আরিফ তোমাকে জয়ী হতেই হবে!
শাহানা হুদা রঞ্জনা: আরিফের সাথে আমি ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এ কাজ করছি প্রায় ১০ বছর। ১০ বছরতো কম সময় নয়। আমরা এক ঝাঁক মানুষ ২০০৬ সালে এমজেএফে– বিভিন্ন বিভাগে কাজে যোগ দিয়েছিলাম। সবাই এখনও আছি, ভাল আছি। এমজেএফ আমাদের শুধু কাজের ক্ষেত্র নয়, এটা আমাদের পরিবারও। এখানে একজনের সাথে একজনের যে সম্পর্ক তা শুধু কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর চেয়ে আরো অনেক বেশি।
আজ আরিফ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে। শাহীন আপাসহ আমরা সবাই ওর পাশে। সবাই সবার মত করে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। গতবছর আমার বিপদকালীন সময়ে ঠিক এভাবেই সবাই আমার পাশে দাড়িঁয়েছিল। এই ভালবাসা, এই একতা আমাদের শক্তি। আরিফ তোমাকে জয়ী হতেই হবে— আর কারো জন্যে না হোক, তোমার ছোট্ট মেয়েটির জন্য। আমরা তোমার পাশে আছি।
আরিফ খুব ব্রিলিয়ান্ট একটি ছেলে। ওর প্রতিভা অনেক কিন্তু সমস্যা একটাই। তা হচ্ছে, প্রতিভাকে টেনে বের করতে হয় অন্যদের। ও এমজেএফের থীম সংগীত, তথ্য অধিকার সংগীত লিখেছে এবং সেটা এককথায় অনবদ্য। ওর কাব্য প্রতিভার কারণে ওকে আমরা ‘’কবি’ বলে ডাকি। ও শের-শায়েরী, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ নিয়ে যেমন মাথা ঘামায়, তেমনি আবার কোরআন শরীফের বঙ্গানুবাদ, শানে-নযুল নিয়েও আগ্রহের শেষ নাই। আমি মাঝে মাঝে ওকে হুজুর হিসাবে ধরে বিভিন্ন ধরমীয় বয়ান শুনি ।
যেকোন পাবলিকেশনের টাইটেল দেয়ার জন্য নিয়মিত ওর পেছনে ঘুরি। ওর বাংলা এবং ইংরেজী লেখার হাত অসাধারণ। ও কোন বিষয়ে কোনকিছু লিখে দিলে সেখানে এডিটিং এর কোন দরকার পড়েনা। কাজও দারুণভাবে নিখুঁত। শুধু সমস্যা হচ্ছে ও ভুলোমনা, খানিকটা অগোছালো এবং লেট লতিফ ।
কিন্তু ও এত কোয়ালিটি ওয়ার্ক করে যে— সাত খুন মাফ। মানে এসব আমাদের কাছে, অফিসের কাছে কোন দোষই নয়, বরং মজার বিষয়। অারিফ মৃদুভাষী, নরম-সরম ভালমানুষ, দারুণ রসিক ও আমুদে। আর স্বাস্থ্যগতভাবে ওর আর আমার অবস্থান বিপরীত। এনিয়ে অফিসে ঠাট্টা তামাশায়ও কম হয়নি।
আরিফ আমার সহকরমী, বন্ধু এবং ছোট ভাই। ওকে বাচঁতেই হবে। ফিরে আসতে হবে আমাদের মাঝে ।