সন্ত্রাস ভেজাল-মাদকমুক্ত বাংলাদেশ দিন

সন্ত্রাস ভেজাল-মাদকমুক্ত বাংলাদেশ দিন

মীর আব্দুল আলীম:
ভাগ্যক্রমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংবা বিরোধীদলীয় নেত্রী  বেগম খালেদা জিয়া যদি আমার বড় বোন (বুবু) হতেন! ভাগ্য জোড়ে  আমিও যদি তাঁদের ¯েœœহধন্য ছোট ভাই হয়েই যেতাম! তাহলে বুবু দ্বয়ের কাছে আমি কিছু চেয়ে নিতাম। ছোট ভাইয়েরা যেভাবে বোনের কাছে চায় ঠিক সেভাবেই চাইতাম। কাকুতি মিনতি করে; হাতে পায়ে ধরে তা আমি আদায় করেই ছাড়তাম। তাঁরা দিতে পারেন এমন আবদারই করতো তাদের এ ছোট ভাইটা। বুবুদের কাছে কি চাইতাম আমি? মাত্র ৩’টি চাওয়া থাকতো আমার। আর তাঁরা যদি আমাকে তা দিল খুলে দিতেন আমি ধন্য হতাম। চির ধন্য। ধন্য হতাম একারনে আমার এ আবদার রক্ষায় অন্তত দেশবাসী বেঁচে যেতো। দেশ রক্ষা হতো। আজ রাজনীতির কোন প্রসংঙ্গ আনতে চাই না। শেখ হাসিনা আর বেগম জিয়া মানেইতো রাজনীতি টাজনীতির বিষয়। সে বিষয়টা নিয়ে টানা হেচড়া নাইবা করলাম। ছোটদের ওসব মানায়ও না। ওটা না হয় বুবুজানদের উপরই ছেড়ে দিই না কেন? রাজনীতির বাইরেও যে তিনটি জিনিস দেশটাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে তা কি কখনো তারা ভাবেন? ঐ তিন অখাদ্য দেশের গায়ে পঁচন ধরিয়ে দিয়েছে। ক্ষততে এখন ক্যান্সার সৃষ্টি হয়েছে। বলা যায়, দেশবাসী খুব খারপ সময়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বাজে সময়টার প্রায় দ্বাড়প্রান্তে আমরা। আমার তিনটি চাওয়া পুরন করতে পারলেই দেশের আমজনতা বেশী সুখী হতে পারতো। জানে বেঁচে যেতো। শান্তিতে বসবাস করতে পারতো। আমার কি সেই চাওয়া?
১.    সন্ত্রাস এবং দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র
২.    ভেজালমুক্ত খাদ্য
৩.    মাদকমুক্ত বাংলাদেশ
বোধ করি বড় কোন চাওয়া নয়। বোনের কাছে ভাই এমনটা চাইতেই পারে। জানি ওনারা চাইলে তা দিতেও পারেন। দেওয়ার সদইচ্ছাটাই যথেষ্ট। দিবেন কিনা জানি না। সেটা ওনাদেও বিষয়। তবে জীবদ্দশায় তিনটি কাজ করে গেলে দেশবাসীর কাছে চির স্বরনীয় চির বরনীয় হয়ে থাকতে তাঁরা।

সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র :
দেশে ১৬ কোটি মানুষের নিয়তি এখন কোথায়? চারদিকে কেবল ধাউধাউ ফট্ ফট্; রক্ত আর লাশ! মারামারি হানাহানি, ঘুষ দুর্নীতির দুর্বিপাকে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেদেশ। ক্ষমতায় টিকে থাকা আর ক্ষমতার লোভ আমাদের দলগুলোকে অন্ধ করে দিয়েছে। বোধ করি দলগুলো বিবেকবোধ হারিয়ে ফেলেছে। প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত লাশ দেখেও তাদের বিবেক জাগ্রত হচ্ছে না। যা হচ্ছে তা কেবল ক্ষমতার জন্যই হচ্ছে। জনসম্পদ, রাষ্ট্রিয় সম্পদ, দেশের অর্থনীতি, দেশের ভাবমূর্তি কোনটারই  তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের মারামারি আর পুলিশের গোলাগুলি দেখতে দেখতে দেশের মানুষ আজ ভীতসন্ত্রস্ত, ক্লান্ত। আর কতদিন এভাবে চলবে? বিরোধীদল আর সরকারদলের ক্ষমতার লড়াইয়ে বলি হতে চায় না সাধারন মানুষ। জনগন শান্তি চায়; কেবল শান্তি চায়। উত্তপ্ত দেশ চায় না। চায় রাজনৈতিক সমঝোতা।
