উন্মূক্ত জনসমাগমস্থল, খেলার মাঠ, পার্ক সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের আহ্বান
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ শহরে মানুষ যত বেশি ঐচ্ছিক কাজ যেমন বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাত করা, চারপাশের প্রকৃতি ও পরিবেশ দেখা, অন্যান্যদের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ এর জন্য সময় ব্যয় করবে ততই সামাজিকীকরণের সুযোগ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু নগরে প্রতিটি এলাকায় উন্মূক্ত জনসমাগমস্থল না থাকায় মানুষ হয়ে পড়ছে ঘরবন্দী এবং অবশ্যিক কার্যকলাম যেমন অফিস, স্কুল, বাজার করার জন্যই বাইরে গিয়ে থাকে। যা সৃষ্টিশীলতার ক্ষেত্রেও বাধাস্বরূপ এবং সমাজে মাদকের ব্যবহার ও অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। উন্মূক্ত জনসমাগমস্থল, খেলার মাঠ ও পার্ক সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন করার পাশাপাশি সড়কের পাশে সময় কাটানোর মত ছোট ছোট কর্মকান্ডের সুযোগ রাখা, ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, সাইকেলের ব্যবহার বৃদ্ধি, হাঁটার সুবিধা সৃষ্টি করার মাধ্যমে শহরগুলোকে পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানী সাশ্রয়ী করা সম্ভব। ২৮ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১ টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর উদ্যোগে ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং সেন্টারে Challenge City of Tomorrow: Improving a Public Space শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
উক্ত সভায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষাথী কাশফিয়া নেহরীন পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে ধারণাপত্র উপস্থাপনা করেন। উল্লেখ্য সে এবং তার অপর দুই সহপাঠী কর্তৃক গঠিত “স্টারলেটস্” নামক একটি দল গত মাসে প্যারিসে স্টুডিকা নামক সংগঠন কর্তৃক অনুষ্ঠিত সবুজ নগরী গঠন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ১৭০টি দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে দ্বিতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। সেখানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে কিভাবে জ্বালানী সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব করা যা সে রকম একটি নকশা উপস্থাপন করার মধ্য দিয়েই তাদের এই অর্জন। কাশফিয়া নেহরীন এর উপস্থাপনায় মোট চারটি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে বুয়েট ক্যাম্পাসের লাইব্রেরির সামনে ফাঁকা জায়গাটিতে পুকুর খনন করা; আর্কিটেকচার ও ইউআরপি ভবনের পেছনের খালি জায়গাটিতে সবজির বাগান করা, যেখানে কাজ করবে শিক্ষার্থীরাই; ক্যাম্পাসের সিভিল ভবন, ইএমই ভবন, আর্কিটেকচার ভবনের ছাদগুলোতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা, যেখানে পাইপ দিয়ে বৃষ্টির সঞ্চিত পানি ভূগর্ভে প্রবেশ করিয়ে ভূ-গর্ভস্থ পানির উচ্চতাও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে; বুয়েট ক্যাম্পাসে সাইকেলে যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি এবং ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার বন্ধ করা; আরো রয়েছে ক্যাফেটরিয়ার সামনে “এনার্জি কনভার্টার স্লাইড” বসানোর প্রস্তাব, যা হাঁটার মাধ্যমে শক্তিকে বিদ্যুতে রূপান্তর করবে।’
সভায় বক্তারা উক্ত নকশার উপর ভিত্তি করে বাংলাদশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সকলের সামনে দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। যা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস এবং নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অনুসরণীয় হবে। তবে এজন্য নীতি নির্ধারকদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হয়। উল্লেখ্য সভার শুরুতে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে কাশফিয়া নেহরীনকে তার অর্জনের জন্য ফুলের শুভেচ্ছা ও সংগঠনের প্রকাশনার একটি সেট প্রদান করা হয়। নীতি বিশ্লেষক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার মারুফ রহমান। বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী মুক্তি, উন্নয়ন কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজিব, স্কোপ এর নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর সদস্য এ কে এম সিরাজুল ইসলাম এবং ইকো সোসাইটি এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার অনুতোষ চ্যাটার্জি প্রমূখ।