১৮ দলীয় জোটের সমাবেশঃ সারাদেশে নিহত ৭, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ আহত শতাধিক
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্কঃ সারাদেশেই টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিলো ২৫ অক্টোবর ঘিরে। এদিন ঢাকায় ছিল ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশ। ঢাকার বাইরেও বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় একই দিন। বিরোধীজোটের এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ হয়। এতে ৭ জন নিহত হন। এছাড়া পুলিশ ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। নিহত সাতজনের মধ্যে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ৩, কক্সবাজারে চকরিয়ায় ২, নীলফামারীর জলঢাকায় ১ এবং সাতক্ষীরায় রয়েছেন ১ জন।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বিএনপি-আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন। সেসময় ৩ পুলিশ ও এক সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন ৩৫ জন। নিহতরা হলেন- বড়ালী গ্রামের যুবদল কর্মী শরিফ হোসেন (৩০) এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলার বারপাইকা আবদুল আলীর ছেলে আরিফ (২৪) এবং যুবদল কর্মী জাহাঙ্গীর (৩৫)। ২৫ অক্টোবর (শুক্রবার) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক আহমেদ হোসেন সুলতান টিটু ৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কক্সবাজারের চকরিয়ায় পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ জন নিহত হন। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। নিহতরা হলেন, চকরিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তার আহমদের ছেলে স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বাদশা (২৮) ও কাকারা ইউনিয়নের মাইজকাকারা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে মিজান (১৮)। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো ১০ জন। চকরিয়া থানার ওসি রণজিৎ কুমার বড়ুয়া ২ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নীলফামারীর জলঢাকায় জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে র্যাব, পুলিশের ধাওয়াপাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় মোসলেম উদ্দিন (৩২) নামে এক শিবির কর্মী নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ নেতাকর্মী। নিহত মোসলেম জলঢাকা পৌরসভার ডাঙ্গাপাড়া কাজীপাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে বলে জানা গেছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কাশিমাড়িতে ১৮ দলের মিছিলে অংশ নিয়ে শফিকুল ইসলাম (৪০) নামের এক জামায়াত কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি শ্যামনগর উপজেলার জয়নগর গ্রামের আনছার নিকারীর ছেলে। শুক্রবার বেলা সকাল ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কাশিমাড়ি ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর শহীদুল ইসলাম জানান, তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল করছিল। মিছিলটি কাশিমাড়ি নতুন বাজার এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তাদের আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়। শ্যামনগর থানার ওসি ছগির মিয়া জানান, শফিকুল ইসলাম মিছিলে অংশ নিয়ে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
এছাড়াও নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, বগুড়া, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের সঙ্গে আ’লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।