সভ্যতা, মানবতা , সহনশীলতা, ভালবাসা আজ নির্বাসিত এদেশের রাজনীতি থেকে। দেশে এখন রাজনীতির নামে চলছে গালাগালি, খুনাখুনিসহ যাবতিয় অরাজনৈতিক কর্মকান্ড। ভদ্র, সভ্য, জ্ঞানী মানুষেরা রাজনীতির নাম শুনলে এখন আঁতকে উঠেন। অসভ্যতা, নোংরামি, হিং¯্রতা, দুর্নীতি, প্রতিহিংসাপরায়নতা, সন্ত্রাস, খুন সহ অপরাধের সমস্ত কিছুই বর্তমান এদেশের রাজনীতিতে। রাজনীতি আজ নোংরা, ঘৃন্য, অপাংতেয় ক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে। এর নাম রাজনীতি হতে পারে না। আজ বিরোধীদলের (যারা যখন থাকে) জ্বালাও, পোড়াও নীতি আর সরকার দলের নীপিড়ন চলছেতো চলছেই। কোথায় আজ সত্যিকারের রাজনীতি?  সরকারের প্রতিটি দফতর ঘুষ-উপরির দৌরাত্ম্যে এমন প্রশ্নই এখন সামনে এসে যাচ্ছে। যে কেউ জোড় গলায় এখন বলতে পারেন, এমন কোনো দফতর নেই, যেখানে ঘুষ-দুর্নীতি নেই। ঘুষ দুর্নীতির ভূত তাড়ানোরও যেন কেউ নেই। হাসপাতালে শিশু জন্মের সময় প্রসূতির ভর্তি ও যতœ-আত্তি থেকে শুরু করে মৃত ব্যক্তির কবরের জায়গা কিনতেও ঘুষের প্রয়োজন হয়। পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, চাকরি লাভ, শিক্ষাঙ্গনে ভর্তি, হাসপাতালে চিকিৎসা, এমনকি মসজিদ-মন্দিরের জন্য সরকারি অর্থের বরাদ্দ নিতে গেলেও ঘুষ দিতে বাধ্য হয় মানুষ। ঘুষ ছাড়া সরকারি দফতরের সেবা মেলে না এটি নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে যুগ যুগ ধরে। এমন কি বেসরকারি ব্যাংক-বীমার চাকরি ও সেবার জন্যও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে ঘুষের লেনদেন।  বাংলাদেশ পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব সেরার তকমা পেয়েছিল ক’বছর আগে। গত পাঁচ-ছয় বছর শিরোপা অর্জনের কলঙ্ক থেকে জাতি রেহাই পেলেও সার্বিকভাবে তা কোনো সুসংবাদ বয়ে আনেনি। গত পাঁচ-ছয় বছরে সর্বক্ষেত্রেই বেড়েছে ঘুষখোরদের দৌরাত্ম্য। সম্ভবত এ সময় বাংলাদেশের বাইরের কোনো কোনো দেশের অবস্থার আরও বেশি অবনতি হওয়ায় শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে এ জাতিকে চিহ্নিত করা হয়নি। ঘুষ-উৎকোচ-উপরি যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন এটি এখন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা। সততার সংকট যেভাবে জাতিকে গ্রাস করে চলেছে তাতে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না।
মাদকমুক্ত বাংলাদেশ :
মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া এখন সময়ের দাবি। মাদকের নেশায় শিশু ঐশীরা খুনি হয়ে উঠছে। সজ্ঞানে নয়, মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে অসুস্থ মস্তিষ্কে বাবা-মাকে হত্যা করছে তাদেরই ঐরশজাত সন্তান। যেমনটি ঐশীর ক্ষেত্রে ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধু ঐশীই নয়, অনেক তরুণ-তরুণীই এখন মাদকাসক্ত হয়ে ঘটাচ্ছে ভয়াবহ অপরাধ। এসব ঘটনায় তারা গ্রেপ্তারও হচ্ছে। কিন্তু সমস্যার মূলে হাত পড়ছে না। রোধ করা যাচ্ছে না দেশব্যাপী মাদকের অবাধ বেচাকেনা। যাদের এ অবৈধ ব্যবসা রোধ করার কথা সেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাদের মদদেই চলছে মাদক ব্যবসা। মাদকের প্রসারতা ইউনিট পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন ঘরে ঘরে মাদকাসক্ত। মাদকাসক্ত ছেল বাবা-মাকে খুন করছে, ভাই ভাইকে নেশার ঘোড়ে খুন করছে। সন্তান যখন পরিবারের সদস্যদের জন্য সহিংস হয়ে উঠে তখন এর চেয়ে ভয়ানক আর কি হতে পারে? আমরা ধর্মকর্ম থেকে দুরে সরে যাচ্ছি। ভিনদেশী কালচার রপ্ত করছি। দেশ মাদকে সয়লাব করে দিচ্ছি আর সামাজিক বন্ধন লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিধায় এমন ঘটনা ঘটছে। আমার এক লোয় বলেছিলাম এখন পুত্র সন্তানেরা বাবা-মাকে নেশাগ্রস্থ হয়ে খুন করছে। একসময় নেশায় আসক্ত কণ্যা সন্তানেরাও বাবা-মাকে খুন করবে। এখন সাধারন পরিবারে খুনের ঘটনা ঘটছে, একসময় উচ্চ পর্যায়ে ঘটবে। চেয়ারম্যান সাহেবগন খুন হবেন নিজ সন্তানের হাতে, এমপি মহোদয়, মন্ত্রী মহোদয়গন খুন হবেন মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে, সর্বোপরি দেশের কোন প্রধানমন্ত্রী, এমনকি কোন মহামান্য প্রেসিডেন্ট তারা মাদকাসক্ত সন্তাদের হাতে খুন হলেও অবাক হবার কিছুই থাকবে না। এমন দিনের মুখমুখিই হচ্ছি আমরা। দেশে এটার পর একটা নজির ঘটে যাচ্ছে। দেখছি কিন্তু কিছুই করছি না। অবাক হওয়ার বিষয় কত কিছু নিয়েইনা ঝর বয়ে যায় দেশে। মাদক নিয়ে কেউ কথা বলেন না। সংসদে গালাগালি, খিস্তি খেউড় কত কিছু হয় মাদক নিয়ে তারা এক্কবারে চুপ থাকেন। কেন থাকেন? সরকারদলের ওনারাও চুপচাপ, বিরোধীদলের ওনাদের মুখেও কুলুপ আঁটা থাকে। দু’একজন যাও বলে তা মোটেও জোড়ালো নয়। আর দেশের মাথাওয়ালাদের চুপচাপ এমন পরিবেশই দেশ মাদকে সয়লাব করে দিচ্ছে আমাদের মাদক বিক্রি সিন্ডিকেট। দেশ জুড়ে কেবলই মাদকের লুটপুটি। কি করছে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের কি দায় দায়িত্ব বলে কিছু নেই। তা প্রতিকারে রাষ্ট্রযন্ত্রের তৎপরতা নিষ্প্রভ কেন? মাদক নির্মুলে পুলিশের দায়িত্বটা একটু বেশী। আজকাল পত্রপত্রিকাতে যা দেখছি তাতে মাদক নির্মুলের চেয়ে পুলিশ মাদকের লালন করছে বেশী। পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের সহায়ত করা, কোথাও কোথাও পুুলিশ নিজেরাই মাদক বিক্রে করার মতো ঘৃণ্য অপরাধ করছে। মাদক থেকে সংগৃহীত অর্থ পুলিশের উর্দ্ধতনদের হাত পর্যন্ত পৌছে বলেও আমরা খবরের কাগজে দেখেছি।
