জলবায়ু কৌশলের জন্য চাই নতুন নেতৃত্ব ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গীঃ সেমিনারে বক্তারা
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্কঃ ৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কর্মরত কয়েকটি অধিকারভিত্তিক সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে “বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ও আমাদের ভবিষ্যত” শিরোনামে একটি সেমিনার ও “জীবন/ সময় ০৩” শিরোনামে বাংলাদেশে জলবায়ু তাড়িত মানুষ ও জীবন নিয়ে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। আলোকচিত্রী দীন মোহাম্মদ শিবলী’র একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। আজ সকাল ১০.০০ টায় শুরু হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে অদূর ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য চাই নবীন নেতৃত্ব, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের, যাদের রয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গী, যার ভিত্তিতে তারা যথোপযুক্ত কৌশল নির্ধারণ করতে পারবে।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রফেসর ড. আমানত উল্লাহ খান এবং এসোসিয়েট প্রফেসর ড. মাকসুদুর রহমান, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আহসান উদ্দীন, সাপ্তাহিকের সম্পাদক গোলাম মোর্তজা এবং টিআইবি’র জাকির হোসেন খান। সেমিনার সঞ্চালনা করেন ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরী। সেমিনারের শুরুতে বাংলাদেশের জলবায়ু তাড়িত মানুষ ও জীবনের উপর তোলা আলোকচিত্র-র বিবরণ দেন আলোকচিত্রী দীন মোহাম্মদ শিবলী। বেলা ১২.৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের উদ্বোধনের মাধ্যমে শুরু হয় আলোকচিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে আলোকচিত্রী দীন মোহাম্মদ শিবলীর গত ১০ বছর ধরে তোলা বাংলাদেশের উপক’ল ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত উপদ্রুত এলাকার মানুষ ও তাদের জীবনের উপর মোট ৫৪ টি ছবি প্রদর্শন করা হয়। সকালের সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. আমানত উল্লাহ খান বলেন, আমাদের দেশে জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাব সম্পর্কিত বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্যের অভাব রয়েছে। সহকারী প্রক্টর ও একই বিভাগের শিক্ষক ড. মাকসুদুর রহমান বলেন, উন্নয়নশীল দেশ বিশেষ করে বাংলাদেশের নগরগুলোতে জলবায়ু তাড়িত মানুষ এসে জড়ো হচ্ছে কিন্তু নগর তাদের থাকার জায়গা দিতে পারছে না। এই অবস্থা থেমে মুক্তির জন্য পরিকল্পনার পাশাপাশি নতুন নেতৃত্বও প্রয়োজন। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আহসান উদ্দীন তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের দেশে জলবায়ু সংক্রান্ত বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্যের চাহিদাটি অত্যন্ত মৌলিক। এ বিষয়ক পর্যাপ্ত জ্ঞানই পারে জাতিকে কখন কী করণীয় সে সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দিতে। কেবল তখনই আমরা জলবায়ু মোকাবেলায় সক্ষম হতে পারব। তিনি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধির কারণে ঝড় জলোচ্ছ্বাসের পরিমাণ বাড়তে থাকবে, দক্ষিণ উপকূল ছাড়িয়ে উত্তরের দিকে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাবে এবং ইতিমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ধীর প্রভাবগুলো বাংলাদেশে একে একে উন্মোচিত হচ্ছে। সাপ্তাহিকের সম্পাদক সাংবাদিক গোলাম মোর্তজা তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের এটা আশা করে বসে থাকা ঠিক হবে না যে ধনী দেশগুলো সহায়তা দিয়ে আমাদেরকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উদ্ধার করবে। তিনি স্থানীয়ভাবে সম্পদ সংগ্রহ করে দুর্নীতি মুক্ত একটি নিজস্ব ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্বারোপ করেন, যার নেতৃত্ব দেবে আজকের অগ্রসর শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজ। টিআইবি’র জাকির হোসেন খান বলেন, শুধু সরকার নয়, উন্নয়ন সংগঠনগুলোরও উচিত বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গী ও একটি দুর্নীতিমুক্ত দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে জলবায়ু মোকাবেলায় আমাদের নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করা।