নতুন আইন প্রণয়নের দাবী
বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ অবিলম্বে মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন এবং মুক্তিযুদ্ধের ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। একই সঙ্গে বাংলাদেশে গণহত্যার ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ দিতে পাকিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগেরও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
২৬ ডিসেম্বর (শনিবার) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধীদের স্থাবর-অস্থার সম্পত্তি এবং ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ বাজেয়াপ্ত করে তা মুক্তিযুদ্ধের ভিকটিম ও পরিবারের কল্যাণে ব্যয় করারও দাবি জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনে। এইজন্য নতুন আইন প্রণয়নের দাবি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতাদের। তাদের মতে, এই আইন থাকলে ভবিষ্যতে কেউ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সাহস দেখাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস পাকিস্তানি সৈন্য এবং তাদের এদেশীয় দোসররা আমাদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর এসে একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। আমরা তার এই মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে চাই না। তাই সরকারের কাছে দাবি, ১৯৭৩ সালের আইনে একটি অধ্যায় সংযোজন করে দ্রুত ‘মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন এবং মুক্তিযুদ্ধের ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ আইন’ প্রণয়ন করুন। সাম্প্রতিক সময়ে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তব্যের সমালোচনাও করেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, শহীদের সংখ্যা বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে খালেদা জিয়া এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন, রাজনৈতিক বক্তব্য এমন হতে পারে না। এগুলো এক ধরনের পরিকল্পিত ইতরামি ছাড়া কিছু নয়। এমন বক্তব্য হঠাৎ করে মুখ ফসকে বেরিয়ে এসেছে, এমনটি নয়।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির শাহরিয়ার কবির বলেন, কোনো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা যদি একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য বা সংশয় প্রকাশ করেন, তাহলে তার খেতাব কেড়ে নেয়ার জন্যও একটি আইন করতে হবে।
পাকিস্তান রাষ্ট্র তাদের মিথ্যাচার চালিয়ে যাবেই। কিন্তু আমাদের দেশে কেউ এমনটি করলে ফৌজদারি আইনে তার সাজা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ইন্টারনেটের (ইউটিউব বার্তা) মাধ্যমে কেউ অপপ্রচার চালালে তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত অপরাধীদের সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানানো হয় এই সংবাদ সম্মেলন থেকে। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষীণী, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, শ্যামলী নাসরিন প্রমুখ।