কেবল পুত্র সন্তান নয়, কণ্যা সন্তানদের হাতেও পিতামাতা খুনের ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। নেশা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। এতো ব্যর্থতা তবুও এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রেও নজর নেই কেন?  এর একটা বিহিত হওয়া দরকার। ঐশীদের আর মাদকাসক্ত হতে দেয়া যাবে না। ঐশীদের আর খুনী বানানো যাবে না। এদের এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতেই হবে। অনেকেই বলেছেন ঐশীর কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার, আর কোন সন্তান যেন এমন নিষ্ঠুরতা করতে না পারে। তাদের বলবো, এক ঐশীর বিচারই শেষ কাথা নয়। ঐশী যে কারনে খুনী হলো আগে সে জায়গায়টাতে হাত দিতে হবে। দেশ থেকে মাদক নির্মুল করতে হবে। রাষ্ট্র চাইলে সবই সম্ভব। ওয়ার্ড পর্যায়ে মেমম্বারগণ, ইউনয়ন পর্যায়ে চেয়ারম্যানগণ, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, পার্লামেন্ট সদস্য, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি সবাইকে মাদক নির্মুলে সদিচ্ছা থাকতে হবে। এ জায়গা ঠিক থাকলে প্রশাসনও সচেষ্ট হবে। আর এদের সম্মিলিত ইচ্ছা শক্তি মাদকদেশ ছেড়ে পালাবেই পালাবে।
ভেজালমুক্ত খাদ্য :
সভ্য সমাজে খাদ্য ভেজালের বিষয়টি একেবারে অকল্পনীয়। কিন্তু আমাদের দেশে এটি নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, কোথায় ভেজাল নেই সেটি নিয়েই এখন গবেষণা করা দরকার। অনেকে ভেজাল খাদ্যের ভয়ে মানসিকভাবে আতঙ্কগ্রস্থ। জীবনরক্ষাকারী ওষুধেও চলছে ভেজাল। কোনো সভ্য সমাজে খাদ্যে ভেজালের বিষয়টি কল্পনাও করা যায় না। আমাদের দেশে ভেজালের যে সর্বগ্রাসী আগ্রাসন তাতে মনে করা যেতেই পারে এ একবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমরা সভ্যতার মাপকাঠিতে এদিক থেকে জংলী যুগের চেয়েও পিছিয়ে আছি। কারণ আর যাই হোক জংলী যুগের অধিবাসীরাও ভেজালের মতো ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হওয়ার কথা ভাবতেও পারত না। প্রশ্ন ওঠে দেশে সরকার, পুলিশ প্রশাসন, আইন আদালত থাকা সত্ত্বেও ভেজালের দৌরাত্ম্য কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না। কেন এই ভেজালকারীদের দাপট? খাদ্যে ভেজালের অপরাধে দেশে কঠিন শাস্তিযোগ্য আইন থাকলেও তার কার্যকারিতা নেই। এ অবস্থাই ভেজালকারীদের উৎসাহিত করছে। আর এ থেকে আমাদেও বেরিয়ে আসতে হবে। ভেজালের বিরুদ্ধে দেশ ব্যাপী আমজনতা, প্রশাসন, সংশি¬ষ্ট বিভাগের সবাই মিলে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে। জনস্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা প্রদর্শনের কোনই সুযোগ নেই। এ অবস্থায় সর্বতোভাবে তৎপর হতে হবে বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সর্বোপরি গণমাধ্যমসহ ব্যাপক জনসচেতনতাও প্রত্যাশিত।
