পরলোকে কীর্তিমান অভিনেতা আনোয়ার হোসেন
রুপম হালদার,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের কীর্তিমান এবং শক্তিমান অভিনেতা “বাংলার মুকুটহীন নবাব” আনোয়ার হোসেন। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ২টার দিকে তিনি মারা যান। বাংলা চলচ্চিত্রের এ কিংবদন্তীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদে শুক্রবার জুমা নামাজ শেষে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন শ্রেনী পেশা মানুষসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকেই এ জানাজায় অংশ নেন। প্রথম জানাযা শেষে এই কিংবদন্তী অভিনেতাকে নিয়ে যাওয়া হয় তার সেই চিরচেনা ভালোবাসার কর্মস্থল এফডিসিতে। এখানে অনুষ্ঠিত হয় তার দ্বিতীয় জানাজার নামাজ। বিকেলে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
তার পরিবার দাবি করেন, অনেকটা অবহেলায় মৃত্যু হয়েছে তার। চিকিৎসার জন্য প্রথম দিকে কোনো সমাজহিতৈষী ব্যক্তি এগিয়ে আসেননি। দিন দিন তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন।
উল্লেখ্য, আনোয়ার হোসেন স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউ ২নং ইউনিটে ডা. মির্জা নাজিম উদ্দীন হোসেনের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আনোয়ার হোসেনের চিকিত্সার জন্য প্রধানমন্ত্রী ১০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তরও করেন। তবুও শেষ রক্ষা হলো না বাংলার এই মুকুটহীন নবাবের।
প্রসঙ্গত, আনোয়ার হোসেন জামালপুরের সরুলিয়া গ্রামে জন্ম নেন ১৯৩১ সালে। জামালপুর সরকারি স্কুল থেকে ১৯৫০ সালে এসএসসি এবং পরে আনন্দমোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। ষাটের দশকে অভিষিক্ত হওয়া বাংলাদেশের অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা তিনি। ১৯৫৮ সালে চিত্রায়িত ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে অভিনয় জীবনে আসেন বাংলার নবাব।
গত ২০ আগস্ট গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নবাবকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নানা শারীরিক জটিলতার ছাড়াও গলব্লাডারে স্টোন এ আক্রান্ত হয়ে ছিলেন তিনি। ২০১০ সালে চ্যানেল আই চলচ্চিত্র মেলায় মুকুটহীন নবাব আনোয়ার হোসেনকে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়। ওই বছরেই তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পান। তার অভিনীত উল্লেখ্যযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘নবাব সিরাজউদ্দৌল্লাহ’, ‘রংবাজ’, ‘নয়নমনি’, ‘রূপালী সৈকতে’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘ভাত দে’, ‘নাগর দোলা’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘সূর্যস্নান’, ‘লাঠিয়াল’, ‘বন্ধন’, ‘পালঙ্ক’, ‘অপরাজেয়’, ‘পরশমণি’, ‘জোয়ার এলো’, ‘কাঁচের দেয়াল’, ‘নাচঘর’, ‘দুই দিগন্ত’, ‘বন্ধন’, ‘পালঙ্ক’, ‘অপরাজেয়’, ‘পরশমণি’, ‘শহীদ তিতুমীর’, ‘ঈশা খাঁ’, ‘অরুণ বরুণ কিরণমালা’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘সূর্য সংগ্রাম’।