সোয়াইন ফ্লু: অবহেলা নয়,সচেতনতা জরুরী

সোয়াইন ফ্লু: অবহেলা নয়,সচেতনতা জরুরী

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ: 

সম্প্রতি ভারতে মহামাররি আকার ধারণ করেছে এইচওয়ানএনওয়ান ভাইরাস (সোয়াইন ফ্লু)। দেশটিতে এ বছর সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার,আর এ ভাইরাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে নয় শতাধিক মানুষের। প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় এ ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশও। এর আগে ২০১০ সালে সোয়াইন ফ্লুর সংক্রমণে ভারতে প্রায় ১ হাজার ৭০০ মানুষ মারা যায়। এবার দেশটির রাজ্যগুলির মধ্যে রাজস্থান আর গুজরাটের পরিস্থিতিই সব থেকে ভয়াবহ। বাংলাদেশসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামেও দেখা দিয়েছে সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাব। তবে অন্য এলাকার তুলনায় তা কম। পশ্চিমবঙ্গে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ জনের বেশি। আর এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫জন।

ভাইরাসের আক্রমণ: গত বছরের মার্চে আফ্রিকার দেশগুলোতে দেখা দিয়েছিল ইবোলা ভাইরাস। এর মধ্যে লাইবেরিয়া,সিয়েরা লিওন এবং গিনিতেই এই ভাইরাস মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই বছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসে পশ্চিম আফ্রিকায় মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়ায়। আর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয় প্রায় ১৪ হাজার মানুষ। ওই সময় এ ভাইরাস ঠেকাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর,শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয় সরকার। পশ্চিম আফ্রিকার গিনি,লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওন থেকে যেসব যাত্রী ওই সময় এসেছেন,তাদের জন্য আলাদা অভিবাসন ডেস্ক খোলা এবং যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ইবোলা ভাইরাস ঠেকাতে সরকারের ওই সময়ের সকল পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ছিল। এবারও সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে,এমনটাই প্রত্যাশা দেশবাসীর। তবে চিন্তার বিষয় হচ্ছে,ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়েছিল পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে,আর সোয়াইন ফ্লু দেখা দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। অর্থাৎ ভৌগোলিক অবস্থার কারণে উভয় দেশের মানুষের যাতায়াতব্যবস্থা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্থলপথে। ভারতের সঙ্গে বিস্তৃত সীমান্ত এলাকা এবং অনেকগুলো বন্দর থাকায় বাংলাদেশ সোয়াইন ফ্লু’র বিষয়ে অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে,আমাদের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং দুই দেশের প্রবেশদ্বারগুলোতে ঠিকমতো নজরদারি করা হচ্ছে কি না? স্থানীয়রাই বা ভাইরাসটি সম্পর্কে কতটা সচেতন? যদিও এ বিষয়ে এরই মধ্যে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি  বলেছেন, ‘সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সোয়াইন ফ্লুসহ যেকোনো সংক্রামক রোগের বিস্তার মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রস্তুত। এ রোগের বিস্তার প্রতিরোধে ইতিমধ্যে সীমান্ত এলাকার জেলাগুলোসহ সকল জেলা পর্যায়ে মেডিক্যাল সার্ভিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুত রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’ তবে পরিতাপের বিষয় হচ্ছে,স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও অনেক স্থানেই তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থলবন্দর এবং সমুদ্রবন্দরগুলোতে নজরদারি চলছে ঢিলেঢালাভাবে। এ ছাড়া দেশের প্রবেশদ্বারগুলোর বেশিরভাগে বিদেশি যাত্রীর রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার অবকাঠামোগত ব্যবস্থা একেবারেই দুর্বল। ফলে ভারতের সঙ্গে বিস্তৃত সীমান্ত এলাকা এবং একাধিক বন্দর থাকায় বাংলাদেশ সোয়াইন ফ্লুর বিষয়ে অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়ই রয়েছে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট: বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ২০০৯ সালের জুন মাসে বিশ্বের ৭৪ টি দেশে নতুন H1N1 ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উপস্থিতির কারনে এই রোগের সাম্প্রতিক অবস্থাকে বিশ্বব্যাপি মহামারি (Pandemic) বলে চিহ্নিত করেছে। বিশ্বস্বাস্থ সংস্থার মতে সাম্প্রতিক এই সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা মানব ইতিহাসের সবচাইতে আগে হতে এবং বেশি পর্যবেক্ষণ করা মহামারি। বিভিন্ন প্রানিতে বিভিন্ন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস পাওয়া যায়। মানুষের জন্য ক্ষতিকর হলো ইনফ্লুয়েঞ্জা ‘এ’ ভাইরাস। সাধারণত একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্টিতে (community) ভাইরাসের যেই ধরনটি (strain) অনেকদিন ধরে বিরাজ করে সেটির বিরুদ্ধে ঐ জনগোষ্টির অধিকাংশ মানুষের দেহে প্রতিরোধ (Immune Defense) ব্যবস্থা গড়ে উঠে বিধায় কোন জনগোষ্টিতে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস পাওয়া গেলও তা মহামারী (Epidemic) ঘটায় না। নতুন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উদ্ভব হলে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অভাবে নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনগোষ্টি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আক্রান্ত হয়। নতুন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উদ্ভব হতে পারে দুই প্রকারে: অ্যান্টিজেনিক সিফট (Antigenic Shift),অথবা অ্যান্টিজেনিক ড্রিফট (Antigenic Drift)।

সোয়াইন ফ্লু কি?: শুকরের মাঝে যেই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস পাওয়া যায় তাকে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস বলে। এরই ফলশ্রুতিতে এই ধরনের ভাইরাস দ্বারা ঘটিত ফ্লুকেও সোয়াইন ফ্লু বলে। ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে যেই ফ্লু মহামারীর আভাস পাওয়া গেছে তাকে সোয়াইন ফ্লু বলা হয়েছে,কারণ শুকর,পাখি ও মানুষের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের জিনের মিশ্রণের ফলেই সেটির উদ্ভব বলে মনে করা হয়৷ ফলে শুকরের মাঝে পাওয়া যাওয়া এই ভাইরাসটি মানুষের মাঝেও সংক্রমন করতে পারছে। যেহেতু মানব গোষ্টিতে এই ভাইরাস আগে ছিল না বিধায় এর বিরুদ্ধের প্রতিরোধের অভাবে কিছু মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। তবে ঋতুকালীন ইনফ্লুয়েঞ্জার (Seasonal Flu) উপসর্গ ও সোয়াইন ফ্লুর উপসর্গ মানুষের মধ্যে প্রায় একই রকম৷ কফ, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, শরীরে ব্যথা, শীতশীত লাগা ও ক্লান্তি- এসবই হলো উপসর্গ (Syndrome)৷ ঋতুকালীন ফ্লু প্রতিবছরই জনসাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায়৷ সারা পৃথিবীতে এতে মারা যায় ২.৫-৫ লাখ মানুষ৷ আপাতত নতুন ফ্লু ভাইরাস নিয়ে বড় রকমের আতঙ্কের কারণ নেই৷ সারা বিশ্বেই যে এর প্রতিরোধে এখন অনেক বেশি প্রস্তুত৷

ইতিহাস: ১৯১৮ সালে যে ফ্লুর মহামারি হয়েছিল স্পেনে, এতে মারা গিয়েছিল ৫ কোটি মানুষ৷ সেই ভাইরাসটি ছিল ইনফ্লুয়েঞ্জা এ H1N1। ১৯৫৭ সালে এশিয়ান ফ্লুতে মারা যায় দুই মিলিয়ন লোক৷এর মূলে ছিল ইনফ্লুয়েঞ্জা এ H2N2। মানুষ ও বুনোহাঁসের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংমিশ্রনে এই ধরনটির উদ্ভব হয়। ১৯৬৮ সালে হলো যে প্রাদুর্ভাব, হংকংয়ে যা ধরা পড়ল, H3N2 প্রজাতি ছিল এর মূলে৷ এতে মারা গেল পৃথিবীজুড়ে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। তবে বর্তমানে ফ্লু রোগের বিরুদ্ধে আন্তর্জার্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের ও সংস্থার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস থাকায় মানবজাতির নতুন ফ্লু ভাইরাস হতে আগে চাইতে অনেক অনেক বেশি সচেতন।

সনাক্তকরনেরউপায়: সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য প্রথমেই সন্দেহভাজন ব্যক্তির লালা, নাসিকা রসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত নমুনা ভাইরার ট্রান্সপোর্ট মিডিয়া (VTM)-এ সংরক্ষণ করে নমুনা পরীক্ষণ গবেষণাগারে (Diagnosis lab) নিয়ে আসা হয়। পরবর্তিতে নমুনা হতে নিউক্লিক অ্যাসিড এক্সট্রাক্সন (Nucleic Acid Extraction) করা হয়। তারপর রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পিসিআরের মাধ্যমে নমুনাতে সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়। বর্তমানে অত্যাধুনিক রিয়েল টাইম রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পিসিআর (Real Time RT PCR) এর মাধ্যমে খুব দ্রুত ভাইরাসের উপস্থিতি ও সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।

যেভাবেমানুষেরদেহেসোয়াইনইনফ্লুয়েঞ্জাছড়ায়: মানুষ, শূকর ও পাখির সংমিশ্রনে উদ্ভব হওয়া ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই রূপটি সম্পর্কে ধারণা করা হয় এটি শূকরের মাধ্যমে মানুষকে আক্রান্ত করেছে। ইতি পূর্বের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে এটির পার্থক্য হচ্ছে এই যে, সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে সক্ষম। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে যা দেখা যায় নি। যেহেতু ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মানব শরীরে ঢুকবার স্থান (Portal of entry) শ্বাসনালী, বিধায় সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসও শ্বসনের মাধ্যমে ছড়ায়। শ্বাস নালীর উপরের অংশে (Upper respiratory tract) এটি স্থান নেয়। আক্রান্ত মানুষের হাচি, কাশি প্রভৃতির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। শুধু তাই নয়, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত নির্জীব বস্তু যেমন রূমাল, দরজার হাতল, প্রভৃতির মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি উপসর্গ স্পষ্ট হওয়ার ১ দিন পূর্ব থেকে আক্রান্ত হওয়ার ৭ দিন বা ততোধিক দিন পর্যন্ত অন্যকে আক্রান্ত করতে পারে। তবে খাদ্য বা রক্তের মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ছড়ায় না।

