পানির উৎস সংরক্ষণে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের আহ্বান
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ বিশ্বে ১ শত ৫০ কোটি মানুষ এর জীবিকা সম্পূর্ণ পানির উপর নির্ভরশীল। এছাড়া সকল পেশাই পরোক্ষভাবে পানি নির্ভর। অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন ও শিল্পকারখানা স্থাপন, পানিসম্পদের সঠিক ব্যবহারের অভাবে পানির উৎসগুলো নষ্ট হচ্ছে। ফলে জীব ও জীবিকার উপর বিপর্যয় নেমে আসছে। কাজেই জীব ও জীবিকার প্রয়োজনে পানির উৎসসমূহ দূষণ এবং দখলের হাত থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন। এজন্য এসডিজি’র আলোকে পানির উৎস সংরক্ষণে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরী।
বাংলাদেশ এনভায়নমেন্ট নেটওয়ার্ক (বেন) অস্টেলিয়ান চ্যাপ্টার এর সমন্বয়ক কামরুল আহসান খান বলেন, পানি ও নদীর সঙ্গে জীবন-জীবিকা, পরিবেশ, প্রতিবেশ, ইতিহাস, ঐতিহ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সবকিছু ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তিনি বলেন পাড়া- মহল্লার জনসাধারনকে পানি সম্পদ ব্যবহার ও সংরক্ষণে সম্পৃক্ত করতে হবে। নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ) এর সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না বলেন, অর্থনীতি গতিশীল রাখার ক্ষেত্রে নদীকেন্দ্রিক জীবন-জীবিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে নদীপারের মানুষের জীবন-জীবিকা বদলে যাচ্ছে। পানির উৎসসমূহ দূষণ রোধ ও অবৈধ দখলমুক্ত করতে হবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট- এর, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, মারুফ হোসেন বলেন, পানি সম্পদের সুষ্ঠু ও যথাযথ ব্যবহারের অভাবে সুপেয় পানি সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। শুধু আমাদের শিল্প কারখানাগুলো ২ শতাংশ পানি ব্যবহার করলেও ৭০% পানি দূষণের জন্য তারা দায়ী। পানির উৎসসমূহ দূষণ ও দখলের হাত থেকে রক্ষায় এসডিজি’র আলোকে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরী। প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের মহাসচিব হেলাল আহমেদ বলেন, ভারতের অনেক অঞ্চলে এখন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কিমি. দূর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়। সেদিক থেকে আমরা কিছুটা ভালো পর্যায়ে থাকলেও বর্তমানে যেভাবে জলাধারগুলো দখল ও দূষণে আমরা মারাত্মক হুমকির মধ্যে আছি। পানি সম্পদ রক্ষায় সরকার ও জনসাধারনকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান লিটু বলেন, আমাদের ঢাকার চারপাশে যে নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করতে হবে। ইতিপূর্বে আমরা শুধু বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করতে দেখেছি কিন্তু বুড়িগঙ্গা সহ ঢাকার চারপাশের নদীর পানির দূষণ রোধ করতে পারি নাই। ঢাকাবাসীর পানির চাহিদা মিটাতে ওয়াসাকে এই বিষয়ে আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ন কবীর সুমন বলেন, অধিকাংশ জীবিকাই পানি ও এর নিরাপদ সরবরাহের উপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে আমাদের জলধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।
গ্রীন মাইন্ড সোসাইটি এর নির্বাহী পরিচালক আমির হোসেন বলেন, পানি দূষণ রোধে অতি দ্রুত শিল্পবর্জ্য নির্গমনে বিধিমালা তৈরি করা প্রয়োজন। অন্যথায় জলের উৎসগুলোকে বাঁচানো যাবে না। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্র্সিট- এর গবেষণা সহকারী ফারজানা জামন লিজা বলেন, আবাসন কোম্পানিগুলো জলাধার ভরাট করে আবাসন নির্মান করায় পানির উৎসগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর প্রোগ্রাম কো- অডিনেটর আতিক মোর্শেদ এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সাধারন সম্পাদক তৈয়ব আলী, সুজন এর ক্যামেলিয়া চৌধুরী, পবা’র সদস্য মোঃ সেলিম, নাগরিক উদ্যোগের নাজিমুদ্দীন প্রমুখ।