৫ জেলায় নিহত ২৩,আহত বহু
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্কঃ দেশের পাঁচ জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। ২৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সড়ক-মহাসড়কে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে গাজীপুরে ডেমু ট্রেনের ধাক্কায় একই পরিবারের ৭ জনসহ ৮ অটোরিকশা যাত্রী নিহত হন। এছাড়া টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ৬ জন, সিলেটে ৫ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কলেজ ছাত্রসহ দুজন এবং মাগুরায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা বন্ধে গতকাল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ঘোষণার পর আজ আবার এতো প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরের উপর ভিত্তি করে এসব দুর্ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
গাজীপুর: গাজীপুরে ডেমু ট্রেনের ধাক্কায় একই পরিবারের ৭ জনসহ আট সিএনজি অটোরিকশাযাত্রী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে ধীরাশ্রম স্টেশনের দক্ষিণ দিকে হায়দরাবাদ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান রেজা জানান, “যাত্রী নিয়ে অটোরিকশাটি রেললাইন পার হওয়ার সময় ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ঢাকা থেকে গাজীপুরগামী ডেমু ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই আট আরোহীর মৃত্যু হয়।” নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৭ জন সদস্য রয়েছেন। ট্রেনের ধাক্কা লাগার পর অটোরিকশাটি ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে যায়। ওই অবস্থায় ট্রেনটি অটোরিকশাটিকে হেচড়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে গিয়ে থামে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। একই পরিবারের নিহতরা হলেন- শাহ আলম (২৭), তার স্ত্রী পেয়ারা বেগম (২১), ছেলে ইয়াসির (৪) ও মেয়ে সাদিয়া (৬), শ্যালিকা তারিমন (১২), মামাতো ভাই চুন্নু মিয়া (২৪) ও চাচাতো ভাই আল আমীন (২৮)। তাদের বাড়ি নরসিংদীর জিতরামপুরে। ঈদের ছুটি শেষে নরসিংদী থেকে গাজীপুরের বোর্ডবাজারের খাইলকুড়ের বাসায় যাচ্ছিলেন তারা। নিহত অটোরিকশা চালকের নাম মোস্তফা (২০)। জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই দাদন মিয়া জানান, ওই ক্রসিংয়ে কোনো প্রতিবন্ধক সংকেতের ব্যবস্থা ছিল না।
টাঙ্গাইল: ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসাইল উপজেলার বাঐখোলা পাটখাগুড়ি নামক স্থানে যাত্রীবাহী একটি বাস খাদে পড়ে মহিলাসহ আটজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের মির্জাপুরের কমুদিনী ও টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার আহমেদ জানান, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা থেকে ঢাকাগামী বিনিময় পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসাইল উপজেলার বাঐখোলার পাটখাগুড়িতে পৌঁছায়। এ সময় বাসটি ওভারটেকিং করার সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই আটজন নিহত এবং ১৮ জন আহত হন।
সিলেট প্রতিনিধি জানান: দুপুর ১২টার দিকে জেলার ওসমানী নগর উপজেলার গোয়ালবাজার এলাকায় যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে পাঁচজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরসালিন দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার পর পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। নিহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করছে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাসের ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত এবং তিন যাত্রী আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, হবিগঞ্জের মাদবপুর উপজেলার ধর্মঘর এলাকার এনামুল হকের ছেলে ইমজামামুল হক ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘোটুরা এলাকার দরবেশ আলী। আহতদের উদ্ধার করে ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ের পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া সিলেটগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস ব্রাক্ষণবাড়িয়া অভিমুখী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে দুইজন নিহত ও তিনজন আহত হন। দুর্ঘটনায় আরও তিন যাত্রী আহত হন।
মাগুরা: মাগুরা-ফরিদপুর সড়কের কছুন্দী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার সীতারামপুর গ্রামের একরাম হোসেনের ছেলে শামছুর রহমান শামীম (২৯) ও একই এলাকার গাড়াখোলা গ্রামের কুরবান আলীর ছেলে গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ওবাইদুর রহমান (২৭)। মাগুরা সদর থানা পুলিশের সহকারী ট্রাফিক উপ পরিদর্শক কুমারেশ চন্দ্র জানান, মাগুরামুখী একটি এ্যাপাচি মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিপরীতমুখী একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় মোটরসাইকেলটি রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই শামীম ও ওবাইদুর নামে দুই আরোহী নিহত হন।