জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ বাস্তবায়নের দাবী
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে অনেকাংশে সফলতা অর্জন করেছে। কিন্তু হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, টাইপ টু ডায়বেটিস এর মত অসংক্রামক রোগের ফলে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার বেড়েছে বহুগুণে। দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া নগরায়ন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস, শরীরচর্চা বা ব্যায়াম বা পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, অতিরিক্ত মোটা হওয়া, অনিয়ন্ত্রিত মাদক সেবন এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। অথচ এ সকল সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ অনুযায়ী রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজন হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন। যার কাজ হবে কর্মপন্থা নির্ধারণে গবেষণার আলোকে সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলোকে স্বাস্থ্য সুরায় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণে পরামর্শ প্রদান, এডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা, রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান। হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন এবং এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, নাটাব, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, অরুণোদয়ের তরুণোদল এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাষ্ট সম্মিলিত ঊদ্যোগে ২০ মে (বুধবার) সকাল ১১টায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি.এস.সি এর রাজু ভাস্কর্যের সম্মুখে অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তারা এ কথা বলেন।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী’র সভাপতিত্বে এবং প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান লিটু’র সঞ্চালনায় কমর্সূচিতে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল এন্টি টোবাকো এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নাটাব) এর তথ্য কর্মকর্তা মো. মুঈন উদ্দিন হোসেন; ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দি ইউনিয়ন এর কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম।
মো. মুঈন উদ্দিন হোসেন বলেন, তিকর তামাকজাত দ্রব্যের উপর ১% স্বাস্থ্যকর আরোপ করা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এ অর্থের সঠিক ব্যবহারের নিশ্চিত করার েেত্র সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবেপাশাপাশি অন্যান্য তিকর পণ্যের উপরও আলাদাভাবে স্বাস্থ্যকর আরোপ করার জন্য তিনি আহবান জানান।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে আমাদের রোগ প্রতিরোধে বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। দেশে সকলের রোগ প্রতিরোধ নিশ্চিত করতে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠনের কোন বিকল্প নেই। তামাকজাত দ্রব্যের উপর ১% স্বাস্থ্য কর আরোপ করা হয়েছে। এতে করে বিপুল পরিমান অর্থ পাওয়া যাবে। যে অর্থ স্বতন্ত্র একটি ফাউন্ডেশনের অধিনে পরিকল্পিতভাবে ব্যয় করা হলে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
গাউস পিয়ারী মুক্তি বলেন, অসংক্রামক রোগকে অপ্রতিরোধ্য মনে করা হলেও প্রকৃতপক্ষে শতকরা ৮০ ভাগ অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমাদের দেশে প্রতি বছর হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার প্রভৃতি রোগের কারণে প্রতি বছর প্রচুর মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অথচ সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হলে এ সকল রোগ আমরা প্রতিরোধ করতে পারব। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চিকিৎসা নির্ভর। এর পরিবর্তে আমাদের উচিত প্রতিরোধে জোর দেয়া এবং এজন্য প্রয়োজন হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন।
এড. সৈয়দ মহবুবুল আলম বলেন, থাইল্যান্ডের হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন আমাদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। এর আলোকে বাংলাদেশেও হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা দরকার। এ সংস্থা স্বাধীন ও স্বায়ত্বশাসিতভাবে প্রতিষ্ঠা হলে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হবে। বাংলাদেশেও পিকেএসএফ, এসএমই ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি ফাউন্ডেশন সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করি, সরকার জনহিতকর এ দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করবে।