রাজধানীতে জামায়াত-শিবির-পুলিশ সংঘর্ষ ।। পরিস্থিতি থমথমে
বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার আপিল বিভাগের রায়ের প্রতিবাদে এবং বুধ ও বৃহস্পতিবার (৪৮ ঘণ্টা) হরতালের সমর্থনে সারাদেশে বিক্ষোভ করেছে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। রাজধানীসহ দেশের স্থানে জামায়াত-শিবির-পুলিশে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় হরতাল সমর্থনকারীসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা আহত হয়েছে। সহিংতায় জড়িতদের অনেককেই আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে, রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ১০ থেকে ১৫ জন জামায়াত-শিবির কর্মী ইস্টার্ন মোটরস লিমিটেডের একটি প্রাইভেটকারে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ এসে কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুড়লে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সাইদুর রহমান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি মোবাইল অপারেটর রবির ডিস্ট্রিবিউশন অফিসের আইটি সেকশনে কর্মরত বলে জানা গেছে। মতিঝিল থানার এডিসি মেহেদি হাসান জানান, ১০ থেকে ১৫ জন যুবক গলি থেকে হঠাৎ এসে ইস্টার্ন মোটরস লিমিটেডের একটি প্রাইভেট কারে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে তারা পালিয়ে যায়। এর আগে কাদের মোল্লার রায় ঘোষণার পর বিজয় নগরে মিছিল বের করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। তারা রাস্তায় অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাগচুরে চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। মতিঝিল ডিভিশেনের ডিসি আশরাফুজ্জামান বলেন, সকালে জামায়াত-শিবির একবার মিছিল বের করে। তখন তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এরপর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তারা আবার মিছিল বের করে। এসময় তারা রাস্তায় অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ দ্রুত পৌঁছে তাদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত তিনজনকে আটক করে পল্টন থানায় তিন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এদিকে এ ঘটনার পর পল্টন এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়ান করা হয়েছে।
এছাড়াও কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে মগবাজার আগোরার সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এসময় তারা একটি প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ি ভাঙচুরেরও চেষ্টা করে তারা। কিন্তু পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ফাঁকা গুলি ও রাবার বুলেট ছুঁড়লে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এদিকে যাত্রাবাড়ীর কাজলায় ভাঙা প্রেসের কাছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ঝটিকা মিছিল করে ৫ থেকে ৭টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এসময় পরপর ৫ থেকে ৭টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। আশপাশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলের সামনে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।