ব্লগার ওয়াশিকুর খুনঃ নির্দেশদাতাদের খুঁজছে পুলিশ
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যার ঘটনায় আটক দুই মাদ্রাসা-ছাত্র আরিফুল্লাহ ও জিকরুল্লাহ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। তারা জানায়, মাসুম নামের এক বড় ভাইয়ের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। হত্যার পর তাহের নামের একজন পালিয়ে গেলেও তারা দুজন ধরা পড়ে। পুলিশ মনে করছে, পালিয়ে যাওয়া তাহের ও বাবুর ছবি দেখিয়ে দেয়া মাসুমকে ধরতে পারলেই হত্যার নির্দেশদাতাদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। ৩০ মার্চ (সোমবার) বিকেলে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার তাদের এই স্বীকারোক্তির কথা জানান। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই ছাত্র বলেছে, ‘আমরা আগে ব্লগার বাবুকে চিনতাম না। রোববার বিকেলে মাসুম নামের এক বড় ভাই হাতিরঝিলে বসে ব্লগার বাবুর ছবি দেখিয়ে আমাদের বলে, সে আল্লাহ এবং রাসুলের বিরুদ্ধে কথা বলে। তাই তাকে মেরে ফেলতে হবে। তার নির্দেশমতো আমরা আজ তাকে কুপিয়ে হত্যা করি। আমাদের সঙ্গে তাহের নামে আরেকজন ছিল। বাবুকে কোপানোর পর জনতা ধাওয়া করলে সে পালিয়ে যায়।’
উপকমিশনার বলেন, ‘জিকরুল্লা চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে শনিবার রাতে ঢাকায় আসে। ঢাকায় আসার পর সে যাত্রাবাড়ীর একটি মসজিদে রাত কাটায়। রোববার সারা দিন পরিকল্পনা করে এবং বিকেলে হাতিরঝিলে আসে। সেখানে মিরপুর দারুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র আরিফুল্লাহ, তাহের ও মাসুম উপস্থিত ছিল। গতকাল বিকেলেই বাবুর বাসা দেখে আসে সবাই মিলে। এরপর আজ (সোমবার) সকালে বাবু বাসা থেকে বের হলে তার ওপর চাপাতি নিয়ে হামলে পড়ে।’ উপকমিশনার আরো বলেন, ‘ধর্মান্ধরা যে বাবুকে হত্যা করেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তারা কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া হত্যাকারীরা এর আগে ব্লগার হত্যার সঙ্গে জড়িত কি না, তা রিমান্ডের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করা হবে।’
এ প্রসঙ্গে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ উদ্দীন আহমেদ জানান, ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তার পরিবারের সদস্যদের থানায় আসার কথা রয়েছে। তারা এলে মামলা হবে। আসামিদের আগামীকাল আদালতে নেয়া হবে। তবে তার আগে মাসুম ও তাহেরকে ধরতে অভিযান চালানো হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু তার দক্ষিণ বেগুনবাড়ীর বাসা থেকে কর্মস্থল মতিঝিল ফারইস্ট ট্রাভেল এজেন্সি অফিসে যাওয়ার জন্য বের হন। এর কিছুক্ষণ পরেই রাস্তায় তিনজন তাকে চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে আহত করে। এ সময় আশপাশের লোকজন ও টহলরত পুলিশ দুর্বৃত্তদের ধাওয়া করে দুজনকে আটক করে। আর একজন পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা বাবুকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।