চাঁদোয়া…

তালাত মাহমুদ যখন গাইতে থাকেন,”চাঁদের এতো আলো তবু সে তোমায় যাচে………”তখন একটু উলোট-পালোট হয় ঘর-দরজা কড়িকাঠে । বাবা বলতেন ,”কখনও কোথাও যাবোনা তোকে ছেড়ে….”!!!হা হা হা……। এখন বাবার মতো অচেনা কে আর !আরশি নগরের পড়শি;বসতে পারাণি কড়িও দেয়না তেল ও পায়না । এমন সময় সেই কিশোর বেলার টানে কানে ভাসলো আরো একটি গান। চাঁদের সাথে আমি দেবোনা তোমার তুলনা ,তুমি দূরে চলে যাবে”।
এই দূরত্ব শব্দটি বেশ । অনেকটা গিরগিটির মতো । দূরত্ব মানে একটা সময়ের অপেক্ষা কখনও ভালো-মন্দের মাঝে উত্তরণের সমীক্ষা কখনও আপন খড়কূটোয় আপন অভিমান আবার কখনও অচেনা ! আরো বলা যায় হয়তো ,বলতে গেলেই তো পথ হয়।পথ হলে রথ আর রথ মানেই কেউ একজন মুচকি হাসেন । তিনি হাসেন বলেই শক্তি পাওয়া,বেঁচে থাকা,সংষত থাকা আর অতি অবশ্যই লড়াই করে বেঁচে থাকা । পূজন’দা বলেন লড়াই মানেই জীবন । জীবন মানেই লড়াই । এই মুহূর্তে চাঁদটার গায়ে লক্ষ কোটি ছিদ্র ,পোড়া গন্ধে চারপাশ ছেয়ে আছে । ঝলসানো রুটি??? আহা ! কী তৃপ্তি । মুখে বলা হয়নি কখনও ।তবে লিখতে দোষ কী ?! পড়বেন তো সেসব অন্তরঙ্গ ছায়ামুখ যাদের স্নেহছায়া থাকে নিরবে আবার তাদের মুখরতায়ও পাই মুগ্ধমন্ত্র , এগিয়ে যায় ……
শেষে চাঁদ নিয়ে আর একটি গানের কথা না বললেই নয় ! এস.আই.টুটুলের গাওয়া,”আমার মরণ চাঁদনি পসর রাইতে যেনো হয় …”দয়াময় তো আছেন। আর আছেন বলেই বাসে-ট্রাকে-ট্রেনে পুড়ছি । আমরা আমাদেরকে বলছি,”মানুষ পুড়ছে।” ঐ দুইজন নোয়াখালী….আজ সাত জন কুমিল্লা …পরশুর বাপ/বেটি/মা যশোরের ! লোক পুড়ছে কখনও মানুষ পুড়ছে কখনও দরিদ্র ও ঋণগ্রস্থ দেশের সম্পদ পুড়ছে । কেনো বলছিনা আমরা পুড়ছি! আসলে এসব প্রেমের মতোই “ওপেন সিক্রেট”! মাঝে মাঝে যা কিনা নিজেই বোঝা যায় না , আর যা বুঝিনা তা বোঝানো বড় দায় ।বড় যন্ত্রণা ।
এরপর চাঁদে আর একটি নিরপেক্ষ যন্ত্র পাঠাতে চাই যে আমাদের মানে এই চাঁদনী হাহাকারে ডুবন্ত মানুষদের কিছু ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠাতে পারবে । সেই যন্ত্রটিকে তখন বিশ্বাস করবো তো ! বিশ্বাসে তখন ফরমালিন দেওয়া হবেনা নিশ্চয়! আশা করছি ।
ক্ষমা-ঘেন্নায় উতরে যায় বলেই লিখতে চেষ্টা করি ।
রবির কাছে যাই এবার?
“আমারে যে জাগতে হবে
কে জানে সে আসবে কবে
যদি আমায়
যদি আমায় পড়ে তাহার মনে
আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে……”
[কাজরী তিথি জামান: প্রাবন্ধিক।।]