যানজট হ্রাসে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণের দাবি
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ঢাকা শহরে অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রাইভেট কার বৃদ্ধির ফলে যানজট, জ্বালানী ব্যয়, দূষণ, অসুস্থতা ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকায় যানজটের কারণে বছরে প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। ২০০২ সালে টু-স্ট্রোক চালিত থ্রি হুইলার বন্ধ করার পর বায়ূর মান কিছূটা ভালো হলেও অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রাইভেট কারের বৃদ্ধি বায়ূর মান পূর্বের চেয়ে খারাপ হয়েছে। এমতবস্থায় প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণে পাবলিক বাসে সেবামান বৃদ্ধিতে “জাতীয় সমন্বিত বহুমাধ্যম ভিত্তিক পরিবহন নীতিমালা, ২০১৩” নীতিমালা অতি দ্রুততার সাথে বাস্তবায়ন জরুরী। বিশ্ব কারমুক্ত দিবস উপলক্ষে আজ সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি), মাদক বিরোধী সংগঠন (প্রত্যাশা), নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, নাগরিক অধিকার সংরক্ষন ফোরাম, অরুণোদয়ের তরুণ দল, মাস্তুল, মাধবিকা, এলআরবি ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটি, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ৯.০০ টায় জাতীয় যাদুঘর, শাহবাগ থেকে হাইকোর্ট এর জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত র্যালি শেষে আলোচনা পর্বে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
সচেতনতামূলক র্যালি পরবর্তী আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। সঞ্চালনা করেন নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান ইবনুর সাঈদ রানা। বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার মারুফ রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, , প্রত্যাশা’র নির্বাহী পরিচালক হেলাল আহমেদ, এনামূল হক, সমাজ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এর নির্বাহী পরিচালক, মাস্তুল এর কাজী রিয়াজ, অরুণোদয়ের তরুণ দল এর সভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবু, মাধবিকা’র নির্বাহী পরিচালক আবুল রাজ্জাক, এলআরবি ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক সুলতানা রাজিয়া প্রমুখ। মারুফ রহমান বলেন, ২টি প্রাইভেট কার একটি বাসের সমান জায়গা নেয়। প্রায়শই দেখা যায় প্রাইভেট গাড়িতে একজন যাত্রী চলাচল করে বা ফাঁকা থাকে। একটি বাসে একটি ট্রিপে রুটের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় ২০০ যাত্রী বহন করে। প্রাইভেট কার পার্কিং এর জন্যও ১৬০ বর্গফুট জায়গা নেয় এবং ৯০ ভাগ সময় পার্কিং অবস্থায় থাকে। তিনি বলেন, “জাতীয় সমন্বিত বহুমাধ্যম ভিত্তিক পরিবহন নীতিমালা, ২০১৩” তে “৪.৮.১ প্রাইভেট কার নিরুৎসাহিত করার জন্য বাস সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার সৃজনীশল উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে যাতে বাসসমূহ পরিচ্ছন্ন, অধিকতর আরামপ্রদ, নির্ভরযোগ্য ও কারের একটি আকর্ষণীয় বিকল্প মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়;” এরকম সুষ্পষ্ট দকি নির্দেশনা রয়েছে। যানজট হ্রাসে এর বাস্তবায়ন জরুরী। মিহির বিশ্বাস বলেন, আমাদের মত সাধারন মানুষের টাকায় প্রাইভেট কার বান্ধব প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। যা আমাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোন উপকারে আসছে না। তিনি বলেন, বিদ্যমান নীতিমালায় এক পবিহন মাধ্যম হতে অন্য মাধ্যমে স্থানান্তরে যাত্রীগণ যাতে পায়ে হেঁটে এক মাধ্যম হতে অন্য মাধ্যমে আরোহনের সুযোগ পায় এ লক্ষ্যে ইন্টারচেইঞ্জসমূহ স্বল্প দূরত্বে নির্মাণ করার কথা রয়েছে, যা বাস্তবায়ন করতে হবে। ইবনুর সাঈদ রানা বলেন, ঢাকার শহরে আমাদের সবাইকে যাতায়াত করতে গিয়ে পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। যানজট নিরসনের নামে গণপরিবহন ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ফলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে যানজট এর মাত্রা বেড়েই চলেছে। হেলাল আহমেদ বলেন, সারা বিশ্বে যখন প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে সেখানে আমরা চলছি উল্টো পথে। নগর পরিকল্পনা মানুষের জন্য হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে মানুষকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। আমরা আমরা সকলেই বুঝতে পারছি প্রাইভেট কার আমাদের যানজট সৃষ্টিতে অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও আমরা এ বিষয়ে দৃঢ় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছি না। প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণে পাবলিক বাসে সেবামান বাড়াতে হবে। আবু নাসের খান বলেন, আবু নাসের খান বলেন, ঢাকা মেট্রেপলিটন এলাকায় প্রাইভেট কারে মাত্র ৩.৮ শতাংশ চলাচল হয় কিন্তু সড়ক পথের প্রায় ৭০ভাগ স্থান দখল করে রাখছে। অথচ বাস, রিকশা, সাইকেল ও হেঁটে ৯৬.২ শতাংশ যাতায়াত হলেও মাত্র ৩০ভাগ সড়ক ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে। যে মাধ্যমে যতটুকু যাতায়াত হয় সড়কে তাকে ততটুকু জায়গা দিতে হবে। নীতিমালা অনুযায়ী পথচারীদের জন্য পায়ে হেঁটে চলার পরিবেশের মানোন্নয়ন, বিশেষত শিশু, মহিলা, বয়স্ক এবং শারীরিক বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের (Physically Challenged) ব্যবহার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিকরার কথা বলেন।