুন কুমারকে উত্তম কুমার হয়ে। রূপালি পর্দায় উত্তম কুমারের শুরু ‘মায়াডোর’ নামের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। কিন্তু মন্দ কপালে শেষপর্যন্ত ছবিটি দেখতে পায় না মুক্তির আলো। এর পর প্রথম ছবি হিসেবে ‘দৃষ্টিদান’ মুক্তি পেলেও ঊত্তমের ওপর খুব বেশি দৃষ্টি পড়লো না কারোরই। ‘বসু পরিবার’ ছবিটি দিয়ে খানিকট পরিচিতি জুটে। ১৯৫৩ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ঝড় তোলেন উত্তম কুমার। এই ছবির মধ্য দিয়েই বাংলা চলচ্চিত্র পায় তার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল জুটির দেখা। শুরু হয় উত্তম সুচিত্রা যুগ। পঞ্চাশ ও ষাটের দশক মানেই ‘হারানো সুর’, ‘পথে হল দেরী’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘বিপাশা’, ‘জীবন তৃষ্ণা’ আর ‘সাগরিকা’-এর মতো কালজয়ী সব ছবির পরিচিত ও আকাঙ্খিত মুখ উত্তম সুচিত্রা।
উত্তম কুমার শুধু যে বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন তা কিন্তু নয়। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। তাঁর অভিনীত হিন্দি চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘ছোটিসি মুলাকাত’, ‘অমানুষ’, ‘আনন্দ আশ্রম’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। উত্তম কুমার অভিনয় করেছেন সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘নায়ক’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ -তে । উত্তম কুমার নিজেকে পৌরুষদীপ্ত সু -অভিনেতা হিসেবে প্রমাণ করেন ‘এ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ছবিতে স্বভাবসুলভ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। উত্তমের সেই ভুবন ভোলানো হাসি, প্রেমিকসুলভ আচার-আচরণ বা ব্যবহারের বাইরেও যে থাকতে পারে অভিনয় এবং অভিনয়ের নানা ধরন, মূলত সেটাই তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন এই ছবিতে। উত্তমের নাম উচ্চারনের পাশাপাশি সুচিত্রার নাম আসলেও মহানায়ক নিজেই নিজের অভিনয় গুণে ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই চিরবিদায় নেয়ার পরও হয়ে আছেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি।