রোগ প্রতিরোধে ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড এবং কোমল পানীয় বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করার দাবী
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড এবং কোমল পানীয় গ্রহণ ও নাগরিক জীবন যাপনের কারণে প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের মৃত্যুঝুঁকি কমিয়ে আনা এবং অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সকল প্রকার ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড এবং কোমল পানীয় বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। ১৪ জুন (রবিবার) সকাল ১১টায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর সংস্থার কৈবর্ত সভাকক্ষে অসংক্রামক রোগ ও তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক দিনব্যাপী বিভাগীয় কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে আলোচকবৃন্দ উপরোক্ত দাবী করেন।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-এর সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, দি ইউনিয়ন এর কারিগরি পরামর্শক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান।
ড. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, শহরের মানুষের ভোগবাদী জীবন যাপন মানুষকে অসুস্থ করে তুলছে। মানুষের অধিক আরাম প্রিয় এই জীবন ব্যবস্থা মানুষের এখন মৃত্যু অন্যতম কারণ। পাশাপাশি আধুনিক জীবন যাপনের নামে আমরা ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড এবং কোমল পানীয় নামে যে খাদ্যদ্রব্য নিরাপদ খাদ্য বলে গ্রহণ করছি তার সত্যিকার অর্থে নিরাপদ নয়। এই সব খাদ্যের বিপক্ষে জনমত গড়ে তোলা প্রয়োজন। এই সকল অনিরাপদ খাদ্যদ্রব্য আমাদের নাগরিক জীবনে অসংক্রামক রোগ প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল, দীর্ঘমেয়াদী, প্রাণঘাতী হলেও ভাল হবার সম্ভাবনা কম। তাই এসব রোগ প্রতিরোধকে গুরুত্ব দেয়া দরকার। অসংক্রামক রোগের অন্যমত কারণ ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড এবং কোমল পানীয়র বিজ্ঞাপন প্রচারমাধ্যমগুলোতে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে প্রচারের ফলে মানুষ এই অনিরাপদ অভ্যস্থ হয়ে পড়ছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় অবশ্যই প্রচার মাধ্যমে এই খাদ্যদ্রব্যের প্রচার নিষিদ্ধ করতে হবে। সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মানুষ যেন সুস্থ্য থাকে, সেরকম পরিবেশ অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। এজন্য ক্ষতিকর খাবার নিরুৎসাহিত করতে রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তামাকের উপর স্বাস্থ্যকর আরোপ করা হয়েছে, এটা খুবই ইতিবাচক। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণকারী প্লাস্টিকের বোতলজাত পানি ও ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) এর উপরও স্বাস্থ্যকর বা পরিবেশ কর আরোপ করা জরুরি। স্থানীয় পর্যায়ের পরিবেশ উন্নয়ন ও রোগ প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে স্থানীয় বেসরকারি সংগঠনগুলোর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের কর্মশালার মাধ্যমে এ প্রক্রিয়াকে বেগবান করবে।
জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সংগঠন দি ইন্টারন্যাশন ইউনিয়ন এগেইনেস্ট টিউবরকুলোসিস এন্ড লাং ডিজিজ (দি ইউনিয়ন), বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর উদ্যোগে রংপুর বিভাগের ৩২টি বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী কর্মশালায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা শারমিন আক্তার রিনি ও মো. আতিকুর রহমান।