র‍্যাব বিলুপ্তির দাবি নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

র‍্যাব বিলুপ্তির দাবি নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

সৌরভ চৌধুরী,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ বাহিনী র‍্যাব বিলুপ্তির দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, র‍্যাব এখন প্রতিষ্ঠিত একটা বাহিনী হিসেবে কাজ করছে এবং বাহিনীটির কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জাপান সফর শেষে ঢাকায় ফেরার একদিন পর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন। নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণের পর খুনের ঘটনায় র‍্যাবের সাবেক তিনজন কর্মকর্তা গ্রেফতার রয়েছেন। কিন্তু সেই ঘটনাকে ঘিরে র‍্যাবের বিরুদ্ধে গুম,অপহরণের বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বিএনপি নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া র‍্যাব বিলুপ্তির দাবি তুলেছেন। নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত র‍্যাবের দু’জন কর্মকর্তা। এরপরই বিএনপি এই বাহিনী বিলুপ্তির দাবি জানায়। তাঁর নেতৃত্বাধীন বিএনপি জোট সরকারের সময়ই র‍্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তখন আবার আওয়ামী লীগ ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যার অভিযোগ তুলে র‍্যাব বিলুপ্তির দাবি করেছিল। এখন বিএনপি নেত্রীর র‍্যাব বিলুপ্তির দাবি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দিনের পর দিন র‍্যাবকে ব্যবহার করে তারা যখন মানুষ হত্যা করেছে, তখনতো কেউ টু-শব্দ করেননি। এখন র‍্যাবের কেউ কোন অন্যায় করলেই আমরা তার বিচার করছি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন চলতে চলতে র‍্যাবকে একটা প্রতিষ্ঠানে দাঁড় করানো হয়েছে। এখনই চট করে বললেতো র‍্যাব বাতিল করা সম্ভব নয়। আগে আমার মতামত শুনলে আজকে আর এমন অবস্থা হতো না। এটাই বাস্তবতা।

তিনি নারায়ণগঞ্জে এবং ফেনীতে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন। জাপান সফরের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন হলেও মূলত: সাম্প্রতিক ঘটনা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। কয়েকদিন আগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, তাঁরা আন্দোলন গড়তে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারকে পচার জন্য আরেকটু সময় দিতে চান। সে প্রসঙ্গও এসেছিল সংবাদ সম্মেলনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উনি যে নির্বাচন না করেই পচে যাচ্ছেন। এখনতো ফরমালিন দিয়ে তাজা রাখা হচ্ছে। আমরা বিএনপিকে ফরমালিন দিয়ে তাজা রাখছি। না হলে এত কথা বলে কি করে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার প্রশ্নে আইনমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে যে, সরকার জামায়াতের বিচারের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসছে। আইনমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট আইনে ত্রুটির পাশাপাশি জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে আপিল বিভাগে মামলা বিচারাধীন থাকার কথা তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রীও উচ্চ আদালতে মামলার কথা উল্লেখ করেছেন।
একইসাথে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং রায় কার্যকর করা শুরু করেছি। আপনারা জানেন যে,কাদের মোল্লার ফাঁসি যাতে কার্যকর করা না হয়, সেজন্য আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন কেরি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ফোন করেছেন। বাংলাদেশের কোন লোকটা আছে যে, এ ধরণের ফোন পেলেও নীতিতে অটল থেকে কাজ করতে পারবে। সে সাহস আমরাই দেখিয়েছি। কাজেই বিচার হচ্ছে এবং হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে। অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতের নতুন সরকারের সাথে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার কতটা ভাল সম্পর্ক রেখে এগুতে পারবে-এই প্রশ্নও এসেছিল। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুই দেশই তাদের সম্পর্ক বজায় রেখে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানে কাজ করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

বিশেষ প্রতিনিধি