মানুষেরমধ্যেসোয়াইনফ্লুএরবিভিন্নলক্ষণ: সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গসমূহ অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের মতই। সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের মধ্যে জ্বর হওয়া, মাথা ব্যথা, গলা ও শরীর ব্যথা, শ্বাস কষ্ট, ক্ষুদামন্দা ও আলস্যবোধ করা, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি অন্যতম।

কাদেরজন্যবিপদজনক: যে সকল মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বিশেষ করে শিশু ও বয়বৃদ্ধদের জন্য সোয়াইন ফ্লু বেশী বিপদজনক। এছাড়া হাঁপানী এবং হৃদরোগ আক্রান্ত মানুষেরও এ ফ্লু সম্পর্কে বিশেষ সাবধান থাকা উচিত। তাছাড়া যারা এমন রোগে ভুগছেন যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায় যেমন, এইডস তাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকা উচিত।

সোয়াইনইনফ্লুয়েঞ্জাপ্রতিরোধ: সোয়াইন ফ্লু থেকে নিজেকে দূরে রাখতে শরীর সুস্থ রাখার সব রকম চেষ্টা করতে হবে। সেই সাথে নিজের ফ্লু হলে তা যেন অন্যকে আক্রান্ত না করে সেই ব্যাপারে সচেতন থাকা আবশ্যক। যে সমস্ত কাজ সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে,

  • অসুস্থতার সময় হাচি বা কাশির সময় মুখে রুমাল ব্যবহার করুন।
  • ফোমাইট (Fomite) বা নির্জীব বস্তু যেমন দরজার নব, কম্পিউটারের কী বোর্ড, মাউস প্রভৃতি নিয়মিত জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার রাখুন।
  • কফ ও শ্লেষ পরিষ্কার করার জন্য টিস্যু পেপার ব্যবহার করা এবং ব্যবহারের পরে নিরাপদ স্থানে ফেলুন।
  • সব সময় সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে পরিষ্কার রাখা বিশেষ কফ ও শেষ পরিষ্কার করার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন। সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সময় অবশ্যই অন্তত ২০ সেকেন্ড ব্যাপি সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। তারপর ভাল মত পানি দিয়ে সাবান সরাতে হবে।
  • রোগাক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকুন।
  • আক্রান্ত হলে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করুন।
  • আক্রান্ত হলে স্কুল, কলেজ অথবা কর্মস্থলে না গিয়ে বাড়ীতে, অন্যদের থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকুন, যাতে অন্যরা আক্রান্ত না হয়।

শেষ কথা: বিশেষজ্ঞদের মতে,‘সোয়াইন ফ্লু’ মূলত শূকরের ইনফ্লুয়েঞ্জা,যা প্রধানত শূকরের দেহে দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে৷ আর এটি সাধারণত শূকরের দেহ থেকেই মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়। ছোঁয়াচে সোয়াইন ফ্লুর ভাইরাস মূলত জনসমাগমের স্থানে ভিড় করা মানুষের হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। কেবল সর্দিকাশি ও জ্বর মানেই সোয়াইন ফ্লুর লক্ষণ নয়। এসবের পাশাপাশি-গলাব্যথা,হাঁচি,নাক দিয়ে পানি পড়া এবং উচ্চমাত্রার জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট থাকে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের। এটি ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকার চেকপোস্টে রোগ নির্ণয়ের যন্ত্র থার্মাল স্ক্যানার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। চেকপোস্টগুলোতে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক টিম কাজ করার ব্যবস্থা করতে হবে। সবচেয়ে বেশি জরুরি,জনসচেতনতা বাড়ানো। হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রুমাল,গামছা বা কাপড় অথবা টিস্যু পেপার দিয়ে মুখ ঢাকা এবং ব্যবহৃত রুমাল-গামছা-কাপড় ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা,আর টিস্যু পেপার ডাস্টবিনে ফেলার জন্য জনগণকে সচেতন করতে হবে। প্রয়োজনে বিভিন্ন গণমাধ্যম,পাড়া-মহল্লায় মাইকিং করে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। অন্যথায় এ ভাইরাস আমাদের দেশেও আতঙ্ক সৃষ্টি করবে। কোনোভাবেই সোয়াইন ফ্লুর বিষয়ে অবহেলা করা যাবে না। তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে এ ভাইরাস প্রতিরোধে এখনই যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

[শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ: প্রধান সম্পাদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কম।।]

jsb.shuvo@gmail.com

প্রধান সম্পাদক