প্রায়শই ভাবি এসব কি হচ্ছে দেশে। সব শেষ হয়ে যাচ্ছে নাতো? ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়–য়া ছেলেটার মাথার চুলে চোখ পরতেই চোখ যেন ছানা বড়া। সাদা চুলে অটকে গেল চোখ। অসংখ্য চুলে পাক ধরেছে। ভাগ্নেটার চোখে মোটা পাওয়ারওয়াল চশমা। বিছানায় কাতরাচ্ছে ক্যান্সারে আক্রান্ত চাচা। খাবারে ভেজালের জন্যই এমনটা হচ্ছে। ভেজাল নেই কোথায় ? চিকিৎসায় ভেজাল; কথায় ভেজাল; রাজনীতিতে ভেজাল। কোথাও যেন এক দন্ড শান্তি নেই। এমন হচ্ছে কেন ? আমরা খাবার খাচ্ছি; না খাচ্ছি বিষ! চারদিকে ফরমালিনের জয়জয়কার। মাছে, আমে, জামে, কাঠাল, তরকারিতে কোথায় নেই এই জীবন হন্তারক ফরমালিন। তেলে ভেজাল, চালে এমনকি নুনেও ভেজাল। কেউ কেউ তো বলেনই বিষেও নাকি ভেজাল। তাই যা হবার নয় তাই হচ্ছে। কিডনি নষ্ট হচ্ছে; হচ্ছে হাই প্রেসার; ক্যান্সার আর হার্ডষ্টোকে অহরহ মরছে মানুষ।আমাদের অতি আদুরে সন্তানেরা অকালে ঝরে যাচ্ছে এসব অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে। প্রতিটি খাবারে মেশানো হচ্ছে বিষ। আর সেই বিষ খেয়ে আমরা আর বেঁচে নেই। জীবিত থেকেও লাশ হয়ে গেছি। এ যেন জিন্দা লাশ। রোগে শোকে কয়েকটা দিন বেঁচে থাকা এই আরকি। প্রতিনিয়তইতো বিষ খাচ্ছি। ক’দিন আগে এক বিখ্যাত কলামিষ্ট তার লেখায় লিখেছিলেন- আমরা প্রতি জনে; প্রতি ক্ষনে; জেনে শুনে করেছি বিষ পান। আরেক জন লিখেছেন- ‘কত কিছু খাই ভস্ম আর ছাই’। বুবুজানেরা আর ভেজাল খেতে চাই না। সর্বদাই নির্ভেজাল খাবার চাই। আপনারা দেশবাসীর জন্য সে খাবারের নিশ্চিত করুন।
উপসংহার:
উপরোক্ত আলোচনায় বুঝা যায় দেশে সন্ত্রাস, ভেজাল খাদ্য, সর্বগ্রাসী মাদক আর দুর্নীতি কিভাবে ঘাপটি মেরে আছে। আমাদের রাষ্ট্রের এটা চরম ব্যধি। তা থেকে রাষ্ট্রকে রক্ষা করা না গেলে দেশের সার্বিক ভবিষ্যত খুবই শংকাজনকই মনে হচ্ছে। যেহেতু এদেশে দু’ধারার রাজনীতি চলমান। একটি বাম; অন্যটি ডান পন্থি হিসেবে পরিচিত। একটির নেতৃত্বে আছে আওয়ামীলীগ অন্যটির নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। এ প্রধান দু’দলের এবং দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়া চাইলে; তাদো সদইচ্ছা থাকলে এ দেশ মাদকমুক্ত, ভেজালমুক্ত; দুর্নীতিমুক্ত সোনার দেশে পরিনত হবেই হবে। পরিশেষে বুবুজানদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই মিনতি ‘আপনারা সন্ত্রাস, ভেজাল, দুর্নীতি আর মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হউন। দলের জন্য, নিজের জন্য আর রাজনীতির জন্য রাজনীতি নয়। দেশের কথা ভাবুন; দেশের জন্য রাজনীতি করুন। সংঘাত পরিহার করে সুস্থ সুন্দর জাতি বাঙ্গালীকে উপহার দিন।”
(লেখক- মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক, কলামিষ্ট ও সম্পাদক- নিউজ-বাংলাদেশ ডটকম।)

e-mail-newsstore09@yahoo.com

অতিথি লেখক