২৮ এপ্রিলঃ সিটি করপোরেশন নির্বাচন

২৮ এপ্রিলঃ সিটি করপোরেশন নির্বাচন

বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ নির্বাচন কমিশন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৮ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ভোট গ্রহণ করা হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে ১ ও ২ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ এপ্রিল। মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করা হবে আগামী ১০ এপ্রিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ ১৮ মার্চ (বুধবার) বিকেলে ইসির সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনের এই তফসিল ঘোষণা করেন। এর আগে দুপুরের পর নির্বাচন কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিইসি কাজী রকিব উদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকেই তফসিল ঘোষণার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।

সিইসি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে নির্বাচনী প্রচারে লাগানো বিলবোর্ড নামিয়ে ফেলতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রার্থী বা তার প্রস্তাবক বা তার সমর্থক রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবে। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা দাখিল করতে হবে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল সম্পর্কে তিনি বলেন, আইনের বিধান অনুসারে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোন প্রকার মিছিল বা শো-ডাউন করা যাবে না। মনোনয়নপত্র গ্রহন ও বাতিলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র গ্রহন ও বাতিল উভয়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। বাছাইয়ের পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ প্রার্থী কোন ব্যাংক বা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করতে পারবেন।

সিইসি বলেন, মূলত সিটি নির্বাচন একটি নির্দলীয় নির্বাচন। তাই দলগুলোর কাছে আহ্বান করছি, আপনারা নির্বাচনটা স্বতস্ফূর্তভাবে করতে দিন। ২০১৩ সালের চার সিটি নির্বাচনের মতো স্বতস্ফূর্তভাবে এ নির্বাচন হোক। তিনি বলেন, প্রার্থীদের রাজনৈতিকভাবে সমর্থন দেয়া হয়। কিন্তু তারা যেন নির্বাচনে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ রাখে ভোটারদের কাছে। নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন না করে, সেটা আমাদের অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। তিনি বলেন, অন্যান্য নির্বাচনের মতো এবারও মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্র জানানোর ব্যবস্থা থাকবে। ভোটারকে তার মোবাইল থেকে একটি নম্বরে মেসেজ পাঠিয়ে ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্র জেনে নিতে হবে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, চার সিটি নির্বাচনের সময় কিছু ইভিএমে সমস্যা হয়েছিলো। তখন কিছু ভোট ইভিএমে আটকে গিয়েছিলো। যার কারনে কিছু কেন্দ্রের ভোট গননা করা যায়নি। তাই সে নষ্ট মেশিনগুলো ঠিক করেত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার পর কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। তাই যতদিন এ সমস্যার সমাধান না করা যাবে, ততদিন কোনো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। তিনি বলেন, নির্বাচনী আইন বিধিমালা বা আচারন বিধিমালা ভংগের ক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের আছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচারন বিধিমালা ২০১০ কার্যকর রয়েছে। সেই বিধিমালায় কোন বিধান লংঘন বিধি ৯ অনুসারে দণ্ডনীয় অপরাধ। তিনি জানান, ভোট গ্রহনের দিন ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়ার সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৩৬টি সাধারণ ও ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এতে ভোটার রয়েছে ২৩ লাখ ৪৯ হাজার ৩১৩জন। মহিলা ভোটার ১১ লাখ ২১ হাজার ৭৪২জন এবং পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ২৭ হাজার ৫৭১জন। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৩৬৩জন। এতে মহিলা ভোটার ৮ লাখ ৬১ হাজার ২৯৩ এবং পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ৯ হাজার ৭০জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ৪১টি সাধারণ ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৮ লাখ ২২ হাজার ৮৯২ জন ভোটার রয়েছে। মহিলা ভোটার ৮ লাখ ৭৮ হাজার ৩২৯ এবং পুরুষ ভোটার আছে ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৬৩ জন।

বিশেষ প্রতিনিধি