নাটকীয়তা দিয়ে শিরোপা ওয়েস্ট ইন্ডিজের
ক্রীড়া প্রতিবেদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ম্যাচের পরতে পরতে রুদ্ধশ্বাস নাটক, রোমাঞ্চ, শেষ ওভারের নাটকীয়তা। ফাইনালে উত্তেজনা ছড়ানোর সব উপকরণই থাকল পুরো ম্যাচজুড়ে। আর সেই উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ হাসল শেষ হাসি। ৩ এপ্রিল (রোববার) কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
শিরোপা নির্ধারণী এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১৫৫ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। বেন স্টোকসের প্রথম চার বলেই চারটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মহাকাব্যিক এক জয় এনে দেন কার্লোস ব্রাফেট।
তবে ব্রাফেট শেষ দৃশ্যের নায়ক হলেও দলের জয়ে বড় অবদান আসলে মারলন স্যামুয়েলসের। ক্রিস গেইল, লেন্ডল সিমন্স, জনসন চার্লস, আন্দ্রে রাসেল, ড্যারেন সামিরা যেখানে দুই অঙ্কই ছুঁতে পারনেনি, সেখানে স্যামুয়েলস একপ্রান্তে বুক চিতিয়ে লড়ে গেছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থেকেছেন ৮৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে। সুপার টেনে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ১৮৩ রান তাড়া করতে নেমে গেইলের ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে ১১ বল আগেই জিতে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেক্ষেত্রে ফাইনালে ১৫৬ রানের লক্ষ্য ক্যারিবীয়দের জন্য খুব বড় হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ফাইনাল বলে কথা। তাই তো ১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে ১১ রান তুলতেই নেই ৩ উইকেট!
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জো রুটকে আক্রমণে এনেছিলেন ইয়ান মরগান। ব্যাটে হাতে কার্যকরী ৫৪ রানের ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়া রুট বল হাতেও দেখালেন জাদু। নিজের প্রথম তিন বলের মধ্যেই ফিরিয়ে দিলেন দুই ওপেনার জনসন চার্লস ও গেইলকে। রুটের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মিডঅনে বেন স্টোকসের হাতে ধরা পড়েন চার্লস (১)। দ্বিতীয় বলে চার মেরেছিলেন গেইল। কিন্তু পরের বলে তিনিও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅফে ওই স্টোকসকে ক্যাচ দেন। সেমিফাইনালে ম্যাচজয়ী ৮২ রানের ইনিংস খেলা লেন্ডল সিমন্সও ফাইনালে ব্যর্থ। রানের খাতা খোলার ডেভিড উইলির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান সিমন্স।
১১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে তখন ভীষণ বিপদে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে চতুর্থ উইকেটে ডোয়াইন ব্রাভোকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মারলন স্যামুয়েলস। খুব বেশি বাউন্ডার মারতে না পারলেও রানের চাকা সচল রেখে ৪৭ বলে ফিফটি পূরণ করেন স্যামুয়েলস। এর পরেই ব্রাভোর বিদায়ে ভেঙে যায় ৭৫ রানের জুটি। তখন জয়ের জন্য ৩৬ বল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন পড়ে ৭০ রান। লিয়াম প্লাঙ্কেটের করা ১৫তম ওভারে স্যামুয়েলসের দুই ছক্কা ও এক চারে আসে মোট ১৮ রান। তবে পরের ওভারে ডেভিড উইলি তিন বলের মধ্যে দুই হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান আন্দ্রে রাসেল (১), ও ড্যারেন সামিকে (২) ফিরিয়ে দিয়ে ক্যারিবীয়দের রানের গতি কমিয়ে দেন। এ ওভারে আসে ৭ রান। ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা বোলার কার্লোস ব্রাফেট। ডোয়াইন ব্রাভোও ৩ উইকেট নেন, তবে তিনি রান খরচ করেন ৩৭। এ ছাড়া স্যামুয়েল বদ্রি ১৬ রানে ২টি ও আন্দ্রে রাসেল ২১ রানে নেন একটি উইকেট।