৭ দিনের অবরোধ!
রিয়াদ হাসান,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ সমঝোতার স্বার্থে আলোচনা; দাবি আদায়ে আন্দোলন- দুই নীতি নিয়ে চলছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। এরই অংশ হিসেবে আগামী ১৭ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে ৭ দিনের অবরোধ কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে বিরোধী এই জোট। এ সময়ের মধ্যে সমঝোতা সম্ভব না হলে ২৬ ডিসেম্বর থেকে অসহযোগ আন্দোলনে যাচ্ছে ১৮ দলীয় জোট। আর সে কর্মসূচিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরাসরি মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তবে জাতিসংঘ দূতের তাগিদায় শুরু হওয়া সংলাপে আপাতত সমঝোতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। যদিও ইতোমধ্যে সে সংলাপের ফলাফল বিএনপি নেতাদের কাছে নেতিবাচক রূপেই ধরা দিয়েছে। তারানকোর ঢাকা ত্যাগের পর জাতিসংঘের ঢাকার আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকারের উপস্থিতিতে শুক্রবার গুলশানে তৃতীয় দফা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শেষে উভয় দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘তারা সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাবগুলো নিয়ে নিজেদের দলীয় ফোরামে আলোচনা করবেন।’ আওয়ামী লীগের দেয়া প্রস্তাব নিয়ে শুক্রবার রাতেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেন দলের শীর্ষ চার নেতা। প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকে বেগম খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের প্রস্তাব বিষয়ে কি বলেছেন, কেউ তা বলতে বিএনপির কোনো নেতা রাজি হননি। তবে বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান ও ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীকে ততটা আশাব্যঞ্জক মনে হয়নি। সরকারি দলের সমঝোতা প্রস্তাবে বিএনপি যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে বিএনপির এক শীর্ষ নেতা পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আওয়ামী লীগ কী সমঝোতায় চায়? আমরা তো চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিজেদের পক্ষ থেকে অনেকগুলো প্রস্তাবও দিয়েছি। এখন তারা প্রস্তাবগুলো মানলেই দুদলের মধ্যে সমঝোতা সম্ভব।’
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে রেখে কোনোভাবেই নির্বাচনে যেতে রাজি নন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এজন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতার ‘আংশিক’ লোপ করার প্রস্তাবে সাড়া দেননি খালেদা জিয়া। বরং বিএনপি থেকে দেওয়া তিনটি প্রস্তাবের যে কোনো একটি মানতে দলের নেতাদের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সূত্র জানায়, নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনার বিকল্প হিসেবে বৈঠকে আওয়ামী লীগের তিনজনের নাম প্রস্তাব করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা হলেন- রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, স্পিকার শিরিন সুলতানা এবং সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) একে খন্দকার বীর উত্তম। তবে বিএনপির প্রথম পছন্দ রাষ্ট্রপতি। সমঝোতায় পৌঁছাতে বিএনপি নেতারা দৌঁড়ঝাপ করলেও আন্দোলন থেকে পিছিয়ে থাকতে রাজি নন বিরোধী জোট। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ২৬ নভেম্বর থেকে শুক্রবার ছাড়া তিন দফায় ১৫ দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।