মহাজোট ত্যাগ করা এখন সময়ের প্রশ্নমাত্রঃ কাজী জাফর
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি নির্বাচনের যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন তাতে সারাদেশে সৃষ্টি হয়েছে এক সুগভীর রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট। ফলশ্রুতিতে আজ নির্বাচন নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে এবং জনগণের মনে দেখা দিয়েছে সংশয় ও সংঙ্কা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী নির্বাচন বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মর্মার্থ হচ্ছে বিগত সংসদ বহাল রেখে আরেকটি সংসদের নির্বাচন নিশ্চিত করা অর্থ্যাৎ একইসাথে ৬’শ সংসদ সদস্য থাকবেন। পৃথিবির ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীসহ বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ বহাল থাকবে। জাতীয় এবং আর্ন্তজাতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে সরকার ও বিরোধীদলের মধ্যে এমন এক মিমাংসাহীন দ্বন্ধ সৃষ্টি হবে যা দেশে অনিবার্য রক্তপাত ঘটাবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে মানুষ শান্তি চায় এবং সাথে সাথে ক্ষমতার পরিবর্তনও চায়। তিনি গতকাল শনিবার বিকেলে চৌদ্দগ্রামের চিওড়া ইউনয়িন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। চিওড়া হাইস্কুল মিলনায়তনে ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি হুমায়ুন কবির মজুমদার খবিরের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার আহমেদ সেলিম, ফেনী জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোশারফ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ইসমাইল হোসেন খোকন উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কাশেম, কুমিল্লা জেলা যুব সংহতির সেক্রেটারী কাজী নাজমূল, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মাহবুবুল হক, যুব সংহতির সভাপতি মনিরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম মিয়াজী, আবদুল্লাহ চৌধুরী পাশা প্রমুখ। যুব সংহতির নেতা কাজী শহিদের পরিচালনায় এসময় অন্যান্যের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক আবুল হোসেন ভূইয়া, যুব সংহতির ফেনী সভাপতি আবু বক্কর ছিদ্দিক, ছাত্র সমাজের ফেনী সম্পাদক আবু সুফিয়ান, বাতিসা ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি নজির আহমেদ, আমিন উল্যাহ, হুমায়ুন কবির, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা আবদুল জলিল মিয়াজী, কালা মিয়া মেম্বার মিয়াজী, যুবনেতা আকতার হোসেন, ওবায়দুল হক ছাত্রসমাজের সভাপতি আলী আকবর রঞ্জু ও সেক্রেটারী নাজমূল হক নাঈম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী জাফর আরো বলেন, গত ৫টি সিটি নির্বাচনে শাসক দলের শোচনীয় ভরাডুবির ফলে প্রধানমন্ত্রীসহ শাসক দলের গোটা নেতৃত্ব বেসামাল ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়া হেফাজতে ইসলামের উপর গত ৫ মে যে নারকীয় হামলা হয়েছে তাতে ধর্মপ্রাণ মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছেন্ তাই তারা সংলাপ ও সমঝোতার পথ পরিহার করে সংঘাত ও রক্তাক্ত পরিণতির দিকে যাত্রা শুরু করেছে। রাজনীতিতে যখন এমন ধোঁয়াটে ও কুয়াষাচ্ছন্ন অবস্থা তখন জাতীয় পাটির রাজনীতি দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদ গত কিছূদিন ধরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বলে চলেছেন যে সকল দলের অংশগ্রহণ ব্যতীত কোন পাতানো নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ গ্রহণ করবে না। তিনি সুস্পষ্টভাবে আবেগপূর্ণভাবে ঘোষণা করেছেন জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আমি কেলাভেরেটার হয়ে মরতে চাইনা। তিনি সমঝোতা ও সংলাপের মাধ্যমে বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির অবসান ঘটানোর জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ আরো বলেছেন- নিদলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। তাই আজ জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে কোন বিভ্রান্তির অবকাশ নাই। মহাজোট ত্যাগ করা এখন সময়ের প্রশ্নমাত্র। জাতাীয়পার্টি জনগণের রাজনীতি করে এবং বিশ্বাস করে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। তাই জাতীয় পার্টি জাতীর এ সংকটময় মুহুর্তে জনগণের আশা আকাঙ্খার পরিপূরক ভূমিকা পালন করবে। পল্লীবন্ধু এরশাদ একজন প্রাজ্ঞ ও দুরদর্শী সফল রাষ্ট্রনায়ক তাই তিনি সঠিক সময়ে সঠিক সিন্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। শাসক দলের প্রতি সর্তকবানীউচ্চারণ করে কাজী জাফর আহমেদ আরো বলেন,এখনো সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে যদি সংলাপরে মাধ্যমে সমঝোতায় উপনীত না হয় তাহলে দেশে কোন অবাঞ্চিত ও অসাংবিধানিক পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তার জন্য শাসক দলকে বহন করতে হবে। উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের ৩৯ গ্রাম থেকে ১০ জন করে প্রতিনিধি এ মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন।